বিএসএফের আগ্রাসী তৎপরতায় মুহুরী চরে চাষাবাদ করতে পারছেন না বাংলাদেশীরা by আবুল হাসান

সীমান্তের মুহুরী নদীর চরে বাংলাদেশের ৯২ একরের অধিক জমি দখলে রাখতে বিএসএফের অপতৎপরতায় বাংলাদেশীরা সেখানে চাষাবাদ করতে পারছে না।
অপর দিকে পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরের পাশে কহুয়া নদীর তীর সংরণে বাংলাদেশকে ব্লক ফেলতে দিচ্ছে না বিএসএফ। বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুহুরী চরে ৯২ একরের অধিক জমি দখলে রাখতে ভারত বরাবরই জোর খাটিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের দখল বজায় আছে ৩৬ একর জমিতে। ভারতের দখলে রয়েছে ৯ একর আর অমীমাংসিত হিসেবে প্রায় ৪৮ একর জমি রয়েছে বলে বিজিবি জানায়। ভারতের আগ্রাসী মনোভাবে বাংলাদেশের জমির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন সীমান্তবর্তী বাংলাদেশেীরা।

নিজকালিকাপুর সীমান্তের ২১৫৯ পিলার থেকে স্থলবন্দরের ২১৬০ পিলার পর্যন্ত মাঝখানে প্রায় ৪৭টি সাব-পিলার নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৯২ একর সম্পত্তি বিরোধপূর্ণ মুহুরীর চর হিসেবে পরিচিত। অথচ ১৮৯২ সালে ব্রিটিশ সরকারের তৈরিকৃত (সিএস) মৌজা ম্যাপে এ চরটি বাংলাদেশের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। এমনকি ১৯৩০ সালে বিলোনিয়া রেলস্টেশন নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তি (আংশিক) এ বিরোধপূর্ণ মুহুরীর চরের মধ্যে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কহুয়া নদীর রেলব্রিজ থেকে বাঁশপদুয়া ব্রিজ পর্যন্ত ৬০০ মিটার জায়গায় ব্লক ফেলার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর নদীতে ফেলার জন্য তৈরি করা হয় কয়েক লাখ ব্লক। কিন্তু ভারতের বাধার কারণে এসব ব্লক কাজে লাগিয়ে নদীর বাঁধ রক্ষা করা যাচ্ছে না বছরের পর বছর ধরে। বাংলাদেশের ভেতরে কিছু ব্লক বিজিবি ফেলতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বিজিবির মজুমদারহাট ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আবুল খায়ের গত ১৫ জানুয়ারি নয়া দিগন্তকে জানান, বাংলাদেশ অংশ থেকে ব্লক ফেলা শুরু হয়েছে, তবে সামনে কী হয় বলা যাচ্ছে না। যৌথ নদী কমিশনের একাধিক বৈঠকে ব্লক ফেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর ৯ মে বাউরপাথর সীমান্তে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বৈঠকে ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ব্লক ফেলতে দেয়া হবে না। ভারতের বিলোনিয়া ডাকবাংলোতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে ভারত জানায়, মুহুরীর চর নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা বিলোনিয়া শহর রাবাঁধ নির্মাণ করার অনুমতি দেবে না। অন্য দিকে ভারতের অংশে হিঙ্গুলীছড়ার ভাঙনে বাংলাদেশের বাউরখুমা, বাউরপাথর, দুবলাচাঁদ এলাকা তিগ্রস্ত হওয়ায় ভাঙনটি রোধের দাবি জানানো হলে ভারতের প থেকে অস্বীকৃতি জানানো হয়। জানা গেছে, নিজকালিকাপুর সীমান্তে অর্ধলক্ষাধিক ব্লক ১৯৮৭ সাল থেকে পড়ে আছে। ভারত এ ব্লকগুলোও মুহুরী নদীতে ফেলতে দিচ্ছে না।
       

No comments

Powered by Blogger.