শেয়ার ক্রয়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা-তহবিলে অর্থায়নের রূপরেখা নেই by মজুমদার বাবু
পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দিলেও কিভাবে এর অর্থায়ন হবে, তার পুরো ধারণা দিতে পারেনি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। বিএবি চেয়ারম্যান গতকাল রবিবার এক সভা শেষে জানিয়েছেন, অনুমোদন লাভের পরপরই এ অর্থ শেয়ারবাজারে আসবে এবং নূ্যনতম এক হাজার কোটি টাকা নিয়ে তহবিল শুরু হবে। এদিকে সংগঠনটির এ ধরনের তহবিল গঠনের এখতিয়ারের পক্ষে-বিপক্ষেও কথা উঠেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে ব্যাংকগুলোর সরাসরি বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর বিএবির তহবিল গঠনের এ ঘোষণায় গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিন শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। সূচক বেড়েছে ১০৯ পয়েন্টের বেশি আর লেনদেন বেড়েছে ২১৪ কোটি টাকা।
গতকাল বিএবির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ-সংক্রান্ত তথ্য দেন বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনের অনুমোদন পেলেই এ তহবিল গঠন করা হবে।
নজরুল ইসলাম বলেন, স্টক মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড শীর্ষক এ তহবিলের আকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার চেয়েও বড় হতে পারে। এ তহবিল হবে একটি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কম্পানি। এ ছাড়া ২০টি ব্যাংক নূ্যনতম ২০ কোটি টাকা করে এ তহবিলে জমা দেবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এবং লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কম্পানিগুলোও এতে অংশ নিতে পারবে। তবে প্রারম্ভিক তহবিলের বাকি টাকাটা কোথা থেকে আসবে, ইনস্যুরেন্স বা অন্য কম্পানিগুলো এ তহবিলের কতখানি অংশীদার হবে, তার কোনো রূপরেখা তিনি দেননি। এ তহবিলের টাকা পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের ১০ শতাংশের মধ্যে আসবে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা গভর্নরের সঙ্গে কথা বলব। বিনিয়োগসীমা ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যায় কি না, সেটা বিবেচনা করতে বলব আমরা।'
এ তহবিল গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পুঁজিবাজারে প্রতিটি ব্যাংকের বিনিয়োগ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তক্রমে হওয়া উচিত। দেখার বিষয় হলো, বিএবি কোনো ধরনের চাপের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না। ব্যাংকের বিনিয়োগে শিল্প, এসএমই ইত্যাদি প্রকৃত খাতভিত্তিক হওয়া উচিত।'
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ আমানতের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ করার বিষয়ে সুপারিশ করেছিল পুঁজিবাজারের কারসাজির অনুসন্ধানে গঠিত ড. খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের কমিটি। অথচ বিএবি আমানতের ১০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এটা খুবই দুঃখজনক হবে। কারণ পৃথিবীর কোথাও, এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানেও আমানতের সঙ্গে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সম্পৃক্ত নয়।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, বিএবি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয়, এটা একটা সোসাইটির মতো, তাই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে (ফরমালি) এমন কোনো ঘোষণা দিতে পারে না। ব্যাংকগুলো নিজেরা স্বেচ্ছায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে কিন্তু বিএবি কাউকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাধ্য করতে পারে না।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে জানায়, বিএবি ব্যাংক চেয়ারম্যানদের সংগঠন হওয়ায় ব্যাংক-কম্পানি আইন অনুযায়ী তাদের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। তার পরও এ প্রস্তাব যেহেতু এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আসেনি তাই এখনই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ মোট আমানতের ১৫ শতাংশ করার বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক একটি প্রস্তাব হবে। কেননা ব্যাংক কতটুকু কোন খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে, সেটা ব্যাংক-কম্পানি আইন দ্বারাই নির্ধারিত। যেখানে আইনে আছে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ মোট আমানতের ১০ শতাংশের বেশি হবে না, সেখানে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।'
অবশ্য শেয়ারবাজারের জন্য বিএবির তহবিল গঠনের উদ্যোগে ক্ষতির কিছু দেখেন না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, 'যে ব্যাংক আগের তিন বছরে গড়ে ৩০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, সেই ব্যাংক গত বছর এক হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। মুনাফার এ টাকার বেশির ভাগই এসেছে শেয়ারবাজার থেকে। সুতরাং মুনাফার টাকা থেকে তারা (ব্যাংকগুলো) একটি তহবিল গঠন করতেই পারে। প্রস্তাবিত এ তহবিলের অর্থে বাজার থেকেই শেয়ার কেনা হবে, এতে বাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়বে।'
গতকাল বিএবির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ-সংক্রান্ত তথ্য দেন বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনের অনুমোদন পেলেই এ তহবিল গঠন করা হবে।
নজরুল ইসলাম বলেন, স্টক মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড শীর্ষক এ তহবিলের আকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার চেয়েও বড় হতে পারে। এ তহবিল হবে একটি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কম্পানি। এ ছাড়া ২০টি ব্যাংক নূ্যনতম ২০ কোটি টাকা করে এ তহবিলে জমা দেবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এবং লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কম্পানিগুলোও এতে অংশ নিতে পারবে। তবে প্রারম্ভিক তহবিলের বাকি টাকাটা কোথা থেকে আসবে, ইনস্যুরেন্স বা অন্য কম্পানিগুলো এ তহবিলের কতখানি অংশীদার হবে, তার কোনো রূপরেখা তিনি দেননি। এ তহবিলের টাকা পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের ১০ শতাংশের মধ্যে আসবে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা গভর্নরের সঙ্গে কথা বলব। বিনিয়োগসীমা ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যায় কি না, সেটা বিবেচনা করতে বলব আমরা।'
এ তহবিল গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পুঁজিবাজারে প্রতিটি ব্যাংকের বিনিয়োগ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তক্রমে হওয়া উচিত। দেখার বিষয় হলো, বিএবি কোনো ধরনের চাপের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না। ব্যাংকের বিনিয়োগে শিল্প, এসএমই ইত্যাদি প্রকৃত খাতভিত্তিক হওয়া উচিত।'
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ আমানতের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ করার বিষয়ে সুপারিশ করেছিল পুঁজিবাজারের কারসাজির অনুসন্ধানে গঠিত ড. খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের কমিটি। অথচ বিএবি আমানতের ১০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এটা খুবই দুঃখজনক হবে। কারণ পৃথিবীর কোথাও, এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানেও আমানতের সঙ্গে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সম্পৃক্ত নয়।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, বিএবি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয়, এটা একটা সোসাইটির মতো, তাই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে (ফরমালি) এমন কোনো ঘোষণা দিতে পারে না। ব্যাংকগুলো নিজেরা স্বেচ্ছায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে কিন্তু বিএবি কাউকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাধ্য করতে পারে না।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে জানায়, বিএবি ব্যাংক চেয়ারম্যানদের সংগঠন হওয়ায় ব্যাংক-কম্পানি আইন অনুযায়ী তাদের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। তার পরও এ প্রস্তাব যেহেতু এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আসেনি তাই এখনই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ মোট আমানতের ১৫ শতাংশ করার বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক একটি প্রস্তাব হবে। কেননা ব্যাংক কতটুকু কোন খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে, সেটা ব্যাংক-কম্পানি আইন দ্বারাই নির্ধারিত। যেখানে আইনে আছে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ মোট আমানতের ১০ শতাংশের বেশি হবে না, সেখানে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।'
অবশ্য শেয়ারবাজারের জন্য বিএবির তহবিল গঠনের উদ্যোগে ক্ষতির কিছু দেখেন না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, 'যে ব্যাংক আগের তিন বছরে গড়ে ৩০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, সেই ব্যাংক গত বছর এক হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। মুনাফার এ টাকার বেশির ভাগই এসেছে শেয়ারবাজার থেকে। সুতরাং মুনাফার টাকা থেকে তারা (ব্যাংকগুলো) একটি তহবিল গঠন করতেই পারে। প্রস্তাবিত এ তহবিলের অর্থে বাজার থেকেই শেয়ার কেনা হবে, এতে বাজারে অর্থের প্রবাহ বাড়বে।'
No comments