টিলার বাগানে রাঙা কমলা by কল্যাণ প্রসূন
ছোট-বড় টিলার ঢালে হাজার হাজার কমলাগাছ। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে রাঙা কমলা। এখন ভরা মৌসুম চলছে। চাষি ও শ্রমিকেরা ভীষণ ব্যস্ত। বিক্রির জন্য পাকা কমলা সংগ্রহ করে তাঁরা ঝুড়িতে ভরে রাখছেন। বাড়িতে আনার পর উঠানে চলছে আকার অনুসারে বাছাইয়ের কাজ। ঝুড়িভরা এসব কমলা পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকার আড়তে। এ চিত্রটি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন ‘কমলাবাগান’ গ্রামের।
জুড়ীর কমলা: কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উপজেলার প্রায় ৮৩ হেক্টর জায়গায় দেশি জাতের কমলার আবাদ হয়। এর মধ্যে গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে বাগানের সংখ্যা বেশি। ওই এলাকার হায়াছড়া, কচুরগুল, রূপাছড়া, বেলবাড়ী, জরিছড়া, লাঠিটিলা, লালছড়া ও কালাছড়া গ্রামের টিলাভূমিতে দীর্ঘদিন ধরে কমলার চাষ হচ্ছে। বাগানগুলোতে এক শ থেকে এক হাজার পর্যন্ত গাছ রয়েছে। এসব গ্রামে কমলাচাষি শতাধিক।
চাষিরা জানান, বহুকাল থেকেই জুড়ীতে কমলার চাষ হতো। তবে এসব কমলার গুণগতমান ছিল অনুন্নত এবং বাজারজাতকরণেরও ভালো ব্যবস্থা ছিল না।
বদলে যাওয়া: ২০০১ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘বৃহত্তর সিলেট জেলায় সমন্বিত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের’ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের কর্মকর্তারা চাষাবাদের কলাকৌশলের বিষয়ে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন। উন্নত চারা সরবরাহ করা হয়। এতেই বদলে যায় বুনো কমলার রূপ। ফলটি চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে লোকজন। বাগানের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কমলা কিনতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ক্রেতারা চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। ২০০৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির কার্যক্রম চলে। এর মধ্যেই জুড়ীর কমলার বাজার সৃষ্টি হয়ে যায় দেশজুড়ে।
ভরা মৌসুমের এক বিকেল: গত বুধবার বিকেলে হায়াছড়া গ্রামের একটি বাগানে গিয়ে দেখা গেল, কমলাভর্তি গাছের নিচে জাল ধরে আছেন চার-পাঁচজন লোক। বাঁশের লগির খোঁচায় কমলা জালে পড়ছে। পরে সেগুলো প্লাস্টিকের ঝুড়িতে ভরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ব্যস্ততার ফাঁকে বাগানের মালিক ইব্রাহিম আলী জানান, ১৫ অক্টোবর থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার পাকা কমলা তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের এক পাইকারের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রতিটি কমলার গড় দর পড়েছে পাঁচ টাকা। ২০০৭ সালে তিনি উপজেলায় শ্রেষ্ঠ চাষি নির্বাচিত হন বলে জানান।
ইব্রাহিম উদ্বেগের সঙ্গে জানান, পরিপক্ব হওয়ার আগেই তাঁর বাগানের বেশ কিছু গাছ থেকে সব ফল আকস্মিক ঝরে পড়েছে। সেই গাছগুলো এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।
তাঁর স্ত্রী মায়া বেগম বলেন, ‘সেচের লাগি বেশি সমস্যা অয়। সরকারিভাবে একটা পাম্প (সেচযন্ত্র) পাইলে উপকার পাইতাম।’
একই গ্রামের আবদুর রহিম বলেন, ‘১০-১২ দিন ধরে কমলা পাকা শুরু অইছে। একেকটা গাছে প্রায় এক হাজার করে ফল ধরছে। এখন পাকা কমলা পাড়া হচ্ছে।’
কর্মকর্তাদের ভাষ্য: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার জেলার উপপরিচালক আবদুল জলিল মিয়া বলেন, ‘প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ হওয়ায় কমলা চাষে বাড়তি কিছু করার সুযোগ নেই। তবে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের পরামর্শ কাজে লাগালে চাষিরা উপকৃত হবেন।’ জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা জানান, প্রকল্প বন্ধ হলেও কমলাচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসেবা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুড়ীর কমলার সুখ্যাতি আছে। চাষের এলাকা বাড়ানোসহ চাষিদের কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
চাষিরা জানান, বহুকাল থেকেই জুড়ীতে কমলার চাষ হতো। তবে এসব কমলার গুণগতমান ছিল অনুন্নত এবং বাজারজাতকরণেরও ভালো ব্যবস্থা ছিল না।
বদলে যাওয়া: ২০০১ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘বৃহত্তর সিলেট জেলায় সমন্বিত কমলা ও আনারস চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের’ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের কর্মকর্তারা চাষাবাদের কলাকৌশলের বিষয়ে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন। উন্নত চারা সরবরাহ করা হয়। এতেই বদলে যায় বুনো কমলার রূপ। ফলটি চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে লোকজন। বাগানের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কমলা কিনতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ক্রেতারা চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। ২০০৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির কার্যক্রম চলে। এর মধ্যেই জুড়ীর কমলার বাজার সৃষ্টি হয়ে যায় দেশজুড়ে।
ভরা মৌসুমের এক বিকেল: গত বুধবার বিকেলে হায়াছড়া গ্রামের একটি বাগানে গিয়ে দেখা গেল, কমলাভর্তি গাছের নিচে জাল ধরে আছেন চার-পাঁচজন লোক। বাঁশের লগির খোঁচায় কমলা জালে পড়ছে। পরে সেগুলো প্লাস্টিকের ঝুড়িতে ভরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ব্যস্ততার ফাঁকে বাগানের মালিক ইব্রাহিম আলী জানান, ১৫ অক্টোবর থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার পাকা কমলা তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের এক পাইকারের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রতিটি কমলার গড় দর পড়েছে পাঁচ টাকা। ২০০৭ সালে তিনি উপজেলায় শ্রেষ্ঠ চাষি নির্বাচিত হন বলে জানান।
ইব্রাহিম উদ্বেগের সঙ্গে জানান, পরিপক্ব হওয়ার আগেই তাঁর বাগানের বেশ কিছু গাছ থেকে সব ফল আকস্মিক ঝরে পড়েছে। সেই গাছগুলো এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।
তাঁর স্ত্রী মায়া বেগম বলেন, ‘সেচের লাগি বেশি সমস্যা অয়। সরকারিভাবে একটা পাম্প (সেচযন্ত্র) পাইলে উপকার পাইতাম।’
একই গ্রামের আবদুর রহিম বলেন, ‘১০-১২ দিন ধরে কমলা পাকা শুরু অইছে। একেকটা গাছে প্রায় এক হাজার করে ফল ধরছে। এখন পাকা কমলা পাড়া হচ্ছে।’
কর্মকর্তাদের ভাষ্য: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার জেলার উপপরিচালক আবদুল জলিল মিয়া বলেন, ‘প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ হওয়ায় কমলা চাষে বাড়তি কিছু করার সুযোগ নেই। তবে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের পরামর্শ কাজে লাগালে চাষিরা উপকৃত হবেন।’ জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা জানান, প্রকল্প বন্ধ হলেও কমলাচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসেবা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুড়ীর কমলার সুখ্যাতি আছে। চাষের এলাকা বাড়ানোসহ চাষিদের কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
No comments