মিলনমেলা-কালের কণ্ঠ এবার সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে by মাহমুদুল হাসান

নানীর ১৮ নম্বর সড়কে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে সবার হাতে কালের কণ্ঠ। কেউ খোলা চত্বরে, আবার কেউ মোটরবাইকের ওপর বসে কালের কণ্ঠ পড়ছেন। আশিক, মেহেদী, রাতুল, জনি, আকাশরা দল বেঁধে প্রতিদিন আড্ডায় মাতেন; কিন্তু আজ সেদিকে খেয়াল নেই। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কালের কণ্ঠ পড়ছেন তাঁরা। কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পত্রিকা বিতরণ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির পাঁচটি ক্যাম্পাসে কালের কণ্ঠ বিতরণ করা হয়।


তখন ঘড়ির কাঁটা সকাল ১০টা ছাড়িয়ে। ক্লাসও শুরু হয়ে গেছে। বনানী ক্যাম্পাসের হলরুমের সামনে পত্রিকা হাতে মেহেদী হাসান তমাল বলেন, 'নতুন ধারায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে কালের কণ্ঠ। তাই শুরু থেকে আমি পত্রিকাটির নিয়মিত পাঠক।'
ইমা আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এখন তাঁর ষষ্ঠ সেমিস্টার চলছে। একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে পত্রিকা পড়ার সময় তেমন একটা হয় না তাঁর। বললেন, 'আজই কালের কণ্ঠ হাতে পেয়েছি। পত্রিকাটি আমার ভালো লেগেছে।' বিশেষ করে এই পত্রিকায় প্রচুর পড়ার আইটেম রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই কথা বলেন সহপাঠী খাদিজাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্যাম্পাসে চলে কালের কণ্ঠের জয়জয়কার। অনেকটা দূরের অন্য ভবনে আইন ও বিচার বিভাগটিও এর ব্যতিক্রম ছিল না। এই বিভাগের শিক্ষার্থী শওকত হোসেন বলেন, 'যাত্রাকাল থেকেই আমার পুরো পরিবার কালের কণ্ঠ পত্রিকার ভক্ত। আমরা কালের কণ্ঠের নিয়মিত পাঠক। এ ছাড়া এই ভবনের নিচতলা থেকে শুরু করে ওপরের সব তলার শিক্ষার্থীরা কালের কণ্ঠের ব্যাপারে তাঁদের ধারণা ও পরামর্শ বিনিময় করেন শুভসংঘের বন্ধুদের সঙ্গে।'
কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সহকারী অধ্যক্ষ এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যান মো. আসাদ্দুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কলের কণ্ঠ বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে একটি শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোতে এখনো আইনের শাসন, আইন শিক্ষার বিষয়ে তেমন কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয় না। পত্রিকাটি যদি আইন শিক্ষা সম্প্রসারণে কাজ করে তাহলে সাধারণ মানুষের আইনি সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
সিএসির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রুবায়েত ইসলাম মগজ ধোলাই নিয়ে ধাঁধা মেলাতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। তারই ফাঁকে জানালেন, প্রতিদিন কালের কণ্ঠের সঙ্গে থাকা বিশেষ আয়োজনগুলো, বিশেষ করে টেক প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের খুবই কাজে লাগে। শিক্ষামূলক অনেক বিষয় থাকে, যা টেকনোলজির ক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজন। নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যায় এখানে।
সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক প্রফেসর ড. সাকিনা সুলতানা জানান, শিক্ষার্থীদের হাতে পত্রিকা তুলে দেওয়ার বিষয়টি খুবই ভালো উদ্যোগ। একবার পত্রিকা পড়তে থাকলে এমনিতেই অভ্যাস হয়ে যায়। কিছু পাওয়াও যায়। খবরের সত্যতা বোঝা যায়। যত খবর প্রকাশ হয় তত সত্যতা নিশ্চিত হয়। পত্রিকায় ছাপা হওয়ার মাধ্যমে ভালো খবরগুলো ছড়িয়ে পড়ে, যা সামাজিক অবক্ষয় রোধ করে।
গতকাল সাউথইস্টের সবকটি ক্যম্পাস, ক্লাসরুম থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের লিফট, সিঁড়িসহ পুরো ক্যাম্পাসেই চলে কালের কণ্ঠ উৎসব। এমনই এক মুহূর্তে সেখানে হাজির হন কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। বিশিষ্ট এই কথা সাহিত্যিককে কাছে পেয়ে উৎসবের মাত্রাটা আরো বেড়ে যায়। প্রথমেই তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. এ এন এম মেসকাত উদ্দীনের সঙ্গে। এ সময় ইমদাদুল হক মিলন বলেন, 'কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাথে ছাত্র-শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমার খুব ভালো লেগেছে। ভবিষ্যতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই পত্রিকায় লেখার সুযোগ করে দিতে চাই।' তিনি তরুণ সমাজের মধ্যে তথ্য সচেতনতা ও পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে সাইথইস্ট ও কালের কণ্ঠকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কালের কণ্ঠের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পত্রিকাটির অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
গতকালের আয়োজনটি সম্পন্ন করেছেন কালের কণ্ঠের শুভসংঘের বনু্লরা। সঙ্গে ছিলেন কালের কণ্ঠের সার্কুলেশন বিভাগের জিএম হারুন অর রশীদসহ একই বিভাগের ডিজিএম মো. রফিকুল ইসলাম সবুজ।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির পাঁচটি ক্যাম্পাসে এ আয়োজন চলে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

No comments

Powered by Blogger.