ঢাকা বাইপাসের দুরবস্থা
ঢাকা
বাইপাসের ১৮ কিলোমিটার সড়কের গাজীপুরের ভোগড়া মোড় থেকে ধীরাশ্রম পর্যন্ত
সাড়ে ছয় কিলোমিটার সড়কের শোচনীয় দুরবস্থার চিত্র বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয়
প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। সড়কের অনেক অংশের পিচ উঠে গেছে। স্থানে
স্থানে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সর্বশেষ গত বুধবার ভোরে ওই সড়কে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে রাস্তার পাশে পড়ে
যায়। এতে ওই কাভার্ড ভ্যানের চালক ও তাঁর দুই সহযোগী আহত হন। রাস্তা খারাপ
হওয়ার কারণে গাড়ি চলে ধীরগতিতে। এতে সড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। দুই থেকে
তিন কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট সব সময় লেগেই থাকে। স্থানীয় ব্যক্তিদের
আশঙ্কা, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে সড়কটি সংস্কার করা না হলে সেখান দিয়ে
চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়বে। কিন্তু যাদের এই সড়ক ঠিক করার কথা, সেই সড়ক ও জনপথ
বিভাগের এ নিয়ে যে কোনো মাথাব্যথা নেই, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। থাকলে তো আর
সড়কটির এই দশা হতো না। প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, সড়কের এই সাড়ে ছয় কিলোমিটার
অংশ একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু কোনোবারই তা এক মাসও টেকেনি। তার
মানে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক মেরামত করা হয়েছে, যার কারণে সংস্কার
করা হলেও কদিন পরই সড়ক আগের অবস্থায় ফিরে আসছে। এটা শুধু গাজীপুরে নয়, সারা
দেশের চিত্র প্রায় একই।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এই খাতে বিদ্যমান দুর্নীতির
কারণেই পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ সরকারি
কর্মকর্তা ও অসাধু ঠিকাদারের যোগসাজশে অধিকাংশ রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত হয়
নিম্নমানের সামগ্রী। প্রায়ই দেখা যায়, সড়ক মেরামতে ভালো মানের খোয়ার সঙ্গে
নিম্নমানের খোয়া মেশানো হচ্ছে। বিটুমিন পরিমাণে কম দিয়ে রাস্তা কার্পেটিং
করা হচ্ছে। ফলে ভারী যানবাহন চলাচল করার সময় এগুলো ভেঙে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এতে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়, তেমনি জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এ
ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে
জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে। গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী
সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের ভোগড়া মোড় থেকে ধীরাশ্রম পর্যন্ত সাড়ে ছয়
কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যেকোনো দিন
কাজ শুরু করা হবে। আমরা বলতে চাই, বর্ষা আসার আগেই এ কাজ শুরু করুন। ওই
এলাকার জনগণের দুর্ভোগ দূর করুন।
No comments