বলতে চাই- সভ্যতার কালিমা মুছব 'শতবর্ষ' দিয়ে
হেলেন রেড্ডির গান, পুনর্নভা মৌ-এর
অনুবাদে এবং লেখনী দিয়ে আমরা শুরু করতে পারি নারী স্বাধীনতা ও আন্দোলনের
শতবর্ষপূর্তির ইতিহাসকথা। আমরা সারাবিশ্বের নারীদের নিয়ে সোচ্চার হয়েছি এক
শ' বছর আগে।
এটা আমাদের অত্যনত্ম গৌরবের, গর্বের এবং
ইতিহাসখ্যাত গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্দোলন। আজকের নয়, সেই শতবর্ষের সমাজ
ব্যবস্থাকে এবং সমাজ ব্যবস্থাপকদেরকে ধিক্ শতবার। কারণ এক বিশেষ সিম্বলের
মানুষের তার সমান অংশের অন্য সিম্বলের মানুষকে এভাবে বৈষ্যম্য,
অধিকারহীনতা, স্বাধীনতাহীনতা, মানবাধিকার হরণ এবং নির্যাতনের চরম চূড়ানত্মে
নিয়ে গেছে শতবর্ষের বহু আগেই। অর্থাৎ সমাজ ব্যবস্থা প্রচলনের শুরু থেকেই।
তারপর দেয়ালে পিঠ ঠেকতে ঠেকতে একেবারেই প্রানত্মসীমায় এসে নারী
প্রতিবাদমুখর হয় এবং শতবর্ষ আগেই সেই প্রতিবাদের একটি সভ্যরূপ দাঁড়িয়ে যায়।
আজকের নারী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল জার্মান নেত্রী কারা জেটকিনের
নেতৃত্বে। আজকে বিশ্বের সমসত্ম দেশজুড়ে হাজারো কারা জেটকিন তাঁদের
মর্মযাতনা দিয়ে; তাঁদের বিচৰণতা, প্রজ্ঞা এবং ঐশ্বর্যপূর্ণ জ্ঞানভাণ্ডার
দিয়ে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এবং এক সময় আরও হাজারো কারা জেটকিনের জন্ম দিয়ে
তাঁরা নিঃশব্দে নিজেদের নিঃশেষ করছেন। তার পরেও আমাদের বৈষম্য, অধিকার
বঞ্চনা, মানবাধিকার এবং সর্বনেশে আগ্রাসন বিভীষিকাসম ভয়াবহ আকারে বেড়েই
চলেছে বিশ্বব্যাপী নারীর ওপর। বিশ্বব্যাপী যে গেস্নাবাল উন্নয়ন, মিলেনিয়াম
গোলে বিশ্বকে ঠেলে দেয়া হয়েছে তার সবটুকু সর্বনাশই এসেছে এবং আসতে শুরম্ন
করেছে সমগ্র নারী জাতির ওপর। এ সর্বনাশ থেকে নারীদের রৰা পাওয়ার কোন উপায়
রাখছে না এ সকল ব্যবস্থাপনা। নারীকে দিয়েই নারীর সর্বনাশ তৈরি করা হচ্ছে,
স্থায়ীভাবেই নারীকে রম্নখে রাখার ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে এবং হয়েছে।
আমরা যে সমাজ ব্যবস্থা, বিশ্বায়ন ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই তারই
আন্দোলন শুরম্ন হয়েছে শতবর্ষ আগে। তাই নারীর এ রকম গুরম্নত্বপূর্ণ সমঅধিকার
আদায়ের সংগ্রামকে খাটো করে দেখার কোন বিষয় আজ আর কারও নেই। এখানে আমি
উলেস্নখ করতে চাই, নিশ্চয়ই বিশ্ব নেতৃত্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ
সকলেই এ দিনটি কর্মজীবী নারীদের জন্য সম্মানজনক ছুটির ব্যবস্থা করার দাবি
বহু বারই করেছেন সরকারের কাছে। কিন্তু তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি আজও। সুতরাং এবার
এ আন্দোলনের শতবর্ষপূর্তি উপলৰে সরকারীভাবে যেন অন্য বহু দেশের মতো
বাংলাদেশের কর্মজীবী নারীরা এ ছুটি পেতে পারেন সেটা সরকার যেন নিশ্চিত করে।
আমাদের এ দাবিতে নারী সমাজ আজ সোচ্চার।
হেলেন রেড্ডি বলেছেন,
"আমি নারী, শোনো আমার আর্তচিৎকার
সংখ্যাভারী আমাকে কীভাবে করবে অস্বীকার।
হঁ্যা আমিই বুদ্ধিমতী জ্ঞানবতী
আর ওই জ্ঞানই আমার জন্ম-ৰতি!
দিচ্ছি আমি অহরহ ৰতিপূরণতাই
তবুও দেখো কেমন করে আমি জিতে যাই।"
নারীর এই উপলব্ধি আজ সর্বত্র। সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থা নারীর এই উপলব্ধিকে আর রম্নখতে পারবে না কখনও। ১৯৩২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে নারী দিবস উপলৰে একটি চোখ জুড়ানো পোস্টার প্রকাশ পেয়েছিল। তাতে লেখা ছিল "৮ মার্চ সেই সংগ্রামী দিন যেদিন শ্রমজীবী নারী তার রান্নাঘরের দাসত্বের বিরম্নদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। আরও যা লেখা ছিল তার ভাবার্থ করলে দাঁড়ায় : নিপীড়ন, নির্যাতন রম্নখো ও ঘরোয়া কাজের হীনমানসিকতা দূর করো।" (সাপ্তাহিক একতা) ১৯৩২ সালে আমাদের জন্ম তো দূরের কথা, আমাদের মায়েরা তখন কিশোরী ছিলেন। অথচ আজও সেই রূপের কোন পরিবর্তন এসেছে_ কোথাও তার কোন প্রমাণ মেলে না। হয়ত কারও কারও জীবনে সাময়িক পরিবর্তন আসলেও সামগ্রিকভাবে সবার জীবনে তা আসেনি। সকলেই একই ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ পুরম্নষতান্ত্রিক আগ্রাসন থেকে মুক্ত হইনি এতটুকুও। কোন কোন পুরম্নষ সদস্য দিবসটিকে গুরম্নত্ব দিলেও অন্য সকলেই তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে। তারপরও আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, পুরম্নষরা নারীদের এই মর্যাদার বিষয়টিকে গুরম্নত্ব না দিলে এ আন্দোলন আরও বেশি নস্যাত হতো। তাই আজ শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বের সকল নারীর মর্যাদার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক স্থায়ীভাবে আজকের শতবর্ষে। এই আশাবাদ অধিকারে পরিণত হোক। শুধু ফুলের শুভেচ্ছা নয়; স্ত্রী, প্রেয়সী নারী, দেহসঙ্গিনী নারী, আত্মীয়া নারীকে উপহার দিয়ে; ফুল, চকোলেট, পোশাক, গয়না দিয়ে; বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বোঝানো নয় যে, আমি তোমার নারী দিবসকে দেখ কত গুরম্নত্ব দিচ্ছি। আমরা আর চাই না এ প্রহসন। আমরা চাই একটি মর্যাদাপূর্ণ নারী-পুরম্নষের সমতাভিত্তিক সুন্দর একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।
অধ্যাপিকা সুরাইয়া শরীফ
হেলেন রেড্ডি বলেছেন,
"আমি নারী, শোনো আমার আর্তচিৎকার
সংখ্যাভারী আমাকে কীভাবে করবে অস্বীকার।
হঁ্যা আমিই বুদ্ধিমতী জ্ঞানবতী
আর ওই জ্ঞানই আমার জন্ম-ৰতি!
দিচ্ছি আমি অহরহ ৰতিপূরণতাই
তবুও দেখো কেমন করে আমি জিতে যাই।"
নারীর এই উপলব্ধি আজ সর্বত্র। সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থা নারীর এই উপলব্ধিকে আর রম্নখতে পারবে না কখনও। ১৯৩২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে নারী দিবস উপলৰে একটি চোখ জুড়ানো পোস্টার প্রকাশ পেয়েছিল। তাতে লেখা ছিল "৮ মার্চ সেই সংগ্রামী দিন যেদিন শ্রমজীবী নারী তার রান্নাঘরের দাসত্বের বিরম্নদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। আরও যা লেখা ছিল তার ভাবার্থ করলে দাঁড়ায় : নিপীড়ন, নির্যাতন রম্নখো ও ঘরোয়া কাজের হীনমানসিকতা দূর করো।" (সাপ্তাহিক একতা) ১৯৩২ সালে আমাদের জন্ম তো দূরের কথা, আমাদের মায়েরা তখন কিশোরী ছিলেন। অথচ আজও সেই রূপের কোন পরিবর্তন এসেছে_ কোথাও তার কোন প্রমাণ মেলে না। হয়ত কারও কারও জীবনে সাময়িক পরিবর্তন আসলেও সামগ্রিকভাবে সবার জীবনে তা আসেনি। সকলেই একই ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ পুরম্নষতান্ত্রিক আগ্রাসন থেকে মুক্ত হইনি এতটুকুও। কোন কোন পুরম্নষ সদস্য দিবসটিকে গুরম্নত্ব দিলেও অন্য সকলেই তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে। তারপরও আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, পুরম্নষরা নারীদের এই মর্যাদার বিষয়টিকে গুরম্নত্ব না দিলে এ আন্দোলন আরও বেশি নস্যাত হতো। তাই আজ শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বের সকল নারীর মর্যাদার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক স্থায়ীভাবে আজকের শতবর্ষে। এই আশাবাদ অধিকারে পরিণত হোক। শুধু ফুলের শুভেচ্ছা নয়; স্ত্রী, প্রেয়সী নারী, দেহসঙ্গিনী নারী, আত্মীয়া নারীকে উপহার দিয়ে; ফুল, চকোলেট, পোশাক, গয়না দিয়ে; বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বোঝানো নয় যে, আমি তোমার নারী দিবসকে দেখ কত গুরম্নত্ব দিচ্ছি। আমরা আর চাই না এ প্রহসন। আমরা চাই একটি মর্যাদাপূর্ণ নারী-পুরম্নষের সমতাভিত্তিক সুন্দর একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।
অধ্যাপিকা সুরাইয়া শরীফ
No comments