নারীর রক্ষণশীলতর সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গি দলগুলো
ভালোকে
মন্দভাবে উপস্থাপনই এখন অনেকের কাছে আধুনিকতা। যারা রক্ষণশীল, পর্দা করেন
তাদেরকে টার্গেট করে তৎপরতা চালায় কিছু জঙ্গি-সন্ত্রাসী দল। সৌদি আরবের
পরিস্থিতির আলোকে সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন সব তথ্য তুলে ধরেছেন গবেষক
মিরভেত আব্দুল হামিদ। ওই গবেষণার বরাতে গালফ নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে
বলা হয়, সৌদি আরবের কড়া, রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে আগে থেকেই ধরা হতো
সম্পূর্ণ নিরীহ, যত্নশীল এবং সহিংসতা বিরোধী। কিন্তু নারীরাও যে জঙ্গি
হতে পারে, এবং তাদের জঙ্গিবাদের জন্য টার্গেট করা আরও বেশি সহজ, তা ২০১৫
সালেই গবেষণার মাধ্যমে সতর্ক করেছিলেন মিরভেত। তিনি বলেছিলেন, নারীদের দলে
টানা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর প্রধান কৌশলগুলোর একটি। বিশ্ব জুড়ে নারী জঙ্গিদের
সংখ্যা বাড়ার কারণে সেই গবেষণা প্রতিবেদনটি এবার সৌদিসহ আন্তর্জাতিক বেশ
কয়েকটি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। গবেষণাটি অনুসারে, সৌদি আরবে নারীর অতি
রক্ষণশীল অবস্থানেরই সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গি দলগুলো। অপরিচিত নারীর সঙ্গে
রক্ষণশীল নারীরা কথা বলেন না। পুরুষদেরও তাদের সাথে কথা বলার অনুমতি নেই।
তাই কালো বোরকার নিকাবে মুখ ঢাকা নারীদের কাছে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই
তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে না কেউ।
শুধু তাই নয়, ঢোলা কালো বোরকার নিচে
অস্ত্র লুকিয়ে রাখতে পারে নারী জঙ্গিরা। তাই তাদেরকে দেশটিতে জঙ্গি
সংগঠনগুলো টার্গেট করছে। সৌদি আরবে নারীদের জঙ্গি দলে টানতে সামাজিক মাধ্যম
অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে বলে ওই গবেষণায় দেখা গেছে। দেশটির মিনিস্ট্রি অব
ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, জঙ্গি সংগঠনের সাথে ৫৩.২৬
শতাংশ নারী সম্পৃক্ত হয় সামাজিক মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
তাদেরকে আরও ভালো, আরও সুখি সমৃদ্ধ জীবনের ফাঁকা বুলি শোনানো হয়। তারা
সেগুলো বিশ্বাস করে ফেলে। এছাড়া ৩২.৪ শতাংশ ধর্মীয় মতাদর্শের ভুল শিক্ষায়
প্রভাবিত হয়, এবং ১৬.৩৩ শতাংশ কোনো না কোনো কারণে আবেগতাড়িত হয়ে জড়িয়ে পড়ে।
যথেষ্ট শিক্ষার অভাবের কারণেও অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে প্রভাবিত করা সহজ হয়ে
ওঠে। আল-কায়েদার চেয়ে আইএসের কৌশল কিছু ভিন্ন। কথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস
মূলত নারীদের নির্বাহী পর্যায়ের ভূমিকায় রাখে। একই সাথে অতি রক্ষণশীল
সমাজব্যবস্থা থেকে নারী ও কিশোরীদের মুক্তি দেয়ার আশ্বাস দেয় তারা। তাই
প্রশাসন যদি বিষয়টিকে আমলে নিয়ে যথাযথভাবে মোকাবিলা না করে তবে জঙ্গিবাদ
আরও ভয়াবহ রূপ নেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
No comments