ডার্বিতে ছয় গোলের লজ্জা ম্যানইউর-ম্যানসিটি ৬ - ১ ম্যানইউ

ল্ড ট্র্যাফোর্ডের ম্যাচটা সবেমাত্র শেষ হয়েছে। গ্যারি নেভিলের টুইটারে গিয়ে এক ভক্ত জিজ্ঞেস করলেন, ডার্বি ম্যাচটার ফল কী, গ্যারি? তুমি কিছু জানো?ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক রাইট ব্যাক তড়িঘড়ি জবাব দিলেন, আচ্ছা এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনাল আর স্টোক সিটির মধ্যেও তো একটা ম্যাচ হচ্ছে। আমরা বরং সেটা নিয়েই কথা বলি!টেলিভিশনের পর্দায় যাঁরা ম্যানচেস্টার ডার্বিটা দেখেছেন কিংবা ম্যাচ শেষে একনজর স্কোর লাইনটায় চোখ বুলিয়েছেন ইন্টারনেটে শুধু তাঁরাই বুঝতে পারবেন নেভিলের এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার রহস্য। এ ম্যাচ নিয়ে কথা বলা যে তাঁর জন্য ভীষণ লজ্জার! এ যে সাবেক ম্যানইউর তারকার মুখ লুকিয়ে রাখার দিন!


এমন নয় যে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তাঁর দল কখনো নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হারেনি। জয়ের পাল্লাটা ভারী হলেও বছর তিনেক আগেই ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিটির কাছে প্রিমিয়ার লিগের এক ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছিল তারা। কিন্তু তাই বলে ৬ গোল! রেকর্ড বুকে অনেক ঘাঁটাঘাঁটির পর জানা গেল ১৯২৬ সালে একবার ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে খেলতে গিয়ে রেড ডেভিলদের আধা ডজন গোল দিয়েছিল সিটিজেনরা! গতকাল আরো একবার সেই লজ্জাটা ফিরে এল তাদের। মজার ব্যাপার, ৮৫ বছর আগে সেই ম্যাচেও কেবল একটা গোল শোধ করতে পেরেছিল ম্যানইউ, গতকালও তাই। মারিও বালোতেলি্ল, এডিন জেকো, সার্জিও অ্যাগুয়েরো আর ডেভিড সিলভারা মিলে যেন আকাশ থেকে মাটিতে নামিয়ে এনেছেন ইউনাইটেড সমর্থকদের। ৬-১ গোলের স্মরণীয় এক জয় দিয়ে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন, হতে পারে তোমরা প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কিন্তু আগের সব হিসাব ভুলে যাও। এই মৌসুমে আমাদের পেরিয়ে কাপ নিতে গেলে এ রকম গোলের বন্যা বইবে!
গত বছর দুয়েক ধরে ম্যানচেস্টার ডার্বির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিলেন কার্লোস তেভেজ। ইউনাইটেড ছেড়ে সিটিতে যোগ দেওয়া এ আর্জেন্টাইন তারকা যেন নিজের উপস্থিতি দিয়ে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করতেন এই নগর প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে নানা পাগলামি আর বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার পর তেভেজ এখন আর সিটিজেনদের একাদশে নেই। তেভেজ নেই, কিন্তু বিতর্ক আর পাগলামিতে তাঁর কাছাকাছি যেতে পারেন এমন আরো একজন আছেন সিটিতে। মারিও বালোতেলি্ল। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে গতকাল সিটিজেনদের গোলোৎসবটা তিনিই শুরু করলেন। ২২ মিনিটে জেমস মিলনারের ক্রস থেকে পাওয়া বলে পা লাগিয়ে নীল জার্সির সমর্থকদের প্রথম হাসিটা উপহার দেওয়ার পর নিজের জার্সিটা খুলে রেফারির হলুদ কার্ডও পেলেন। ততক্ষণে অবশ্য তাঁর জার্সির ভেতরের নীল গেঞ্জিটায় 'হোয়াই অলওয়েজ মি' লেখাটা পড়ে নিয়েছেন সমর্থকরা। সব সময়ই যে তিনিই সেটা বালোতেলি্ল প্রমাণ করেছেন ৬০ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটা করে। তার আগে লাল কার্ড দেখে জোনাথন ইভান্স মাঠ ছাড়ায় এমনিতেই একটা ধাক্কা খেয়েছিল ম্যানইউ। তখনো আন্দাজ করা যায়নি বাকি সময়টা আরো কত কঠিন হতে যাচ্ছে তাদের জন্য। মিকা রিচার্ডসের পাস থেকে সিটির হয়ে তৃতীয় গোলটা করেছেন অ্যাগুয়েরো। তবে ডার্বি ম্যাচের সেরা তারকা ছিলেন পুরো মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখা ম্যানসিটি তারকা ডেভিড সিলভা। ইনজুরি টাইমে স্প্যানিশ এ মিডফিল্ডার নিজেও একটা গোল করেছেন। কিন্তু তার আগেই বদলি হিসেবে মাঠে নামা এডিন জেকোর গোলে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে ম্যানইউ। শেষ বাঁশি বাজার আগমুহূর্তে জেকো করেছেন আরো একটা গোল।
ও হ্যাঁ, এত গোলের ভিড়ে ড্যারেন ফ্লেচার ৮১ মিনিটে একটা গোল করেছেন বটে ম্যানইউর হয়ে! কিন্তু সিটিজেনদের বাঁধভাঙা আনন্দের দিনে এটার কথা না বললেও খুব একটা সমস্যা নেই। এএফপি

No comments

Powered by Blogger.