জলাবদ্ধতার শহর হবিগঞ্জ by রাশেদ আহমদ খান
হবিগঞ্জ
এখন জলাবদ্ধতার শহরে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা
সৃষ্টি হয়। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ মানুষের
চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। আর অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে
পড়ছে জনজীবন। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি কর্মকাণ্ডেও। অল্প
বৃষ্টিতেই শহরের পিটিআই এলাকা, সার্কিট হাউজ রোড, শায়েস্তানগর, কালীবাড়ী
ক্রস রোড, উত্তর শ্যামলী রোডসহ অধিকাংশ সড়ক তলিয়ে যাচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে
জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের বাসভবন, পানি উন্নয়ন ভবন, সার্কিট
হাউজসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনের সামনের সড়ক। এতে যান চলাচলসহ সরকারি কর্মকাণ্ড
বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, একসময় পাজামা শহর হিসেবে পরিচিত ছিল হবিগঞ্জ। লোক বসতি ছিল অনেক কম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে পরিবর্তন হয়েছে এ শহরের। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে লোকজনের বসতি। বর্তমানে সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলা শহরের তুলনায় নাগরিক বসতি হবিগঞ্জে অনেক বেশি। আর এ কারণে প্রসার ঘটেছে ব্যবসা বাণিজ্যেও। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধা ও গ্রাম্য অপরাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বিভিন্ন উপজেলার মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরাও বাসা নিয়ে বসবাস করছেন জেলা শহরে। এছাড়া শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অনুকূলে থাকায় ক্রমশই বাড়ছে শহরে বাসাবাড়ি নির্মাণ। কিন্তু এ তুলনায় বাড়ছে না রাস্তাঘাটসহ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। উপরন্তু শহরের পার্শ্ববর্তী রেলের জায়গা অবৈধ দখল করে বাসাবাড়ি নির্মাণের ফলে একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। অন্যদিকে শহরের বুক চিরে এক সময়ের বয়ের যাওয়া খোয়াই নদীতে এখন চলছে দখল ও দূষণ প্রতিযোগিতা। পূরাতন খোয়াই নদী দখল ও ভরাটের কারণে শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। ফলে দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে শহরের জলাবদ্ধতা।
সরজমিন হবিগঞ্জ শহরের পিটিআই ভবন এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই পিটিআই সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে এ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষনার্থী নারী-পুরুষদের চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকে জামা কাপড় ভিজিয়ে অংশগ্রহণ করছেন প্রশিক্ষণের ক্লাসে। অথচ দীর্ঘদিন থেকে এ সমস্যা চলতে থাকলেও তা নিরসনে নেয়া হচ্ছে না কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা। বৃষ্টির পর শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে দেখা যায় পনি উন্নয়ন বোর্ড ডুবে আছে পানির নিচে। এছাড়া পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে হাঁটুপানি। সার্কিট হাউজের সামনের হাঁটু পানিতে গাড়ি ধোয়ার কাজ করছেন কয়েকজন ড্রাইভার। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান মানবজমিনকে জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক তানসেন আমীন জনান, শহরের জলাবদ্ধতা এখন একটি বড় সমস্যা। বৃষ্টির দিনে জলাবদ্ধতার কারণে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় আসতে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এ থেকে হবিগঞ্জবাসী মুক্তি চায়। শহরের বসবাসরত নাগরিক, রাজনীতিক ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাপা হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল জানান, শহরের পুরাতন খোয়াই নদী দখল ও ভরাটের কারণেই এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এটি ধীরে ধীরে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। আমরা খোয়াই নদী দখল ও দূষণ রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। তারা কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করলে প্রয়োজনে শহরবাসীকে নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান মানবজমিনকে জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি। হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জিকে গউছ জানান, হবিগঞ্জের জলাবদ্ধতা সাময়িক সময়ের। টানা বৃষ্টির পর কয়েক ঘণ্টা জলাবদ্ধতা থাকে। এরপর পানি ধীরে ধীরে রাস্তা থেকে সরে যায়। তিনি জানান, শহরের ড্রেনগুলোতে ময়লা আবর্জনা ফেলে নাগরিকরা পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এছাড়া শহরের পাশ্ববর্তী রেলের জায়গা দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। এর ফলে শহর থেকে পানি বের হতে পারছে না। এ সমস্যা দূর করতে হলে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ মানবজমিনকে জানান, হবিগঞ্জের পুরাতন খোয়াই নদীসহ শহরের পার্শ্ববর্তী খালগুলো দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ দখল হয়ে আসছে। এ কারণে অতিবৃষ্টির সময় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। যা শহরের একটি অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা নদী ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে খনন ও সংস্কারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে দখলদারদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদের প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, একসময় পাজামা শহর হিসেবে পরিচিত ছিল হবিগঞ্জ। লোক বসতি ছিল অনেক কম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে পরিবর্তন হয়েছে এ শহরের। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে লোকজনের বসতি। বর্তমানে সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলা শহরের তুলনায় নাগরিক বসতি হবিগঞ্জে অনেক বেশি। আর এ কারণে প্রসার ঘটেছে ব্যবসা বাণিজ্যেও। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধা ও গ্রাম্য অপরাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বিভিন্ন উপজেলার মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরাও বাসা নিয়ে বসবাস করছেন জেলা শহরে। এছাড়া শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অনুকূলে থাকায় ক্রমশই বাড়ছে শহরে বাসাবাড়ি নির্মাণ। কিন্তু এ তুলনায় বাড়ছে না রাস্তাঘাটসহ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। উপরন্তু শহরের পার্শ্ববর্তী রেলের জায়গা অবৈধ দখল করে বাসাবাড়ি নির্মাণের ফলে একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। অন্যদিকে শহরের বুক চিরে এক সময়ের বয়ের যাওয়া খোয়াই নদীতে এখন চলছে দখল ও দূষণ প্রতিযোগিতা। পূরাতন খোয়াই নদী দখল ও ভরাটের কারণে শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। ফলে দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে শহরের জলাবদ্ধতা।
সরজমিন হবিগঞ্জ শহরের পিটিআই ভবন এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই পিটিআই সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে এ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষনার্থী নারী-পুরুষদের চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকে জামা কাপড় ভিজিয়ে অংশগ্রহণ করছেন প্রশিক্ষণের ক্লাসে। অথচ দীর্ঘদিন থেকে এ সমস্যা চলতে থাকলেও তা নিরসনে নেয়া হচ্ছে না কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা। বৃষ্টির পর শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে দেখা যায় পনি উন্নয়ন বোর্ড ডুবে আছে পানির নিচে। এছাড়া পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে হাঁটুপানি। সার্কিট হাউজের সামনের হাঁটু পানিতে গাড়ি ধোয়ার কাজ করছেন কয়েকজন ড্রাইভার। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান মানবজমিনকে জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক তানসেন আমীন জনান, শহরের জলাবদ্ধতা এখন একটি বড় সমস্যা। বৃষ্টির দিনে জলাবদ্ধতার কারণে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় আসতে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এ থেকে হবিগঞ্জবাসী মুক্তি চায়। শহরের বসবাসরত নাগরিক, রাজনীতিক ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাপা হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল জানান, শহরের পুরাতন খোয়াই নদী দখল ও ভরাটের কারণেই এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এটি ধীরে ধীরে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। আমরা খোয়াই নদী দখল ও দূষণ রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। তারা কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করলে প্রয়োজনে শহরবাসীকে নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান মানবজমিনকে জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি। হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জিকে গউছ জানান, হবিগঞ্জের জলাবদ্ধতা সাময়িক সময়ের। টানা বৃষ্টির পর কয়েক ঘণ্টা জলাবদ্ধতা থাকে। এরপর পানি ধীরে ধীরে রাস্তা থেকে সরে যায়। তিনি জানান, শহরের ড্রেনগুলোতে ময়লা আবর্জনা ফেলে নাগরিকরা পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এছাড়া শহরের পাশ্ববর্তী রেলের জায়গা দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। এর ফলে শহর থেকে পানি বের হতে পারছে না। এ সমস্যা দূর করতে হলে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ মানবজমিনকে জানান, হবিগঞ্জের পুরাতন খোয়াই নদীসহ শহরের পার্শ্ববর্তী খালগুলো দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ দখল হয়ে আসছে। এ কারণে অতিবৃষ্টির সময় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। যা শহরের একটি অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা নদী ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে খনন ও সংস্কারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে দখলদারদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদের প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
No comments