সাক্ষাৎকার-নিরাপত্তার অভাবেই পিছিয়ে আছে দ. এশিয়াঃ ড. আমুনুগামা
সম্মেলন চলাকালে রূপসী বাংলা হোটেলে শ্রীলঙ্কার জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ড. সরথ আমুনুগামা ও ভারতের ব্যবসায়ী নেতা মহেশ কে শাহারিয়া-এর সঙ্গে আলাপ হয় কালের কণ্ঠের নাজমুল আলম শিশিরের। এ দুই অতিথি ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ ও উৎপাদন বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান সমস্যা হচ্ছে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ। এ অঞ্চলের দেশগুলো নিজেরাই এই সমস্যা তৈরি করেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হলেও এই অঞ্চলের দেশগুলো তা কাজে লাগাতে পারছে না। চীন অনেক এগিয়ে গেলেও কেবল শৃঙ্খলার অভাবেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করেন শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক আর্থিক সহযোগিতাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ড. সরথ আমুনুগামা।
চতুর্থ দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক সম্মেলনে েেযাগ দিতে ঢাকায় এসেছেন তিনি। রবিবার রূপসী বাংলা হোটেলে দীর্ঘ আলাপচারিতায় তিনি শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার সম্পর্কসহ নানা বিষয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়নি তখন আমরা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলাম। স্বাধীনতার পর পরই আমরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছি। আমার তো মনে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অত্যন্ত সুসম্পর্ক বিদ্যমান। তার পরও আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো উন্নয়নে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আগে ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কায় সরাসরি বিমান যোগাযোগ ছিল না। সম্প্রতি তা স্থাপতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরো জোরদার হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক খাতে শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমাদের টেঙ্টাইল মিল রয়েছে। সুতা উৎপাদন, বস্ত্র, টেরিটাওয়েলসহ বিভিন্ন খাতে আমরা এই দেশে ব্যবসা করছি। এ ছাড়া আমাদের একটি ব্যাংক বাংলাদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। শ্রীলঙ্কা খুব শিগগিরই মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এই নিয়ে আসলেই মধুর সমস্যায় আছি। কারণ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধাসহ অনেক কিছু থেকে আমরা বঞ্চিত হব।
খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান সমস্যা বললেও শ্রীলঙ্কা তা থেকে মুক্ত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য দেশ থেকে বেশি দামে খাদ্য আমদানি করতে হয় না বলে আমাদের কোনো সমস্যাও হয় না। তবে তেলের দাম বাড়া আমাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে চীনে শ্রমের যে সমস্যা, তাতে খুব শিগগিরই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটিতে সাড়ে তিন কোটি চাকরির চাহিদা তৈরি হবে বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের শ্রমশক্তি দিয়েই পূরণ হবে ওই ঘাটতি। এরই মধ্যে চীনে শ্রমিকদের বেতন বাড়ছে। ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সুযোগ তৈরি হবে শ্রমের এই নতুন বাজার ধরার। কারণ বাংলাদেশে শ্রমিকের মজুরি কম। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এরই মধ্যে চীনের বাজার ধরতে শুরু করেছে জানিয়ে ড. আমুনুগামা বলেন, এই বাজার ধরার সুযোগ বাংলাদেশেরও রয়েছে।
'চীন ভালো করছে এর এক মাত্র কারণ হচ্ছে সেখানে শৃঙ্খলা রয়েছে, যা বাংলাদেশ বা শ্রীলংকায় নেই। আমি বলবো এই শৃঙ্খলা নেই বলেই সার্কের দেশগুলো চীন থেকে পিছিয়ে আছে। তাই সবার আগে সার্কের দেশগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে'-- বললেন ড. আমুনুগামা।
শ্রীলংকার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, শ্রীলংকা খুব সম্ভব এ অঞ্চলের একমাত্র দেশ যেখানে কোন সন্ত্রাস নেই। তামিলদের সমস্যাও মিটে গেছে। আমরা গত ১৩ বছর এই নিয়ে নানা সমস্যায় ছিলাম। এখানে শিক্ষার অবস্থা ভালো। আমরাই বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে পিএইচডি ডিগ্রি পর্যন্ত এক সেন্টও খরচ হয় না। আমার এমডিজিতে ভালো করেছি। কোন লিঙ্গবৈষম্য নেই। আমাদের দেশে বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। আর ৪০ শতাংশ মানুষকে আমরা সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে এনেছি।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কাঙ্খিত উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে নিরাপত্তাবোধের অভাবকে দায়ি করে তিনি বলেন, সার্কের দেশগুলো নিজেরাই নিজের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বাড়েনি। দেখা যায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আছে। শ্রীলংকাও বাণিজ্য করছে ভারতের সঙ্গে। কিন্তু বাংলাদেশ- শ্রীলংকা বা নেপালের সঙ্গে অন্য সার্কভুক্ত দেশের তেমন বাণিজ্য নেই। ভারত বড় বাজার তাতে সন্দেহ নেই, তবে সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই অঞ্চলের অন্য দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
চতুর্থ দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক সম্মেলনে েেযাগ দিতে ঢাকায় এসেছেন তিনি। রবিবার রূপসী বাংলা হোটেলে দীর্ঘ আলাপচারিতায় তিনি শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার সম্পর্কসহ নানা বিষয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়নি তখন আমরা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলাম। স্বাধীনতার পর পরই আমরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছি। আমার তো মনে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অত্যন্ত সুসম্পর্ক বিদ্যমান। তার পরও আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো উন্নয়নে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আগে ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কায় সরাসরি বিমান যোগাযোগ ছিল না। সম্প্রতি তা স্থাপতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরো জোরদার হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক খাতে শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমাদের টেঙ্টাইল মিল রয়েছে। সুতা উৎপাদন, বস্ত্র, টেরিটাওয়েলসহ বিভিন্ন খাতে আমরা এই দেশে ব্যবসা করছি। এ ছাড়া আমাদের একটি ব্যাংক বাংলাদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। শ্রীলঙ্কা খুব শিগগিরই মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এই নিয়ে আসলেই মধুর সমস্যায় আছি। কারণ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধাসহ অনেক কিছু থেকে আমরা বঞ্চিত হব।
খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান সমস্যা বললেও শ্রীলঙ্কা তা থেকে মুক্ত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য দেশ থেকে বেশি দামে খাদ্য আমদানি করতে হয় না বলে আমাদের কোনো সমস্যাও হয় না। তবে তেলের দাম বাড়া আমাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে চীনে শ্রমের যে সমস্যা, তাতে খুব শিগগিরই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটিতে সাড়ে তিন কোটি চাকরির চাহিদা তৈরি হবে বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের শ্রমশক্তি দিয়েই পূরণ হবে ওই ঘাটতি। এরই মধ্যে চীনে শ্রমিকদের বেতন বাড়ছে। ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সুযোগ তৈরি হবে শ্রমের এই নতুন বাজার ধরার। কারণ বাংলাদেশে শ্রমিকের মজুরি কম। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এরই মধ্যে চীনের বাজার ধরতে শুরু করেছে জানিয়ে ড. আমুনুগামা বলেন, এই বাজার ধরার সুযোগ বাংলাদেশেরও রয়েছে।
'চীন ভালো করছে এর এক মাত্র কারণ হচ্ছে সেখানে শৃঙ্খলা রয়েছে, যা বাংলাদেশ বা শ্রীলংকায় নেই। আমি বলবো এই শৃঙ্খলা নেই বলেই সার্কের দেশগুলো চীন থেকে পিছিয়ে আছে। তাই সবার আগে সার্কের দেশগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে'-- বললেন ড. আমুনুগামা।
শ্রীলংকার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, শ্রীলংকা খুব সম্ভব এ অঞ্চলের একমাত্র দেশ যেখানে কোন সন্ত্রাস নেই। তামিলদের সমস্যাও মিটে গেছে। আমরা গত ১৩ বছর এই নিয়ে নানা সমস্যায় ছিলাম। এখানে শিক্ষার অবস্থা ভালো। আমরাই বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে পিএইচডি ডিগ্রি পর্যন্ত এক সেন্টও খরচ হয় না। আমার এমডিজিতে ভালো করেছি। কোন লিঙ্গবৈষম্য নেই। আমাদের দেশে বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। আর ৪০ শতাংশ মানুষকে আমরা সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে এনেছি।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কাঙ্খিত উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে নিরাপত্তাবোধের অভাবকে দায়ি করে তিনি বলেন, সার্কের দেশগুলো নিজেরাই নিজের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বাড়েনি। দেখা যায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আছে। শ্রীলংকাও বাণিজ্য করছে ভারতের সঙ্গে। কিন্তু বাংলাদেশ- শ্রীলংকা বা নেপালের সঙ্গে অন্য সার্কভুক্ত দেশের তেমন বাণিজ্য নেই। ভারত বড় বাজার তাতে সন্দেহ নেই, তবে সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই অঞ্চলের অন্য দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
No comments