যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখনই হচ্ছে না টিইসিএফ চুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগিমেন্ট বা টিফার আদলে ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরাম (টিইসিএফ) স্বাক্ষর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ। তবে শ্রমমান নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিমত দেখা দেওয়ায় এখনই হচ্ছে না এ চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তির খসড়া সরকারকে দিয়েছে। এর প্রায় সব কিছুর সঙ্গে একমত হলেও শ্রমমান নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তি রয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিইসিএফের একটি খসড়া তৈরি করবে। তার পরই আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাবে সরকার। তখন দুই পক্ষের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।


গতকাল রবিবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স নিকোলাস জে ডিনের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টিইসিএফ নিয়ে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাদের পাঠানো খসড়া একটি বিষয় নিয়ে আটকে আছে। সেটা হলো শ্রমের মান। তাদের খসড়ার বদলে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি খসড়া তৈরি করবে। তারপর তাদের বাংলাদেশে এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বলব।'
নিকোলাস জে ডিনের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূলত বোয়িংয়ের অর্থ পরিশোধ করায় তিনি সরকারকে ধন্যবাদ দেন। তবে বিমানের ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে না পারলে তাদের এত দামি সম্পদ দিয়েও লাভ হবে না। তা ছাড়া বিমান বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া সরকার যে ড্রেজিং আমদানির দরপত্র আহ্বান করেছিল, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ট্রাকো ড্রেজার্স দরপত্র জমা দিয়েছিল। সে বিষয়েও তিনি আলোচনা করেছেন। তবে আমরা ড্রেজারের জন্য পুনঃ দরপত্রের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে দেশের দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'আমি তাঁকে বলেছি যে আমাদের অনেক ঝুঁকি আছে, তবে তার কারণ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি আমাদের বড় ঝুঁকি। তবে লিবিয়া পরিস্থিতির সমাধান হওয়ায় শিগগিরই তেলের দাম কমবে।'
সরকারের ব্যাংক ঋণ সম্পর্কে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে বলেছি, এটা নিয়ে চিন্তার কারণ নেই। আমরা যে ব্যাংক থেকে ঋণ নেব, তা বাজেটেই উল্লেখ করা হয়েছে। আগের বছরগুলোর মতো এবারও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে না।
বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে চাপে থাকার কথা স্বীকার করে অর্থমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি বাড়লেও আমদানি ব্যয় তার চেয়েও বেশি বাড়ার কারণে এমনটি হয়েছে। গত অর্থবছর ২২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির বিপরীতে আমদানি হয়েছে ৩১ বিলিয়ন ডলার। আগের বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি ও ২২ বিলিয়ন ডলার আমদানি হয়েছিল। এ কারণেই লেনদেনের ভারসাম্যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে টাকার মূল্যমান কমেছে।

No comments

Powered by Blogger.