হুমকি মোকাবিলায় সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক
হুমকি মোকাবিলায় সতর্ক থাকার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান
জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা
করতে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বৈদেশিক বাহ্যিক যেকোনো হুমকি
মোকাবিলায় সদা সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে ২৭টি
উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা সেনানিবাস থেকে
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পগুলোর
মধ্যে রয়েছে-ঢাকা সেনানিবাসে ক্যানসার সেন্টার, ফার্টিলিটি সেন্টার, এডিবল
অয়েল মিল এবং বিভিন্ন সেনানিবাসে সেনা সদস্যদের জন্য ব্যারাক, সেনা ছাউনি,
প্রশিক্ষণ এবং আবাসন প্রকল্পসমূহ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ‘দেশের সম্পদ’ এবং
মানুষের ‘ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক’ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, তাই পেশাদারিত্বের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জনের জন্য আপনাদের সকলকে
পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং কল্যাণময়
জীবনের অধিকারী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের
প্রতি আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, কর্তব্যপরায়ণতা,
দায়িত্ববোধ এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা বজায় রেখে কর্তব্য সম্পাদনে একনিষ্ঠভাবে
কাজ করবেন বলে আমি আশা করি।
তার সরকার সর্বদাই জনগণের সেবক হিসেবে দেশ পরিচালনা করতে চায়, শাসক হিসেবে নয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবা করার জন্য আপনাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা আমরা পেয়েছি। তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনাকালীন যখনই প্রয়োজন হবে তখনই সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন রয়েছে, তার দুই ভাই শহীদ শেখ কামাল এবং শহীদ শেখ জামাল সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, তার ছোট ভাই শেখ রাসেল পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিল। কাজেই পরিবারের সদস্য হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উপযোগী করে সেনাবাহিনীকে গড়ে তোলাকে আমি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য বলেই মনে করি। প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উন্নত ও পেশাদার সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ১৯৭৪ সালেই প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছিলেন। তার নির্দেশেই ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি। এছাড়াও কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল ও প্রতিটি কোরের জন্য ট্রেনিং সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন বলে জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা কর্তৃক প্রদত্ত সুদূরপ্রসারী এই প্রতিরক্ষা নির্দেশনার আলোকেই সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এর ফলেই আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, দেশ ও দেশের বাইরে এক সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। এ বাহিনীর দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম আপনাদের রক্ষা করতে হবে, যার স্বপ্ন ও দিকনির্দেশনা জাতির পিতা দিয়েছিলেন। তার সরকার সেনাবাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা প্রয়োজনীয় সকল কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সশস্ত্র বাহিনী তথা সেনাসদস্যদের কল্যাণে বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন সিএমএইচ-এর জনবলসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিস্ট্রেশন (আইবিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীর জেসিও এবং অন্যান্য পদবির সদস্যদের জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু, আর্মি ইনফরমেশন টেকনোলজি সাপোর্ট অর্গানাইজেশন (এআইটিএসও) প্রতিষ্ঠাসহ অনেক আধুনিক যোগাযোগ সামগ্রী ক্রয় করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর কল্যাণমুখী কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ট্রাস্ট ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেনা আবাসন প্রকল্প, উন্নতমানের রসদ সরবরাহ এবং বহুতল সরকারি পারিবারিক বাসস্থান নির্মাণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের রেশন, স্কেল ও বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছরের জুন মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে সমগ্র এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে দ্রুত পুনরুদ্ধার অভিযান ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে জনগণের সেবায় আপনারা নিজেদের নিয়োজিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় রাঙ্গামাটিতে উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালীন দু’জন সেনা কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সহকর্মীকে হারানোর দুঃখজনক ঘটনায় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। সেনাবাহিনী তার মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময়ই জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত করেছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের পেশাগত দক্ষতার কারণে দীর্ঘ প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ তদারকিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যেমন কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্প, হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মাণ, মহিপাল ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং থানচি-আলীকদম সড়ক নির্মাণ দায়িত্ব আপনাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের দায়িত্ব গ্রহণের পাশাপাশি তাদের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা ও চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতায় দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করে তুলেছে।
সেনাবাহিনীর ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন: এদিকে আইএসপিআর জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে ঢাকা সিএমএইচ-এ ক্যান্সার সেন্টারসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছোট বড় ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যান্সার সেন্টার, ফার্টিলিটি সেন্টার, এডিবল ওয়েল মিল, প্রশিক্ষণ সহায়তার জন্য বিভিন্ন স্থাপনা এবং সেনাসদস্যদের আবাসনের জন্য বিভিন্ন প্রকার পারিবারিক বাসস্থান। প্রকল্প সমূহ দেশব্যাপী বিস্তৃত হওয়ায় তিনি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন যা সেনাসদস্যগণ ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সরাসরি প্রত্যক্ষ করে। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা, মিরপুর ও পোস্তগোলা সেনানিবাসে উপস্থিত অফিসার, জেসিও ও অন্যান্য পদবির সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। পরে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্যান্সার সেন্টার ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসে এসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা, মিরপুর ও পোস্তগোলা সেনানিবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা এবং সকল পদবির সেনাসদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তার সরকার সর্বদাই জনগণের সেবক হিসেবে দেশ পরিচালনা করতে চায়, শাসক হিসেবে নয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবা করার জন্য আপনাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা আমরা পেয়েছি। তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনাকালীন যখনই প্রয়োজন হবে তখনই সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন রয়েছে, তার দুই ভাই শহীদ শেখ কামাল এবং শহীদ শেখ জামাল সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, তার ছোট ভাই শেখ রাসেল পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিল। কাজেই পরিবারের সদস্য হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উপযোগী করে সেনাবাহিনীকে গড়ে তোলাকে আমি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য বলেই মনে করি। প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উন্নত ও পেশাদার সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ১৯৭৪ সালেই প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছিলেন। তার নির্দেশেই ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি। এছাড়াও কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল ও প্রতিটি কোরের জন্য ট্রেনিং সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন বলে জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা কর্তৃক প্রদত্ত সুদূরপ্রসারী এই প্রতিরক্ষা নির্দেশনার আলোকেই সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এর ফলেই আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, দেশ ও দেশের বাইরে এক সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। এ বাহিনীর দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম আপনাদের রক্ষা করতে হবে, যার স্বপ্ন ও দিকনির্দেশনা জাতির পিতা দিয়েছিলেন। তার সরকার সেনাবাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা প্রয়োজনীয় সকল কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সশস্ত্র বাহিনী তথা সেনাসদস্যদের কল্যাণে বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন সিএমএইচ-এর জনবলসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিস্ট্রেশন (আইবিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীর জেসিও এবং অন্যান্য পদবির সদস্যদের জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু, আর্মি ইনফরমেশন টেকনোলজি সাপোর্ট অর্গানাইজেশন (এআইটিএসও) প্রতিষ্ঠাসহ অনেক আধুনিক যোগাযোগ সামগ্রী ক্রয় করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর কল্যাণমুখী কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ট্রাস্ট ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেনা আবাসন প্রকল্প, উন্নতমানের রসদ সরবরাহ এবং বহুতল সরকারি পারিবারিক বাসস্থান নির্মাণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের রেশন, স্কেল ও বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছরের জুন মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে সমগ্র এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে দ্রুত পুনরুদ্ধার অভিযান ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে জনগণের সেবায় আপনারা নিজেদের নিয়োজিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় রাঙ্গামাটিতে উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালীন দু’জন সেনা কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সহকর্মীকে হারানোর দুঃখজনক ঘটনায় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। সেনাবাহিনী তার মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময়ই জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত করেছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের পেশাগত দক্ষতার কারণে দীর্ঘ প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ তদারকিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যেমন কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্প, হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মাণ, মহিপাল ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং থানচি-আলীকদম সড়ক নির্মাণ দায়িত্ব আপনাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের দায়িত্ব গ্রহণের পাশাপাশি তাদের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা ও চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতায় দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করে তুলেছে।
সেনাবাহিনীর ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন: এদিকে আইএসপিআর জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে ঢাকা সিএমএইচ-এ ক্যান্সার সেন্টারসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছোট বড় ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যান্সার সেন্টার, ফার্টিলিটি সেন্টার, এডিবল ওয়েল মিল, প্রশিক্ষণ সহায়তার জন্য বিভিন্ন স্থাপনা এবং সেনাসদস্যদের আবাসনের জন্য বিভিন্ন প্রকার পারিবারিক বাসস্থান। প্রকল্প সমূহ দেশব্যাপী বিস্তৃত হওয়ায় তিনি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন যা সেনাসদস্যগণ ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সরাসরি প্রত্যক্ষ করে। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা, মিরপুর ও পোস্তগোলা সেনানিবাসে উপস্থিত অফিসার, জেসিও ও অন্যান্য পদবির সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। পরে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্যান্সার সেন্টার ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসে এসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা, মিরপুর ও পোস্তগোলা সেনানিবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা এবং সকল পদবির সেনাসদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
No comments