সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন হলে সঙ্ঘাত হবেঃ এরশাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে নির্বাচন হতেই হবে। সেই নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
তা না হলে দেশে সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কিন্তু সেটি আমরা চাই না। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগপন্থী নই। তাদের সাথে আমার আদর্শের কোনো মিল নেই। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে যাওয়ার পর আমার দল ভাঙার ও দলীয় লাঙল প্রতীক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে। বর্তমানে মহাজোটে থেকেও জাতীয় পার্টি লাভবান হয়নি। মহাজোটে গিয়ে আসন কমে তিগ্রস্ত হয়েছে। জাতীয় পার্টি সব সময় এককভাবে নির্বাচন করেই লাভবান হয়েছে। তাই আর কোনো জোটে নয়Ñ আগামীতে এককভাবেই নির্বাচন করে দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতে চাই।

গতকাল বনানীর কার্যালয়ের মিলনায়তনে জাতীয় পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। পার্টির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ সিদ্দিকীর উদ্যোগে বাসাইল উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান মন্টুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক নেতাকর্মী এরশাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। যোগদানকারীদের মধ্যে ছিলেন আবদুল কাদের খান, বেলায়েত হোসেন খান, আ: বারেক মিয়া, মঞ্জুরুল হক, অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম, নাহিদ খান, আলমগীর মিয়া, মেরাজ খান, সাইফুল ইসলাম, মুনায়েম খান প্রমুখ।

বাসাইল উপজেলা জাপার সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম রফিকুল ইসলামের  (আলো) সভাপতিত্বে এ যোগদান অনুষ্ঠানে পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ সিদ্দিকী, যোগদানকারী নেতা সাইফুল ইসলাম খান মন্টু, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এ সময় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো: আবুল কাশেম, ব্রি. জেনারেল (অব:) কাজী মাহমুদ হাসান, জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু, আহসান হাবিব লিংকন, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সুনীল শুভরায়, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোস্তফা জামাল বেবী, ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা মান্নান, খন্দকার আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরু, কেন্দ্রীয় নেতা আবু সৈয়দ, রেজাউল করিম, হাফিজ উদ্দিন মাস্টার, ছাত্রসমাজের সভাপতি মিজানুর রহমান হিমু, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম রিপন উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ।

সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ পার্টিতে যোগদানকারীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশে আজ দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে। প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে সমাজে চরম অবয় নেমে এসেছে। টাঙ্গাইলের ধর্ষিত মেয়েটির আহাজারি বিবেককে ব্যথিত করে তোলে। নারী ধর্ষণ, নারীদের ওপর এসিড সন্ত্রাস বেড়েই চলেছে। অথচ এর কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। দেশে দুর্নীতি মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টির আমলে এমন অবস্থা ছিল না।  এরশাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী জানুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রার জন্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। তবে সেই নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, আগামীতে জাতীয় পার্টি ছাড়া কেউ সরকার গঠন করতে পারবে না।

জাতীয় পার্টি ইজ অ্যা বিগ ফ্যাক্টর ইন পলিটিকস। অনেকে বলেনÑ সকাল-বিকেল আমি কথার পরিবর্তন করি। এটি সঠিক নয়। আমি সৈনিক। আর সৈনিকেরা কথার নড়চড় করে না।

তিনি বলেন, মঞ্জুর হত্যার ১৪ বছর ৯ মাস পর ৯৫ সালে আমাকে খুনি প্রমাণ করতে মামলা দেয়া হয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্দেশনাক্রমে এই মামলা বিলম্বিত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে আট হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অথচ আমার একটি মামলাও প্রত্যাহার করেনি।
       

No comments

Powered by Blogger.