‘মাহাথির যা করেছেন তা ভুলতে কষ্ট হবে’ -নুরুল ইজ্জাজ আনোয়ার
নুরুল ইজ্জাজ আনোয়ার
মালয়েশিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কন্যা। গত বুধবারের
নির্বাচনে পিতার দীর্ঘদিনের আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল ইজ্জাজ।
তাদের দল পিপলস জাস্টিস পার্টি(পিকেআর) ও নির্বাচনী জোট পাকতান হারাপানের
নীতি নির্ধারকদের একজন তিনি। ৩৭ বছরের এই নারী রাজনীতিক ইতোমধ্যেই
মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে নিজের জোরালো অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। পিতার
অবর্তমানে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন শক্ত হাতে। এবারের নির্বাচনের আগে তাদের
জোটের সাথে সাবেক প্রধামন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের ঐক্য’র পেছনেও তার
গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে বলে মনে করা হয়। নির্বাচনের দিন রাতে টিআরটি
টেলিভিশনকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নুরুল। সেটি নয়া দিগন্ত থেকে পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হল।
টিআরটি : প্রায় সবাই এই বিজয়কে আকষ্মিক বা অভাবনীয় বলছে? আপনিও কী তা মনে করেন?
নুরুল : আমরা পরিবর্তন চেয়েছিলাম। নির্বাচন অনেক কঠিন ছিলো। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। ফলাফল স্বাক্ষী দেয় যে, মালয়েশিয়ানরা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত ছিলো। তারা এমন একটি সরকার চেয়েছে যারা তাদের জন্য কাজ করবে। কাজেই এখানে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই। এই বিজয় সত্যিই প্রত্যাশিত ছিলো।
টিআরটি : আপনাদের সরকার কিভাবে গঠিত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানতে পারিনি আমরা।
নুরুল : আজ আমরা সফলভাবে নতুন প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছি। ছয় দশকেরও বেশি সময় পর এই সরকার বিদায় নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী... দুঃখিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ফলাফল মেনে নিয়েছেন। আমাদের নির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা রয়েছে, সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিবেন। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা সংস্কারের জন্য অঙ্গীকারাবন্ধ ছিলাম এবং আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করবো। মালয়েশিয়ানরা ব্যালটবাক্সে আমাদের জয় এনে দিয়েছেন। তারা ব্যালট বাক্স পাহাড়া দিয়েছে যাতে প্রতিটি ভোট গুরুত্বের সাথে গননা করা হয়।
টিআরটি : আপনি বলেছেন যে, মালয়েশিয়ার ভবিষ্যতকে নতুন করে সাজাতে চান। নতুন সরকারে আপনার ভুমিকা কী হবে বা আপনি কোন ভুমিকা চান?
নুরুল : আামি আমার পিতার আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছি। এটি পার্লামেন্টে আমার তৃতীয় মেয়াদ। মালয়েশিয়ার তরুণদের এই অনুভূ’তি আছে যে, তারা নিজেকে মালয়েশিয়ার ভবিষ্যত নির্মাণের অংশ মনে করে। গনতন্ত্রে সবাই যদি প্রধানমন্ত্রী হতে চায় তাহলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে। আমার মনে হয় মালয়েশিয়ার সেটি দরকারও নেই। মালয়েশিয়ার দরকার অল্প সংখ্যক লোক এই পদে আসতে চাইবে আর বাকিরা সবাই চাইবে দেশকে বদলে দিতে। আমিও শুধুমাত্র এই প্রক্রিয়ার একটি অংশ হতে চাই।
টিআরটি : আপনার মা উপপ্রধানমন্ত্রী। আবার মাহাথির মোহাম্মদের বয়স ৯২ বছর, তাই ধরে নেয়া যায় কিছুদিন পরেই হয়তো আপনার বাবা আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে। তাহলে কী এর মাধ্যমে পারিবারিক শাসনের যুগে প্রবেশ করবে মালয়েশিয়া?
নুরুল : আমি অনেকদিন ধরে রাজনীতিতে আছি। আমি ও আমার মা মন্ত্রীসভায় থাকতে রাজনীতিতে আসিনি। জনগনের প্রতিনিধিত্ব করতে রাজনীতিতে এসেছি। ১১ বছর ধরে বাবা জেলে আছেন। আমরা রাজনীতিতে সংস্কার চাই। আমি তরুণদের পক্ষ হয়ে সেই কাজটিই করবে। কিভাবে আপনি জীবন যাপন করছেন, আপনার কতটা বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে সেগুলো সুরক্ষিত রাখাই বড় ব্যাপার।
টিআরটি : যার আমলে আপনার পিতা কারাগারে গিয়েছেন, তার সাথেই আবার জোট বেধে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছে জানতে চাই- কিভাবে আপনি, আপনার পরিবার বিশেষ করে আপনার বাবা সেই মাহাথির মোহাম্মদের সাথে সমঝোতার বিষয়টি কিভবে দেখছেন এবং ওপর কতটা আস্থা রাখতে পারবেন?
নুরুল : মাহাথির মোহাম্মদ আমার জোটের অংশ হতে এখানে যোগ দিয়েছেন। এই জোটের একজন সদস্য হিসেবে আমি বলতে চাই এখানে কোন ব্যক্তিগত বিষয় থাকবে না। জনগনের প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে কাজ করতে হবে। কাজেই সব কিছুর আগে বিবেচনা করা হবে কিভাবে সরকারকে এগিয়ে নেয়া যায়, কিভাবে সর্বোত্তম সংস্কার করা যায়। আমার ছোট বোন ছয় বছর বয়স থেকে বাবাকে কারাগারে দেখছে। আমার কন্যা জন্ম থেকেই তার নানাকে কারাগারে দেখছে। সব কিছু ভুলে যাওয়া কঠিন, তবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে কেউ যাতে আর এ ধরনের ঘটনার শিকার না হয়। তাই পুরো সিস্টেমটিকেই সংস্কার করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
টিআরটি : মালয়েশিয়ায় পরিবর্তন আনার কথা বলছেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের কাছে কোন বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে?
নুরুল : নতুন প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তৃতা শুনলেই বুঝবেন অর্থনীতিসহ জনগনের আশা আকাঙ্খার বিষয়গুলোই প্রাধান্য পাবে। আগে তো মন্ত্রীসভা গঠন করতে দিন(হাসি)। প্রথম এক শ’ দিনের কর্মসূচিতেই নির্বাচনী অঙ্গীকারের প্রাধান্য থাকবে।
টিআরটি : প্রায় সবাই এই বিজয়কে আকষ্মিক বা অভাবনীয় বলছে? আপনিও কী তা মনে করেন?
নুরুল : আমরা পরিবর্তন চেয়েছিলাম। নির্বাচন অনেক কঠিন ছিলো। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। ফলাফল স্বাক্ষী দেয় যে, মালয়েশিয়ানরা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত ছিলো। তারা এমন একটি সরকার চেয়েছে যারা তাদের জন্য কাজ করবে। কাজেই এখানে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই। এই বিজয় সত্যিই প্রত্যাশিত ছিলো।
টিআরটি : আপনাদের সরকার কিভাবে গঠিত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানতে পারিনি আমরা।
নুরুল : আজ আমরা সফলভাবে নতুন প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছি। ছয় দশকেরও বেশি সময় পর এই সরকার বিদায় নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী... দুঃখিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ফলাফল মেনে নিয়েছেন। আমাদের নির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা রয়েছে, সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিবেন। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা সংস্কারের জন্য অঙ্গীকারাবন্ধ ছিলাম এবং আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করবো। মালয়েশিয়ানরা ব্যালটবাক্সে আমাদের জয় এনে দিয়েছেন। তারা ব্যালট বাক্স পাহাড়া দিয়েছে যাতে প্রতিটি ভোট গুরুত্বের সাথে গননা করা হয়।
টিআরটি : আপনি বলেছেন যে, মালয়েশিয়ার ভবিষ্যতকে নতুন করে সাজাতে চান। নতুন সরকারে আপনার ভুমিকা কী হবে বা আপনি কোন ভুমিকা চান?
নুরুল : আামি আমার পিতার আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছি। এটি পার্লামেন্টে আমার তৃতীয় মেয়াদ। মালয়েশিয়ার তরুণদের এই অনুভূ’তি আছে যে, তারা নিজেকে মালয়েশিয়ার ভবিষ্যত নির্মাণের অংশ মনে করে। গনতন্ত্রে সবাই যদি প্রধানমন্ত্রী হতে চায় তাহলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে। আমার মনে হয় মালয়েশিয়ার সেটি দরকারও নেই। মালয়েশিয়ার দরকার অল্প সংখ্যক লোক এই পদে আসতে চাইবে আর বাকিরা সবাই চাইবে দেশকে বদলে দিতে। আমিও শুধুমাত্র এই প্রক্রিয়ার একটি অংশ হতে চাই।
টিআরটি : আপনার মা উপপ্রধানমন্ত্রী। আবার মাহাথির মোহাম্মদের বয়স ৯২ বছর, তাই ধরে নেয়া যায় কিছুদিন পরেই হয়তো আপনার বাবা আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে। তাহলে কী এর মাধ্যমে পারিবারিক শাসনের যুগে প্রবেশ করবে মালয়েশিয়া?
নুরুল : আমি অনেকদিন ধরে রাজনীতিতে আছি। আমি ও আমার মা মন্ত্রীসভায় থাকতে রাজনীতিতে আসিনি। জনগনের প্রতিনিধিত্ব করতে রাজনীতিতে এসেছি। ১১ বছর ধরে বাবা জেলে আছেন। আমরা রাজনীতিতে সংস্কার চাই। আমি তরুণদের পক্ষ হয়ে সেই কাজটিই করবে। কিভাবে আপনি জীবন যাপন করছেন, আপনার কতটা বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে সেগুলো সুরক্ষিত রাখাই বড় ব্যাপার।
টিআরটি : যার আমলে আপনার পিতা কারাগারে গিয়েছেন, তার সাথেই আবার জোট বেধে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছে জানতে চাই- কিভাবে আপনি, আপনার পরিবার বিশেষ করে আপনার বাবা সেই মাহাথির মোহাম্মদের সাথে সমঝোতার বিষয়টি কিভবে দেখছেন এবং ওপর কতটা আস্থা রাখতে পারবেন?
নুরুল : মাহাথির মোহাম্মদ আমার জোটের অংশ হতে এখানে যোগ দিয়েছেন। এই জোটের একজন সদস্য হিসেবে আমি বলতে চাই এখানে কোন ব্যক্তিগত বিষয় থাকবে না। জনগনের প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে কাজ করতে হবে। কাজেই সব কিছুর আগে বিবেচনা করা হবে কিভাবে সরকারকে এগিয়ে নেয়া যায়, কিভাবে সর্বোত্তম সংস্কার করা যায়। আমার ছোট বোন ছয় বছর বয়স থেকে বাবাকে কারাগারে দেখছে। আমার কন্যা জন্ম থেকেই তার নানাকে কারাগারে দেখছে। সব কিছু ভুলে যাওয়া কঠিন, তবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে কেউ যাতে আর এ ধরনের ঘটনার শিকার না হয়। তাই পুরো সিস্টেমটিকেই সংস্কার করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
টিআরটি : মালয়েশিয়ায় পরিবর্তন আনার কথা বলছেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের কাছে কোন বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে?
নুরুল : নতুন প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তৃতা শুনলেই বুঝবেন অর্থনীতিসহ জনগনের আশা আকাঙ্খার বিষয়গুলোই প্রাধান্য পাবে। আগে তো মন্ত্রীসভা গঠন করতে দিন(হাসি)। প্রথম এক শ’ দিনের কর্মসূচিতেই নির্বাচনী অঙ্গীকারের প্রাধান্য থাকবে।
No comments