৩২৪৭ গাছ কেটে স্টেডিয়ামসহ স্থাপনা নির্মাণ চায় বন মন্ত্রণালয়: মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রস্তাব উঠছে আজ by দীন ইসলাম
মিনি
স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কাটার অনুমতি চায় পরিবেশ ও
বন মন্ত্রণালয়। এছাড়া সিঙ্গেল পয়েন্ট মোরিং প্রকল্প বাস্তবায়নেও সংরক্ষিত
বনের গাছপালা কাটা এবং অপসারণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এ দুই প্রস্তাব আজ
সচিবালয়ের ৬ নং ভবনের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার
নিয়মিত বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উঠবে। অনুমোদন মিললে মিনি স্টেডিয়াম এবং
সিঙ্গেল পয়েন্ট মোরিং প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো বাধা থাকবে না। পরিবেশ ও বন
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলায় মিনি
স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য কাটতে হবে এক হাজার ৫৪৬টি গাছ। এছাড়া আলাদা
প্রস্তাবে কক্সবাজারের মহেশখালীর পাহাড় মৌজার এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়নের
লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রজাতির এক হাজার ৭০১টি গাছ, জ্বালানি গাছ ও বেতঝাড় কাটার
জন্য মন্ত্রিসভার অনুমতি চেয়েছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। সবমিলিয়ে দুই
প্রকল্পের জন্য ৩২৪৭টি গাছ কাটার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ২০১৬ সাল থেকে সরকারি নির্দেশে সংরক্ষিত ও
প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের গাছ কাটা নিষিদ্ধ। গাছ কাটা বন্ধে মন্ত্রিসভায় নেয়া এই
সিদ্ধান্ত ২০২২ সাল পর্যন্ত বহাল থাকায় প্রাকৃতিক বনের গাছ কাটার জন্য
মন্ত্রিসভার অনুমতি নিতে হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা
হয়েছে, গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত বনভূমির
দুই দশমিক ৩৪ একর জায়গা মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য সংরক্ষিত বনাঞ্চলের
ভূমি বরাদ্দ দিয়েছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। তবে স্টেডিয়ামের জন্য
নির্ধারিত ভূমি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের হওয়ায় বরাদ্দ করা ভূমি ব্যবহারের শর্ত
হিসেবে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত দুই দশমিক ৩৪ একর ভূমি স্টেডিয়াম ব্যতীত অন্য
কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। মন্ত্রিসভা বৈঠকের জন্য পাঠানো সার
সংক্ষেপে বলা হয়েছে, গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ২১২ নং মৌজার
সি,এস/এস,এ ১১১ নং দাগ থেকে সৃষ্ট আরএস ১৮০ নং দাগে মিনি স্টেডিয়াম
নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা সংরক্ষিত বনভূমিতে বিদ্যমান সামাজিক বনায়নের এক
হাজার ৪০০টি আকাশমণি গাছ ও বিভিন্ন প্রজাতির ১৪৬টি প্রাকৃতিক গাছ কাটার
অনুমতি দিতে মন্ত্রিসভাকে অনুরোধ জানায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এদিকে
মন্ত্রিসভা বৈঠকের জন্য আলাদা আরেক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আমদানি করা অপরিশোধিত
জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) ও ডিজেল বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্রে অবস্থান করা
মাদার ভেসেল থেকে সরাসরি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ
ইস্টার্ন রিফাইনারিতে সরবরাহের লক্ষ্যে ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট
মুড়িং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর পাহাড় মৌজার ১৯০ দশমিক ৯৫৬ একর ভূমি লিজ দিয়েছে
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। এজন্য এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ করা
বনভূমিতে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রজাতির এক হাজার ৭০১টি গাছ, জ্বালানি গাছ ও
বেতঝাড় কাটার জন্য মন্ত্রিসভার অনুমতি চেয়েছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। সব
মিলিয়ে দুই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩২৪৭টি গাছ কাটার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
No comments