২০১৪ নিয়ে আওয়ামী লীগ কী ভাবছে? by মাসুদা ভাট্টি
দেশে একটি নির্বাচিত এবং রাজনৈতিক সরকার মতায় আছে সেটা বোঝার একমাত্র মাপকাঠি হচ্ছে হাটে-বাজারে, বাস-ট্রেন-লঞ্চে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে, সংবাদপত্রে-টেলিভিশনে, চায়ের টেবিলে-বসার ঘরে সর্বত্রই সরকারের কর্মকা- নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা এবং তা নির্ভয়ে চালিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘকাল পর এই স্বাধীনতা ভোগ করছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সরকারের বিরম্নদ্ধে, সরকারের সিদ্ধানত্মের বিরম্নদ্ধে আদালতে আশ্রয় নেয়ার যে নতুন ধারা শুরম্ন হয়েছে তা শুধু ইতিবাচকই নয় বরং গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য অতীব প্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ।আমরা জানি, বর্তমান সরকার মতায় এসেছে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক সুষ্ঠু এবং নিরপে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এবং সর্বাধিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েও। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে যে কোন দেশেই সংশিস্নষ্ট সরকার ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে এবং চাইলেই দেশটির ভবিষ্যত কর্মধারাও বদলে দিতে পারে। এই বদলে দেয়ার কথাই আমরা শুনতে পেয়েছি বর্তমান সরকারের কাছ থেকে। দিনবদলের যে সেস্নাগান মানুষকে আশাবাদী করেছে তা কি ক্রমশ ফিকে হতে শুরম্ন করেছে? এরকম একটি প্রশ্ন নিয়েই আজকের এই নিবন্ধ।
আমরা আরও জানি যে, বর্তমান সরকার কিছু মৌলিক প্রশ্নের সমাধানকল্পে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছে। তার মধ্যে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলসহ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে কিছু ইতিহাস সৃষ্টিকারী সিদ্ধানত্ম রয়েছে। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কয়েকজনের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। খুনীদের মধ্যে যারা বিদেশে পলাতক অবস্থায় আছে তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের আদেশ কার্যকর করার প্রক্রিয়াও শুরম্ন হয়েছে বলে আমরা জানি। এরপরেই সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরম্ন করবে বলে শোনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের আদেশ হয়েছে। স্বাধীন বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই এই রায় দিয়েছে। যদিও খ-িতভাবে এই রায় কার্যকর করার কথা বলা হচ্ছে, যার অর্থ হচ্ছে, সংবিধানের যথাস্থানে বিসমিলস্নাহ্ বলবৎ থাকছে। ১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে স্বল্প সময়ের মধ্যে যে সংবিধান প্রণয়ন করেছিল বিশ্বের যে কোন উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনায় সেই সংবিধান ছিল অতি আধুনিক এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখার উজ্জ্বল দৃষ্টানত্মস্বরূপ। আমরা দেখেছি যে, পৃথিবীর যে কোন দেশেই সংবিধান সংশোধন করে তাকে আরও আধুনিক এবং মানুষের জন্য উপকারী করে তোলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে সংবিধানকে কাঁটাছেঁড়া করে তাকে অনাধুনিক এবং মানুষকে নির্যাতন করার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। বাঙালি জাতির এই পশ্চাদগামী হয়ে পথ হাঁটার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করাটা ছিল মোম অস্ত্র। যদিও এই রায় খন্ডিত তারপরও একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হওয়ার ফলে বাংলাদেশে আর কেউ অবৈধভাবে মতা দখল করলেও তা সাংবিধানিকভাবে বৈধতা লাভ করবে না। এতোদিন যাবত এই অবৈধ মতা দখলকে সাংবিধানিকভাবেই বৈধতা দেয়া হয়েছিল এবং মজার ব্যাপার হলো একেকজন বিচারপতিই এইসব অবৈধ দখলদারদের শপথ পাঠ করিয়ে বৈধতা দিয়েছেন।
এসবই সরকারের সাফল্য, এর সঙ্গে যদি যোগ করি খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো, শিল্প-সাহিত্যে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধি, একটি কার্যকর সংসদকে সচল রাখা এবং বিদেশে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করা তাহলে নিঃসন্দেহে সরকারের সাফল্যের তালিকা দীর্ঘই হবে। কিন্তু এই সাফল্যকে ধরে রাখা এবং তাকে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহারের কৌশলটি যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা এই সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কর্মকা-ে একটুও বোঝা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের কর্মকা- দেশব্যাপী যে ভয়ঙ্কর তের জন্ম দিয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে মহাজোট সরকারের বহুদিন সময় লাগবে সন্দেহ নেই। কিন্তু হঠাৎ করে জিয়া আনত্মর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহ্জালাল (রহ:) বিমানবন্দর রাখার পেছনে কোন্ যুক্তি থাকতে পারে সেটি বোধগম্য হলো না। আমরা জানি যে, নাম পরিবর্তনের এই সংস্কৃতি শুরম্ন হয়েছে বিএনপি'র আমলে। চট্টগ্রামে এম এ হান্নান আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম রেখেছিলেন শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে। কিন্তু বিএনপি মতায় এসেই নাম বদলে শাহ্ আমানত আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দর করা হলো। প্রথম কথা হলো, এম এ হান্নান চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে প্রথম বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তারপর জিয়াউর রহমান সেখানে গিয়ে সেনাবাহিনীর একজন মেজর হিসেবে পুনরায় ঘোষণাটি পাঠ করেন। কিন্তু বিএনপি সে ইতিহাস মানে না, তারা নিজেরই সৃষ্ট ইতিহাসে একবার ২৬ শে মার্চ একবার ২৭ শে মার্চ জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানান। স্বাভাবিকভাবেই এম এ হান্নানের নাম তাদের শরীরে বিছুটি লাগার মতো তিক্ততায় ভরা, তাই তারা বদলে এমন একজনের নাম রেখেছে যিনি একজন বাঙালি নন এবং একটি নির্দিষ্ট ধর্মের প্রচারক। ধর্মকে রাজনীতিতে এরকমভাবে ব্যবহারের যে নমুনা বিএনপি শুরম্ন করেছে তাতে আওয়ামী লীগকেও কেন হাত লাগাতে হবে সেটা একটি মিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রশ্ন। সে প্রশ্নে পরে আসছি।
২০০১ সালে মতায় এসে বিএনপি নতুন উদ্যমে শুরম্ন করে নাম বদলের খেলা। বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারের নাম বদলে করা হয় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের নাম বদলে করা হয় ভাসানী নভোথিয়েটার। মজার ব্যাপার হলো ভৈরবে জাতীয় চার নেতার একজন সৈয়দ নজরম্নল ইসলামের নামে সেতুর নাম বদলে দেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান। সেই সময় এই অর্থমন্ত্রী দম্ভো করে বলেছিলেন, 'ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার, কোথাকার কোন নজরম্নল তার নামে সেতু হবে কেন?' আজকে আমাদের সেই অর্থমন্ত্রী এই পৃথিবীতে নেই, আমি জানি না, তিনি কতদিন মানুষের মনে থাকবেন, কিন্তু তার এই দম্ভোক্তি কিন্তু মানুষ দীর্ঘদিন মনে রাখবে। আমি যে কথা বলতে চাইছি তাহলো, জনগণের স্মৃতিশক্তিকে যতই স্বল্পকালীন মনে করা হোক না কেন, মানুষ কিন্তু ঠিকই সরকারের কর্মকা-কে মনে রাখে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে সেই স্মৃতিনির্ভর হয়েই ভোটকেন্দ্রে যায়। বিএনপি-জামায়াত না হয় নির্বাচনের ফলাফলকে তাদের দিকে নেয়ার জন্য নানা কারসাজি করে মতায় যাওয়ার পথ করে রেখেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের তো সেই গুণ নেই, তাদের স্বাভাবিকভাবেই মেয়াদ শেষে জনগণের মুখোমুখি হতে হবে, বিএনপি জনগণকে তোয়াক্কা না করে টিকে থাকতে পারে, আওয়ামী লীগ কি সেটা পারবে?
আজকে আওয়ামী লীগ জিয়া আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম বদল করে হযরত শাহ্জালাল (র) বিমানবন্দর করেছে। হযরত শাহ্জালাল (র)-এর প্রতি সমসত্ম সম্মান রেখেই বলছি, তিনি প্রথমত একজন বাঙালি নন, তিনি একটি নির্দিষ্ট ধর্মবিশ্বাসীদের ধর্মপ্রচারক হিসেবে বিখ্যাত। তাঁকে যেভাবে বাঙালি মনে রেখেছে তা শুধু অভাবনীয় নয়, অচিনত্মনীয়ও বটে। পৃথিবীর আর কোন দেশেই এভাবে একজন বিদেশী ধর্মপ্রচারককে সে দেশের জনগণ মনে রাখেনি, যেমনটি বাংলাদেশে বিদেশী ধর্মপ্রচারকদের মনে রেখেছে বাঙালি। ধর্ম আসলে এমনই একটি বিষয়, যাকে মানুষ মনে স্থান দেয়, কিন্তু যখনই ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনে তখনই বিপত্তি ঘটে এবং হানাহানি, মারামারি ও কাটাকাটি শুরম্ন হয়। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই দলটি একটি ধর্মনিরপে রাজনৈতিক দল। কিন্তু কার্যত আমরা দেখলাম যে, আওয়ামী লীগও ধর্মকে ব্যবহার করল জিয়া বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধানত্ম নিয়ে। আমরা এতদিন ধরে জিয়া আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরে ইংরেজি ও বাংলার সঙ্গে আরবি ভাষা ব্যবহারের বিষয়ে বার বার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেদিকে কেউ নজর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি।
প্রথমত, এই মুহূর্তে এই নাম পরিবর্তনের রাজনীতির কোন প্রয়োজন ছিল না। ছিল না কারণ, মহাজোট সরকার মতায় এসেছে দিনবদলের কথা বলে, নাম বদলের কোন এজেন্ডা তাদের ছিল না। এমনিতেই জিয়া আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরের অবস্থানগত দিক বিবেচনায় আনলে ঢাকা শহরের খুব কাছেই এতখানি জায়গাজুড়ে এই বিমানবন্দর রাখাটা নানা দিক থেকে সমীচীন নয়। বিশেষ করে আজকে ঢাকার যে দুরবস্থা তার অনেকটাই নিরসন সম্ভব যদি আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরটি সরিয়ে নেয়া হয় ঢাকা থেকে বেশ কিছুটা দূরের কোন জায়গায়। আমরা এরই মধ্যে জেনেছি যে, ময়মনসিংহের ত্রিশালে একটি আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধানত্ম সরকার নিয়েছে। এটি নির্মিত হলে এমনিতেই জিয়া বিমানবন্দরের কার্যকারিতা থাকত না এবং ক্রমশ এই বিমানবন্দরকে বন্ধ করে দিয়ে এখানে সচিবালয় সরিয়ে আনার মাধ্যমে ঢাকা শহরের জানযট নিরসনে ব্যাপক ও কার্যকর পদপে গ্রহণ করা যেত। কিন্তু তা না করে হঠাৎ এই নাম পরিবর্তন নতুন করে যে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিল তা সামাল দেয়ার মতা সরকারের আদৌ আছে কি না তা বিবেচনার বিষয়। তাছাড়া সরকারের সামনে নানাবিধ গুরম্নত্বপূর্ণ এজেন্ডা রয়েছে যা বাসত্মবায়নের জন্য চার বছর খুব বেশি সময় নয়। অবিলম্বে সেগুলো শুরম্ন করতে হবে সরকারকে। নইলে ২০১৪-তে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার মতো আত্মবল আওয়ামী লীগের থাকবে না। সে েেত্র জনগণের সামনে নিজেদের বিএনপির কাতারভুক্ত করার কী অর্থ থাকতে পারে? বিএনপি করেছে, আমরাও করব এরকম নীতিতে এগুলে জনগণ যদি ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে যা করেছে ২০১৪ সালে যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গেও ঠিক একই আচরণ করে, তখন?
সরকার বলছে যে, পঞ্চম সংশোধনীর পর একজন সামরিক শাসক যার সমসত্ম কর্মকা- আদালতের নির্দেশে অবৈধ ঘোষিত হয়েছে তার নামে দেশের বৃহত্তম আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরটি থাকা উচিত নয়। আমরা মেনে নিচ্ছি সেকথা, কিন্তু সেটি তো আরও কৌশলে এবং উদারতার সঙ্গে করা যেত, নাকি? কেন এখানে বিএনপির চট্টগ্রাম বিমানবন্দর নিয়ে ধর্মকে তুরম্নপের তাস হিসেবে ব্যবহারের রীতি অনুসরণ করে ঢাকা বিমানবন্দরের েেত্রও আওয়ামী লীগকেও ধর্মকে ব্যবহার করতে হলো? আমি জানি না, সরকারের নীতিনির্ধারক মহল কি বিষয়টি নিয়ে একবারও ভেবেছে কি না, ২০০৮ এর নির্বাচনে জনগণ রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন যদি নির্বাচিত সরকারটি ঠিক একই কাজ করে তাহলে জনগণের যাওয়ার আর কোন জায়গা আসলে থাকে না। আমি সরকারের কাছে করজোড়ে আবেদন জানাতে চাই, দয়া করে জনগণকে এমন কোন অবস্থানে ঠেলে দেবেন না যেখানে দাঁড়িয়ে জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোট এবং মহাজোটকে এক কাতারে নামিয়ে এনে ২০১৪-তে ভোট দেয়ার সিদ্ধানত্ম গ্রহণের সুযোগ খুঁজে পায়। এরকমটি হলে, বাংলাদেশে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা সামাল দেয়া আসলে কোন সরকারের পইে আর সম্ভব হবে না। বহু চেষ্টার পর আজ আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকার দেশকে আফগানিসত্মান, সোমালিয়া কিংবা সুদান হওয়া থেকে বাঁচিয়েছে, কিন্তু ২০১৪-তে যদি আবার কোন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক শক্তি মতায় যায় তাহলে আর দেখতে হবে না, রাষ্ট্র তখন ধর্মের টুপি, ধর্মের খড়ম, ধর্মের আলখালস্না গায়ে পড়ে ধর্মের অস্ত্রের ভাষাতেই কথা বলবে। ঈশ্বর না করম্নন, সেদিন যেন আমাদের দেখতে না হয়।
ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার। ২০১০।
masudbhatti@hotmail.com
No comments