প্রথম আলো বর্ষসেরা বই-১৪১৮ পুরস্কার পেয়েছে দুটি বই—সৃজনশীল শাখায় ওয়াসি আহমেদের কালাশনিকভের গোলাপ এবং মননশীল শাখায় সুফি মুস্তাফিজুর রহমান ও হাবিবুল্লা পাঠানের উয়ারী-বটেশ্বর: শেকড়ের সন্ধানে। পুরস্কৃত বই নিয়ে দুজন লেখকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাজল রশীদ -সাক্ষাৎকার
ওয়াসি আহমেদ কালাশনিকভের গোলাপ-এ একজন কথাসাহিত্যিক হিসেবে আপনার প্রবণতা কতটা উপস্থাপিত হয়েছে? —বাস্তবতাকে বিভিন্ন মাত্রা থেকে নেড়েচেড়ে দেখার চেষ্টা করেছি। আমাদের রাজনৈতিক-সামাজিক-প্রাত্যহিক জীবনকে উপরিতল থেকে দেখলে তাকে অতিমাত্রায় সরলীকরণ করা হয়।
একজন লেখকের কাজ সেই সব জায়গাকে ইন্টারপেট করা, শিল্পের কাজ হচ্ছে প্রতিটি বস্তুকে ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে অর্থময়তা খুঁজে ফেরা। লেখক যদি পাঠকের মনে প্রশ্ন সঞ্চার করতে পারেন, সেটাকে সার্থকতা বলে আমি মনে করি।
কবিতার যেমন বাঁকবদল হয়েছে, ছোটগল্পে তেমন হয়নি; গল্প অনেক বৃত্তবন্দী—এ রকম অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। আপনি কী বলেন?
—অভিযোগটা সত্য নয়। কেননা, স্টোরি টেলিংয়ের ধরনটা বদলে গেছে। ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’—এখান থেকে ছোটগল্প বেরিয়ে আসছে। ছোটগল্পের পরিবর্তনটা কবিতার মতো দৃশ্যমান নয়। আঙ্গিকগত অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গল্প বলাটাও বলা, আবার বলতে গিয়ে না বলে, আড়ালে রেখে বলাটাও বলা—আসলে ভঙ্গিটাই মুখ্য। এমনকি প্রশ্ন দিয়েও স্টোরি টেলিং হতে পারে।
সিরিয়াস ও জনপ্রিয় বলে সাহিত্যকে ভাগ করার প্রচলন আছে। এ নিয়ে তর্কও রয়েছে। এরা কি পরস্পরবিরোধী, নাকি পরিপূরক?
—তর্ক থাকবেই। সিরিয়াস কিংবা জনপ্রিয়—এসব ভেবে লেখক লেখেন না। তিনি লেখেন নিজের জন্য, নিজেকে মুক্ত করার জন্য। মার্কেজ, য়োসা, পামুক বহু আগেই জনপ্রিয় হয়েছেন, নোবেল পুরস্কার তাঁদের জনপ্রিয় করেনি। সুতরাং, সিরিয়াস কিংবা জনপ্রিয় কি না তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো লেখার ভঙ্গি, লেখার কায়দা।
সুফি মোস্তাফিজুর রহমান
উয়ারী-বটেশ্বর: শেকড়ের সন্ধানে বইটি আপনি ও হাবিবুল্লাহ পাঠান—এই দুজনের অনুসন্ধান-লব্ধ গবেষণার ফসল। এই প্রত্নস্থান সম্পর্কে আপনি কী করে আগ্রহী হলেন?
—১৯৩০ সাল থেকে উয়ারী-বটেশ্বর নিয়ে সম্পূর্ণ নিজের আগ্রহে কাজ করেছেন মোহাম্মদ হানীফ পাঠান। সেই সূত্র ধরেই পরবর্তী সময়ে তাঁর ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠান এই কাজকে এগিয়ে নেন। কিন্তু তখন তাঁদের সেই কাজ কেউ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেননি। ১৯৮৯ সালে দিলীপকুমার চক্রবর্তী এটা নিয়ে লেখালেখি করেন। তাঁর লেখা থেকেই, আরও অনেকের মতো বিষয়টি আমার দৃষ্টি কাড়ে। আমি জায়গাটি ঘুরে দেখি এবং হাবিবুল্লাহ পাঠানের সঙ্গে এই সাইটে কাজ শুরু করি।
উয়ারী-বটেশ্বরে সরেজমিনে অনুসন্ধানের পর একে গ্রন্থরূপ দেওয়ার পরিকল্পনা কীভাবে এল?
—কোনো প্রত্নস্থান খননের ফলাফল জরিপ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করতে সাধারণত ১০-১৫ বছর সময় লেগে যায়। কিন্তু আমরা কাজ চলাকালেই অনেক কিছু প্রকাশ করেছি। মিড লেভেলে কাজের ফলাফল জানানোর লক্ষ্যে আমরা ২০০৫ সালে একটি বই লেখার কাজ শুরু করি। অবশেষে ২০১২ সালে এসে বইটি প্রকাশিত হলো।
বইটি আগামী দিনের প্রত্ন-গবেষকদের কীভাবে সহায়তা করবে বলে মনে করেন?
—নানাভাবে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের ইতিহাস নতুন করে লেখা হবে। দেশ-বিদেশে উয়ারী-বটেশ্বরের স্বীকৃতি মিলছে। উপমহাদেশে দ্বিতীয় নগরসভ্যতার অন্যতম প্রতিনিধি হলো উয়ারী-বটেশ্বর, যা নিয়ে অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজের বইয়ে লেখা হয়েছে। আমাদের পাঠ্যপুস্তকেও উয়ারী-বটেশ্বর নিয়ে লেখা হয়েছে। এসবই নতুন গবেষকদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।
কবিতার যেমন বাঁকবদল হয়েছে, ছোটগল্পে তেমন হয়নি; গল্প অনেক বৃত্তবন্দী—এ রকম অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। আপনি কী বলেন?
—অভিযোগটা সত্য নয়। কেননা, স্টোরি টেলিংয়ের ধরনটা বদলে গেছে। ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’—এখান থেকে ছোটগল্প বেরিয়ে আসছে। ছোটগল্পের পরিবর্তনটা কবিতার মতো দৃশ্যমান নয়। আঙ্গিকগত অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গল্প বলাটাও বলা, আবার বলতে গিয়ে না বলে, আড়ালে রেখে বলাটাও বলা—আসলে ভঙ্গিটাই মুখ্য। এমনকি প্রশ্ন দিয়েও স্টোরি টেলিং হতে পারে।
সিরিয়াস ও জনপ্রিয় বলে সাহিত্যকে ভাগ করার প্রচলন আছে। এ নিয়ে তর্কও রয়েছে। এরা কি পরস্পরবিরোধী, নাকি পরিপূরক?
—তর্ক থাকবেই। সিরিয়াস কিংবা জনপ্রিয়—এসব ভেবে লেখক লেখেন না। তিনি লেখেন নিজের জন্য, নিজেকে মুক্ত করার জন্য। মার্কেজ, য়োসা, পামুক বহু আগেই জনপ্রিয় হয়েছেন, নোবেল পুরস্কার তাঁদের জনপ্রিয় করেনি। সুতরাং, সিরিয়াস কিংবা জনপ্রিয় কি না তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো লেখার ভঙ্গি, লেখার কায়দা।
সুফি মোস্তাফিজুর রহমান
উয়ারী-বটেশ্বর: শেকড়ের সন্ধানে বইটি আপনি ও হাবিবুল্লাহ পাঠান—এই দুজনের অনুসন্ধান-লব্ধ গবেষণার ফসল। এই প্রত্নস্থান সম্পর্কে আপনি কী করে আগ্রহী হলেন?
—১৯৩০ সাল থেকে উয়ারী-বটেশ্বর নিয়ে সম্পূর্ণ নিজের আগ্রহে কাজ করেছেন মোহাম্মদ হানীফ পাঠান। সেই সূত্র ধরেই পরবর্তী সময়ে তাঁর ছেলে হাবিবুল্লাহ পাঠান এই কাজকে এগিয়ে নেন। কিন্তু তখন তাঁদের সেই কাজ কেউ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেননি। ১৯৮৯ সালে দিলীপকুমার চক্রবর্তী এটা নিয়ে লেখালেখি করেন। তাঁর লেখা থেকেই, আরও অনেকের মতো বিষয়টি আমার দৃষ্টি কাড়ে। আমি জায়গাটি ঘুরে দেখি এবং হাবিবুল্লাহ পাঠানের সঙ্গে এই সাইটে কাজ শুরু করি।
উয়ারী-বটেশ্বরে সরেজমিনে অনুসন্ধানের পর একে গ্রন্থরূপ দেওয়ার পরিকল্পনা কীভাবে এল?
—কোনো প্রত্নস্থান খননের ফলাফল জরিপ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করতে সাধারণত ১০-১৫ বছর সময় লেগে যায়। কিন্তু আমরা কাজ চলাকালেই অনেক কিছু প্রকাশ করেছি। মিড লেভেলে কাজের ফলাফল জানানোর লক্ষ্যে আমরা ২০০৫ সালে একটি বই লেখার কাজ শুরু করি। অবশেষে ২০১২ সালে এসে বইটি প্রকাশিত হলো।
বইটি আগামী দিনের প্রত্ন-গবেষকদের কীভাবে সহায়তা করবে বলে মনে করেন?
—নানাভাবে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের ইতিহাস নতুন করে লেখা হবে। দেশ-বিদেশে উয়ারী-বটেশ্বরের স্বীকৃতি মিলছে। উপমহাদেশে দ্বিতীয় নগরসভ্যতার অন্যতম প্রতিনিধি হলো উয়ারী-বটেশ্বর, যা নিয়ে অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজের বইয়ে লেখা হয়েছে। আমাদের পাঠ্যপুস্তকেও উয়ারী-বটেশ্বর নিয়ে লেখা হয়েছে। এসবই নতুন গবেষকদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।
No comments