পোশাক রপ্তানিতে সম্ভাবনাময় ডেনিম by এমএম মাসুদ
ডেনিম
রপ্তানিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে শীর্ষস্থান দখল করেছে বাংলাদেশ। চীনকে পিছনে
ফেলে বাংলাদেশের এই শীর্ষ অবস্থান দেশের ডেনিম প্রস্তুতকারকদের আত্মবিশ্বাস
বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির
ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সার্বিক
রপ্তানি আয় সাড়ে ৬ শতাংশ বাড়লেও তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই খাতে আয় বেড়েছে ৩.১৭ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো
(ইপিবি) ও বিজিএমইএ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপের বাজারে ডেনিম রপ্তানির মধ্যে ২৭ ভাগই যায়
বাংলাদেশ থেকে। আগে চীন এই বাজারে শীর্ষ অবস্থানে ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে
চীনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ডেনিমে
বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। মোট রপ্তানিতে বাংলাদেশের অংশ শতকরা ১৪.২ ভাগ।
বাংলাদেশের আগে রয়েছে চীন এবং মেক্সিকো।
ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান ডিরেক্টরেট ইউরোস্ট্যাট-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ১.২৭ বিলিয়ন ইউরোর ডেনিম জিনস রপ্তানি করেছে। এরপর ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১.৩০ বিলিয়ন ইউরো। এছাড়া রপ্তানি বেড়েছে ০.৫৮ ভাগ। তবে বাংলদেশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্কেরর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেশি, ৪.৩৬ ভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ডেনিম রপ্তানি বেড়েছে ৯.৫৫ ভাগ। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৪৬৩.৬১ মিলিয়ন ইউএস ডলারের ডেনিম রপ্তানি হয়েছে। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০৭.৯২ মিলিয়ন ডলারে। চীন ২০১৭ সালে ৯২১.৯০ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলেও, রপ্তানি কমেছে ১.৪১ ভাগ। মেক্সিকোরও একই অবস্থা। তাদের রপ্তানি কমেছে ৭.৯ ভাগ। অর্থাৎ মোট রপ্তানি করেছে ৭৯৩.৪২ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম। তাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে শতকরা ১৩ ভাগ এবং ৭.৯ ভাগ। তারা ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যথাক্রমে ২১৩.৭ এবং ২০৭.২৮ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম রপ্তানি করেছে।
বিজিএমই সভাপতি সিদ্দিুর রহমান বলেন, দেশে ডেনিমের ভালো ফেব্রিক তৈরি হয়। পাশাপাশি আধুনিক কারখানা ও ভালো ওয়াশিং প্ল্যান্ট থাকায় ডেনিমে ভালো করছি। বাংলাদেশে এখন ৩১টি বড় ডেনিম ফ্যাক্টরি আছে। বাংলাদেশ থেকে ব্লু ডেনিম ট্রাউজার্স, স্কার্ট, জ্যাকেট, স্যুট-কোট, প্লে স্যুট রপ্তানি হয়।
সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আমরা ভালো কাপড় তৈরি করায় কম সময়ে এবং প্রতিযোগিতামূলক দামে পোশাক দিতে পারি। তিনি বলেন, ডেমিন শুধু কাপড় নয়, এটা একটা ফ্যাশান। এর ক্রেতা সবাই। এর কোনো সিজন নেই, কারণ ১২ মাসই সিজন। এসব দিক খেয়াল রেখে আমরা সময়মতো চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছি বলে ডেনিমের চাহিদা বাড়ছে এবং আরো বাড়বে। সব মিলিয়ে ডেনিমে আমাদের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন মনে করেন, বাংলাদেশকে ডিজাইন উন্নয়ন এবং নতুনত্বের মাধ্যমে ডেনিমে অবস্থান উপরে নিয়ে যেতে হবে। এই খাতে এখন আরো বিনিয়োগ এবং গবেষণা বাড়াতে হবে ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে মাথায় রেখে। তিনি বলেন, আমাদের এখন ভ্যালু অ্যাডিশনের দিকে যেতে হবে। আমরা এখন একটি জিন্স প্যান্ট বিক্রি করি ৫ থেকে ৬ ডলারে। আর দোকানে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৯ ডলারে। আমাদের এই কোয়ানটিটির পরিবর্তে এখন সাসটেইনিবিলিটির দিকে যেতে হবে। আমাদের এখন ১৯ ডলার থেকে ২৯ ডলারের উৎপাদনে যেতে হবে। ভ্যালু অ্যাডিশন বিষয়ে তিনি বলেন, ইনোভেশন, ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইননিবিলিটি-এই ৪টি বিষয়ে গুরুত্ব দিলে আমরা ভ্যালু অ্যাডিশন করতে পারব। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৩১টি ডেনিম কারখানায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন উদ্যোক্তারা। কারখানাগুলোর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা সব মিলিয়ে প্রায় ৪৩ কোটি ৫০ লাখ গজ।
এদিকে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দুই দিনব্যাপী অষ্টম বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোতে অংশ নিতে আসা স্পেনের জিনোলোজিয়ার প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং এবং কমিউনিকেশন ম্যানেজার কারমেন সিলা বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে নেতিবাচক ধারণাও আছে। তবে কেউ যদি বাংলাদেশে একবার সফর করে। আর পোশাক খাতের সম্ভাবনা নিজ চোখে দেখে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ নিয়ে তাদের সব ধরনের নেতিবাচক ধারণা মুহূর্তেই পাল্টে যাবে। কেননা এ দেশে এখন বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান আছে, যা অনেকেই জানে না।
দেশের বস্ত্র খাতের বড় প্রতিষ্ঠান জাবের অ্যান্ড জুবায়ের গ্রুপের ব্র্যান্ড অ্যান্ড কাস্টমার কেয়ারের ব্যবস্থাপক অনল রায়হান বলেন, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। এরই মধ্যে এই এক্সপো একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এ প্রদর্শনীতে বিশ্বের বড় ক্রেতারা আসে নেটওয়ার্কিং করতে, একই সঙ্গে তাদের এ দেশীয় ক্রেতাদের কারখানাগুলোও পরিদর্শন করে। আমাদের কারখানাগুলোর উন্নতি দেখে তারা সত্যিকার অর্থে বিস্ময় প্রকাশ করে। অনল রায়হান মনে করেন, এখানকার পানি, ইন্ডিগো কালার এবং প্রতিযোগিতামূলক দাম ডেনিমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের অবস্থান ধরে রেখে এগিয়ে যেতে সরকারের কিছু ‘পলিসি সাপোর্ট’ লাগবে।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ডেনিম পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭৯ কোটি ২৩ লাখ ডলার। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এ সময়ে ইউরোপে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ডেনিম পোশাকের রপ্তানি আয় ছিল ৩৯ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে এ আয় বেড়ে হয়েছে ৪৩ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ শতাংশ। প্রচলিত-অপ্রচলিত বাজারেও সামান্য পরিমাণ ডেনিম পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। সবমিলিয়ে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ডেনিম ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা জানান, ইউরোপে ৭১ ভাগ, যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ ভাগ, চীন ৫৮ ভাগ এবং জাপানে ৫৮ ভাগ মানুষ নিয়মিত ডেনিম পণ্য ব্যবহার করেন।
ইপিবি রপ্তানি তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৫৫ লাখ (২৫.৩০ বিলিয়ন) ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯.৩৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রপ্তানিতে এক হাজার ২৫৪ কোটি ১১ লাখ ডলার এবং ওভেন পোশাক রপ্তানিতে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় হয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাই-এপ্রিল সময়ে মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৮৩.২২ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৩.১৭ শতাংশ। এই দশ মাসে নিট খাতে রপ্তানি বেড়েছে ১১.৪৩ শতাংশ। আর ওভেনে বেড়েছে ৬.৪২ শতাংশ।
ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান ডিরেক্টরেট ইউরোস্ট্যাট-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ১.২৭ বিলিয়ন ইউরোর ডেনিম জিনস রপ্তানি করেছে। এরপর ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১.৩০ বিলিয়ন ইউরো। এছাড়া রপ্তানি বেড়েছে ০.৫৮ ভাগ। তবে বাংলদেশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্কেরর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেশি, ৪.৩৬ ভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ডেনিম রপ্তানি বেড়েছে ৯.৫৫ ভাগ। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৪৬৩.৬১ মিলিয়ন ইউএস ডলারের ডেনিম রপ্তানি হয়েছে। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০৭.৯২ মিলিয়ন ডলারে। চীন ২০১৭ সালে ৯২১.৯০ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলেও, রপ্তানি কমেছে ১.৪১ ভাগ। মেক্সিকোরও একই অবস্থা। তাদের রপ্তানি কমেছে ৭.৯ ভাগ। অর্থাৎ মোট রপ্তানি করেছে ৭৯৩.৪২ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম। তাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে শতকরা ১৩ ভাগ এবং ৭.৯ ভাগ। তারা ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যথাক্রমে ২১৩.৭ এবং ২০৭.২৮ মিলিয়ন ডলারের ডেনিম রপ্তানি করেছে।
বিজিএমই সভাপতি সিদ্দিুর রহমান বলেন, দেশে ডেনিমের ভালো ফেব্রিক তৈরি হয়। পাশাপাশি আধুনিক কারখানা ও ভালো ওয়াশিং প্ল্যান্ট থাকায় ডেনিমে ভালো করছি। বাংলাদেশে এখন ৩১টি বড় ডেনিম ফ্যাক্টরি আছে। বাংলাদেশ থেকে ব্লু ডেনিম ট্রাউজার্স, স্কার্ট, জ্যাকেট, স্যুট-কোট, প্লে স্যুট রপ্তানি হয়।
সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আমরা ভালো কাপড় তৈরি করায় কম সময়ে এবং প্রতিযোগিতামূলক দামে পোশাক দিতে পারি। তিনি বলেন, ডেমিন শুধু কাপড় নয়, এটা একটা ফ্যাশান। এর ক্রেতা সবাই। এর কোনো সিজন নেই, কারণ ১২ মাসই সিজন। এসব দিক খেয়াল রেখে আমরা সময়মতো চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছি বলে ডেনিমের চাহিদা বাড়ছে এবং আরো বাড়বে। সব মিলিয়ে ডেনিমে আমাদের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন মনে করেন, বাংলাদেশকে ডিজাইন উন্নয়ন এবং নতুনত্বের মাধ্যমে ডেনিমে অবস্থান উপরে নিয়ে যেতে হবে। এই খাতে এখন আরো বিনিয়োগ এবং গবেষণা বাড়াতে হবে ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে মাথায় রেখে। তিনি বলেন, আমাদের এখন ভ্যালু অ্যাডিশনের দিকে যেতে হবে। আমরা এখন একটি জিন্স প্যান্ট বিক্রি করি ৫ থেকে ৬ ডলারে। আর দোকানে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৯ ডলারে। আমাদের এই কোয়ানটিটির পরিবর্তে এখন সাসটেইনিবিলিটির দিকে যেতে হবে। আমাদের এখন ১৯ ডলার থেকে ২৯ ডলারের উৎপাদনে যেতে হবে। ভ্যালু অ্যাডিশন বিষয়ে তিনি বলেন, ইনোভেশন, ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইননিবিলিটি-এই ৪টি বিষয়ে গুরুত্ব দিলে আমরা ভ্যালু অ্যাডিশন করতে পারব। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৩১টি ডেনিম কারখানায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন উদ্যোক্তারা। কারখানাগুলোর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা সব মিলিয়ে প্রায় ৪৩ কোটি ৫০ লাখ গজ।
এদিকে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দুই দিনব্যাপী অষ্টম বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোতে অংশ নিতে আসা স্পেনের জিনোলোজিয়ার প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং এবং কমিউনিকেশন ম্যানেজার কারমেন সিলা বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে নেতিবাচক ধারণাও আছে। তবে কেউ যদি বাংলাদেশে একবার সফর করে। আর পোশাক খাতের সম্ভাবনা নিজ চোখে দেখে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ নিয়ে তাদের সব ধরনের নেতিবাচক ধারণা মুহূর্তেই পাল্টে যাবে। কেননা এ দেশে এখন বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান আছে, যা অনেকেই জানে না।
দেশের বস্ত্র খাতের বড় প্রতিষ্ঠান জাবের অ্যান্ড জুবায়ের গ্রুপের ব্র্যান্ড অ্যান্ড কাস্টমার কেয়ারের ব্যবস্থাপক অনল রায়হান বলেন, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। এরই মধ্যে এই এক্সপো একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এ প্রদর্শনীতে বিশ্বের বড় ক্রেতারা আসে নেটওয়ার্কিং করতে, একই সঙ্গে তাদের এ দেশীয় ক্রেতাদের কারখানাগুলোও পরিদর্শন করে। আমাদের কারখানাগুলোর উন্নতি দেখে তারা সত্যিকার অর্থে বিস্ময় প্রকাশ করে। অনল রায়হান মনে করেন, এখানকার পানি, ইন্ডিগো কালার এবং প্রতিযোগিতামূলক দাম ডেনিমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের অবস্থান ধরে রেখে এগিয়ে যেতে সরকারের কিছু ‘পলিসি সাপোর্ট’ লাগবে।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ডেনিম পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭৯ কোটি ২৩ লাখ ডলার। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এ সময়ে ইউরোপে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ডেনিম পোশাকের রপ্তানি আয় ছিল ৩৯ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে এ আয় বেড়ে হয়েছে ৪৩ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ শতাংশ। প্রচলিত-অপ্রচলিত বাজারেও সামান্য পরিমাণ ডেনিম পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। সবমিলিয়ে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ডেনিম ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা জানান, ইউরোপে ৭১ ভাগ, যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ ভাগ, চীন ৫৮ ভাগ এবং জাপানে ৫৮ ভাগ মানুষ নিয়মিত ডেনিম পণ্য ব্যবহার করেন।
ইপিবি রপ্তানি তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৫৫ লাখ (২৫.৩০ বিলিয়ন) ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯.৩৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রপ্তানিতে এক হাজার ২৫৪ কোটি ১১ লাখ ডলার এবং ওভেন পোশাক রপ্তানিতে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার আয় হয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাই-এপ্রিল সময়ে মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৮৩.২২ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৩.১৭ শতাংশ। এই দশ মাসে নিট খাতে রপ্তানি বেড়েছে ১১.৪৩ শতাংশ। আর ওভেনে বেড়েছে ৬.৪২ শতাংশ।
No comments