বাজেট ঘাটতি মেটাতে বন্ড ছেড়ে ৫০ কোটি ডলার সংগ্রহের চেষ্টা বৈদেশিক ঋণ ছাড় কম হওয়ায় অর্থ সঙ্কট by কাওসার রহমান
সরকার এবার বাজেট ঘাটতি মেটাতে সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে বৈদেশিক ঋণ নিতে চাচ্ছে। মেয়াদের শেষ বছরে এসে আশানুরূপ বৈদেশিক সাহায্য না পাওয়ায় এখন উন্নয়ন কর্মকা- এগিয়ে নিতেই সার্বভৌম বন্ডের পথে যেতে চাচ্ছে সরকার।
এ লক্ষ্যে ৫০ কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ নেয়ার প্রক্রিয়া আবারও শুরু করেছে।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসেও সরকার সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। ওই সময়ে লেনদেনের ভারসাম্য নিয়ে চাপে থাকা সরকার আইএমএফের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এ অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিল। এ লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। কমিটি সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের সুপারিশ করার পাশাপাশি এর প্রভাব সম্পর্কেও সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা তখন এ বন্ডের অর্থ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ এবং মুদ্রা ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছিল।
সমালোচনার মুখে ওই সময়ে এই ঋণ গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হয়নি সরকার। বিশেষ করে ঠিক ওই সময়েই আইএমএফ লেনদেন ভারসাম্য মেটাতে ১০০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করলে, সরকারের সার্বভৌম বন্ড ছাড়ার উদ্যোগে ভাটা পড়ে। ফলে ওই প্রক্রিয়াটি তখন অনেকটাই স্থগিত হয়ে যায়।
জানা যায়, সরকার সে সুযোগটিই এখন কাজে লাগাতে চাচ্ছে। গত দুই অর্থবছর ধরেই সরকার বাজেট ঘাটতির বৈদেশিক অংশ মেটাতে পারছে না। ওই অংশ মেটাতে হচ্ছে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। এতে সরকারের ব্যাংক ঋণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। এবারও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাজেটে বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তির যে লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে, তা অর্জিত হচ্ছে না। ফলে বাজেট কাটছাট করে বৈদেশিক সাহায্যের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে।
চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কাটছাট করে ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হচ্ছে। গত ২০১১-১২ অর্থবছরেও বৈদেশিক সাহায্যের লক্ষ্যমাত্রা তিন হাজার কোটি টাকা কাটছাট করা হয়েছিল।
এখন স্থানীয়ভাবে এ ঘাটতি মেটাতে হলে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়ে যাবে। ফলে সরকারকে আবারও সমালোচনা মুখে পড়তে হবে। তাই এই সমালোচনা এড়াতেই সরকার সার্বভৌম বন্ড থেকে বৈদেশিক ঋণ নিতে যাচ্ছে। এতে বৈদেশিক সাহায্যের ঘাটতি যেমন মিটে যাবে, তেমনি সার্বিক বাজেট ঘাটতিও কমবে।
জানা যায়, সরকারী গ্যারান্টিতে সভরেন (সার্বভৌম) বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে ঋণ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি নীতিমালা প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ডেপুটি গবর্নরের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি কমিটির প্রথম বৈঠক বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে তারা বন্ডের মেয়াদ, সুদের হার, পরিশোধ পদ্ধতি, কারা কিনতে পারবেন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
দেশের আপৎকালীন ব্যয় মেটানোর মতো পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা থাকার পরেও কেন সরকার চড়া সুদে বন্ড ছেড়ে বৈদেশিক ঋণ নিচ্ছে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বন্ডের জন্য বার্ষিক অন্তত পাঁচ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করতে হবে। আর পাঁচ বছর ধরে এ বন্ডের জন্য সুদ দিয়ে যেতে হবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০ কোটি ডলার সংগ্রহ করা হলে দেশের দায়-দেনা বেড়ে যাবে। এতে বাংলাদেশের দেনা জিডিপির প্রায় দশমিক চার শতাংশ থেকে দশমিক ছয় শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এটা মুদ্রা বাজারের জন্যও ঝুকিপূর্ণ হতে পারে। সেই সঙ্গে রয়েছে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা।
তাছাড়া পাঁচ শতাংশ সুদে বন্ড ছেড়ে সরকার অর্থ পাবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বাংলাদেশ এই প্রথম আন্তর্জাতিক বন্ড বাজারে যাওয়ার উদ্যোগ নিলেও ভারত, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে এ বন্ড ছেড়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে একাধিকবার অর্থ সংগ্রহ করেছে। তাদের সুদের হারও অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কা সর্বশেষ ২০১১ সালে ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ সুদে এক শ’ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে। দশ বছরমেয়াদী এ বন্ডে অবশ্য শ্রীলঙ্কা বেশ সাড়া পেয়েছে। অন্যদিকে ভারত সর্বশেষ ১০ বছরমেয়াদী যে বন্ড ছেড়েছে তাতে সুদের হার হচ্ছে নয় শতাংশ।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসেও সরকার সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। ওই সময়ে লেনদেনের ভারসাম্য নিয়ে চাপে থাকা সরকার আইএমএফের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এ অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিল। এ লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। কমিটি সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের সুপারিশ করার পাশাপাশি এর প্রভাব সম্পর্কেও সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা তখন এ বন্ডের অর্থ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ এবং মুদ্রা ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছিল।
সমালোচনার মুখে ওই সময়ে এই ঋণ গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হয়নি সরকার। বিশেষ করে ঠিক ওই সময়েই আইএমএফ লেনদেন ভারসাম্য মেটাতে ১০০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করলে, সরকারের সার্বভৌম বন্ড ছাড়ার উদ্যোগে ভাটা পড়ে। ফলে ওই প্রক্রিয়াটি তখন অনেকটাই স্থগিত হয়ে যায়।
জানা যায়, সরকার সে সুযোগটিই এখন কাজে লাগাতে চাচ্ছে। গত দুই অর্থবছর ধরেই সরকার বাজেট ঘাটতির বৈদেশিক অংশ মেটাতে পারছে না। ওই অংশ মেটাতে হচ্ছে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। এতে সরকারের ব্যাংক ঋণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। এবারও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাজেটে বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তির যে লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে, তা অর্জিত হচ্ছে না। ফলে বাজেট কাটছাট করে বৈদেশিক সাহায্যের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে।
চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কাটছাট করে ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হচ্ছে। গত ২০১১-১২ অর্থবছরেও বৈদেশিক সাহায্যের লক্ষ্যমাত্রা তিন হাজার কোটি টাকা কাটছাট করা হয়েছিল।
এখন স্থানীয়ভাবে এ ঘাটতি মেটাতে হলে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়ে যাবে। ফলে সরকারকে আবারও সমালোচনা মুখে পড়তে হবে। তাই এই সমালোচনা এড়াতেই সরকার সার্বভৌম বন্ড থেকে বৈদেশিক ঋণ নিতে যাচ্ছে। এতে বৈদেশিক সাহায্যের ঘাটতি যেমন মিটে যাবে, তেমনি সার্বিক বাজেট ঘাটতিও কমবে।
জানা যায়, সরকারী গ্যারান্টিতে সভরেন (সার্বভৌম) বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে ঋণ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি নীতিমালা প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ডেপুটি গবর্নরের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি কমিটির প্রথম বৈঠক বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে তারা বন্ডের মেয়াদ, সুদের হার, পরিশোধ পদ্ধতি, কারা কিনতে পারবেন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
দেশের আপৎকালীন ব্যয় মেটানোর মতো পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা থাকার পরেও কেন সরকার চড়া সুদে বন্ড ছেড়ে বৈদেশিক ঋণ নিচ্ছে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বন্ডের জন্য বার্ষিক অন্তত পাঁচ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করতে হবে। আর পাঁচ বছর ধরে এ বন্ডের জন্য সুদ দিয়ে যেতে হবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সার্বভৌম বন্ড ছেড়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০ কোটি ডলার সংগ্রহ করা হলে দেশের দায়-দেনা বেড়ে যাবে। এতে বাংলাদেশের দেনা জিডিপির প্রায় দশমিক চার শতাংশ থেকে দশমিক ছয় শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এটা মুদ্রা বাজারের জন্যও ঝুকিপূর্ণ হতে পারে। সেই সঙ্গে রয়েছে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা।
তাছাড়া পাঁচ শতাংশ সুদে বন্ড ছেড়ে সরকার অর্থ পাবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বাংলাদেশ এই প্রথম আন্তর্জাতিক বন্ড বাজারে যাওয়ার উদ্যোগ নিলেও ভারত, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে এ বন্ড ছেড়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে একাধিকবার অর্থ সংগ্রহ করেছে। তাদের সুদের হারও অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কা সর্বশেষ ২০১১ সালে ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ সুদে এক শ’ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে। দশ বছরমেয়াদী এ বন্ডে অবশ্য শ্রীলঙ্কা বেশ সাড়া পেয়েছে। অন্যদিকে ভারত সর্বশেষ ১০ বছরমেয়াদী যে বন্ড ছেড়েছে তাতে সুদের হার হচ্ছে নয় শতাংশ।
No comments