যুক্তরাষ্ট্র সফর : ভিসা বা ব্যবসা- কোনোটাই পেলেন না মোদি
হোয়াইট হাউসে নরেন্দ্র মোদীকে বিদায় জানাচ্ছেন সস্ত্রীক ডোনাল্ড ট্রাম্প : এএফপি
পাঁচ ঘণ্টার মোলাকাত। তার মধ্যে কুড়ি মিনিট নরেন্দ্র মোদি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প একান্তে। বাকি সময় দু’পক্ষের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক। হোয়াইট হাউসে নৈশভোজ। রোজ গার্ডেনে যৌথ বিবৃতি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির তিন দিনের এই সফর সম্পর্কে প্রবীন কূটনীতিকেরা বলছেন, দু’পক্ষ থেকেই বন্ধুত্বের উষ্ণতার দীর্ঘ ঘোষণা আছে। কিন্তু ট্রাম্প আমলের এইচ ওয়ান বি ভিসানীতি অথবা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মতো বিষয়গুলো তুলতে ব্যর্থ হলো ভারত।
মোদি-ট্রাম্পের বেশ কয়েকবার আলিঙ্গন অবশ্য দেখা গেছে, হোয়াইট হাউসে অতিথিবৎসল ট্রাম্প দম্পতির সহৃদয় বিদায় জানানোর ফুটেজ দেখা গেছে। কিন্তু এই সফর শেষে মোদি কার্যত শূন্য হাতে দেশে ফিরছেন বলেই মনে করছেন অনেক প্রবীণ কূটনীতিক। সাবেক পররাষ্ট্রসচিব কানওয়াল সিব্বল যেমন মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে ভারত সম্পর্কে মার্কিন মনোভাবে কোনো পরিবর্তনই আসবে না।
মোদির সফরের মুখে হিজবুল প্রধান সৈয়দ সালাউদ্দিনকে বিশেষ সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করল আমেরিকা। যৌথ বিবৃতিতেও তার নাম এলো। কিন্তু সিব্বলের প্রশ্ন, দশ বছর আগেই তো হিজবুল মুজাহিদিনকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। এখন তার নেতাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করাটা কি নাটক নয়? অটলবিহারী বাজপেয়ী ও দেশে যাওয়ার আগেও দাউদ ইব্রাহিমকে বিশ্ব-সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছিল আমেরিকা।
সাবেক কূটনীতিকেরা শুধু নন, সাউথ ব্লকের অনেকেই মনে করছেন, মোদি আমেরিকা গিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসকে বড় বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছেন। চীন যে এলাকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছে, তা নিয়েও ট্রাম্পের কাছে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কান্নাকাটি করেছেন মোদি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদের বক্তব্য, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দ্বিপক্ষীয় স্তরে রাখাটাই দিল্লির লক্ষ্য। তবু আমেরিকার কাছে গিয়ে নালিশ করাটা যেন,‘মা আমাকে ও মারছে’গোছের কাঁদুনি গাওয়া!
এ কথা ঠিক পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চীনের সিল্ক রুট তৈরি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন একমত হয়েছে। কিন্তু শিবশঙ্কর মেননের মতো কূটনীতিক মনে করেন, চীনের সঙ্গে রণংদেহি মনোভাব ভারতের পররাষ্ট্রনীতির সাবেকি মূলমন্ত্র নয়। অনেক কূটনীতিক মনে করেন, চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলেই বরং আমেরিকার কাছে দিল্লির গুরুত্ব বাড়ে। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক চীনের উপরে চাপ বাড়ায়। অজিত ডোভাল ও জয়শঙ্কর এখন যেভাবে চীনের সঙ্গে সংঘাতের কৌশল নিয়েছেন, তাতে ভারতের মার্কিন নির্ভরতা বেড়েছে।
দু’দেশের মধ্যে অসামরিক পরমাণু চুক্তির বাস্তবায়ন দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে রয়েছে। তা নিয়ে কথা হয়েছে। তবে তিন পৃষ্ঠার সুদীর্ঘ যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক সন্ত্রাসের মোকাবিলা যতটা গুরুত্ব পেয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ততটা পায়নি। আছে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ এলাকায় শান্তিরক্ষার কথা। উত্তর কোরিয়ার লাগাতার হুমকি থেকে শুরু করে আফগানিস্থানে নয়া কলেবরে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা, নাম না করেও দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যার ইঙ্গিত— এই সবই ঠাঁই পেয়েছে বিবৃতিতে।
ভারত সরকারের দাবি, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে মার্কিন কর্তাদের সক্রিয় করে তোলা ও যৌথ বিবৃতি দেয়ানোটাও মোদির সাফল্য। কূটনীতির জগতের অনেকেই কিন্তু বলছেন, বারাক ওবামা এক সময় বিষয়টি নিয়ে খানিকটা উৎসাহ দেখালেও চীন যে এই এলাকাটিকে বাড়ির পুকুর ভাবতে শুরু করেছে, তা নিয়ে জাপান বা ভারতের মাথাব্যথা থাকলেও ট্রাম্পের কোনো উৎসাহ নেই। বিবৃতিটি তাই নাম কা ওয়াস্তে।
রণেন সেন অথবা শ্যাম শরণের মতো কূটনীতিক প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, তারা পাকিস্তান সম্পর্কে আমেরিকার নীতি নিয়েও সতর্ক করেছেন। ট্রাম্পের প্রতিরক্ষা সচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দু’জনেই মার্কিন সেনাবাহিনীর লোক। এই অবস্থায় পাকিস্তানকে মার্কিন সেনার প্রতিরক্ষা সহায়তা কমছে কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর এই আমেরিকা সফরের পরে পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মোদির আসল সমস্যা হলো, তিনি পররাষ্ট্রনীতির দিকে নজর দেয়ার চেয়েও পাকিস্তান ও চীনের বিরোধিতা করে নির্বাচনী রাজনীতির মোক্ষ লাভেই বেশি ব্যস্ত।
পাঁচ ঘণ্টার মোলাকাত। তার মধ্যে কুড়ি মিনিট নরেন্দ্র মোদি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প একান্তে। বাকি সময় দু’পক্ষের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক। হোয়াইট হাউসে নৈশভোজ। রোজ গার্ডেনে যৌথ বিবৃতি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির তিন দিনের এই সফর সম্পর্কে প্রবীন কূটনীতিকেরা বলছেন, দু’পক্ষ থেকেই বন্ধুত্বের উষ্ণতার দীর্ঘ ঘোষণা আছে। কিন্তু ট্রাম্প আমলের এইচ ওয়ান বি ভিসানীতি অথবা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মতো বিষয়গুলো তুলতে ব্যর্থ হলো ভারত।
মোদি-ট্রাম্পের বেশ কয়েকবার আলিঙ্গন অবশ্য দেখা গেছে, হোয়াইট হাউসে অতিথিবৎসল ট্রাম্প দম্পতির সহৃদয় বিদায় জানানোর ফুটেজ দেখা গেছে। কিন্তু এই সফর শেষে মোদি কার্যত শূন্য হাতে দেশে ফিরছেন বলেই মনে করছেন অনেক প্রবীণ কূটনীতিক। সাবেক পররাষ্ট্রসচিব কানওয়াল সিব্বল যেমন মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে ভারত সম্পর্কে মার্কিন মনোভাবে কোনো পরিবর্তনই আসবে না।
মোদির সফরের মুখে হিজবুল প্রধান সৈয়দ সালাউদ্দিনকে বিশেষ সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করল আমেরিকা। যৌথ বিবৃতিতেও তার নাম এলো। কিন্তু সিব্বলের প্রশ্ন, দশ বছর আগেই তো হিজবুল মুজাহিদিনকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। এখন তার নেতাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করাটা কি নাটক নয়? অটলবিহারী বাজপেয়ী ও দেশে যাওয়ার আগেও দাউদ ইব্রাহিমকে বিশ্ব-সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছিল আমেরিকা।
সাবেক কূটনীতিকেরা শুধু নন, সাউথ ব্লকের অনেকেই মনে করছেন, মোদি আমেরিকা গিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসকে বড় বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছেন। চীন যে এলাকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছে, তা নিয়েও ট্রাম্পের কাছে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কান্নাকাটি করেছেন মোদি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদের বক্তব্য, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দ্বিপক্ষীয় স্তরে রাখাটাই দিল্লির লক্ষ্য। তবু আমেরিকার কাছে গিয়ে নালিশ করাটা যেন,‘মা আমাকে ও মারছে’গোছের কাঁদুনি গাওয়া!
এ কথা ঠিক পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চীনের সিল্ক রুট তৈরি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন একমত হয়েছে। কিন্তু শিবশঙ্কর মেননের মতো কূটনীতিক মনে করেন, চীনের সঙ্গে রণংদেহি মনোভাব ভারতের পররাষ্ট্রনীতির সাবেকি মূলমন্ত্র নয়। অনেক কূটনীতিক মনে করেন, চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলেই বরং আমেরিকার কাছে দিল্লির গুরুত্ব বাড়ে। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক চীনের উপরে চাপ বাড়ায়। অজিত ডোভাল ও জয়শঙ্কর এখন যেভাবে চীনের সঙ্গে সংঘাতের কৌশল নিয়েছেন, তাতে ভারতের মার্কিন নির্ভরতা বেড়েছে।
দু’দেশের মধ্যে অসামরিক পরমাণু চুক্তির বাস্তবায়ন দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে রয়েছে। তা নিয়ে কথা হয়েছে। তবে তিন পৃষ্ঠার সুদীর্ঘ যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক সন্ত্রাসের মোকাবিলা যতটা গুরুত্ব পেয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ততটা পায়নি। আছে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ এলাকায় শান্তিরক্ষার কথা। উত্তর কোরিয়ার লাগাতার হুমকি থেকে শুরু করে আফগানিস্থানে নয়া কলেবরে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা, নাম না করেও দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যার ইঙ্গিত— এই সবই ঠাঁই পেয়েছে বিবৃতিতে।
ভারত সরকারের দাবি, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে মার্কিন কর্তাদের সক্রিয় করে তোলা ও যৌথ বিবৃতি দেয়ানোটাও মোদির সাফল্য। কূটনীতির জগতের অনেকেই কিন্তু বলছেন, বারাক ওবামা এক সময় বিষয়টি নিয়ে খানিকটা উৎসাহ দেখালেও চীন যে এই এলাকাটিকে বাড়ির পুকুর ভাবতে শুরু করেছে, তা নিয়ে জাপান বা ভারতের মাথাব্যথা থাকলেও ট্রাম্পের কোনো উৎসাহ নেই। বিবৃতিটি তাই নাম কা ওয়াস্তে।
রণেন সেন অথবা শ্যাম শরণের মতো কূটনীতিক প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, তারা পাকিস্তান সম্পর্কে আমেরিকার নীতি নিয়েও সতর্ক করেছেন। ট্রাম্পের প্রতিরক্ষা সচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দু’জনেই মার্কিন সেনাবাহিনীর লোক। এই অবস্থায় পাকিস্তানকে মার্কিন সেনার প্রতিরক্ষা সহায়তা কমছে কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর এই আমেরিকা সফরের পরে পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মোদির আসল সমস্যা হলো, তিনি পররাষ্ট্রনীতির দিকে নজর দেয়ার চেয়েও পাকিস্তান ও চীনের বিরোধিতা করে নির্বাচনী রাজনীতির মোক্ষ লাভেই বেশি ব্যস্ত।
No comments