ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা-মৃত্যুদণ্ডের বদলে আমৃত্যু জেলের পক্ষে বার্মা কমিশন
ভারতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সুপারিশ করেছে বিচারপতি জে এস বার্মা কমিটি। সাবেক প্রধান বিচারপতি জগদীশ শরণ (জে এস) বার্মার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটির মতে, ধর্ষণের অপরাধে কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে 'পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ'।
একইভাবে লিঙ্গচ্ছেদও সাজা হতে পারে না। ভারতীয় সংবিধান কারো অঙ্গচ্ছেদের অনুমতি দেয় না। এসবের পরিবর্তে প্রশাসন আরো সক্রিয় হলে অপরাধ কমানো যাবে বলে মনে করে কমিটি।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা ৬৩০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
বার্মা কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আর পি এন সিং। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি জানান, শিগগির প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে পাঠানো হবে। পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই কিছু ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে জনমত জোরালো হয়। প্রবল আন্দোলনের মুখে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধসংক্রান্ত আইন সংশোধনের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতে ওই কমিটি গঠন করে সরকার। ওই গণধর্ষণের শিকার ২৩ বছরের তরুণী ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ভারতের ২৭তম প্রধান বিচারপতি বার্মা ছাড়া কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি লেইলা সেথ ও সাবেক সলিসিটর জেনারেল গোপাল সুব্রামনিয়াম।
ইচ্ছাকৃতভাবে খুনের অভিসন্ধি পাওয়া যায়নি, অথচ নির্যাতনের শিকার নারীর মৃত্যু হয়েছে_এমন ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় একটি উপধারা যোগ করার সুপারিশ করেছে কমিটি। ওই উপধারায় ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু এবং ধর্ষণজনিত কারণে স্থায়ীভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অক্ষম (ভেজিটেটিভ স্টেট) অবস্থায় চলে যাওয়ার ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নূ্যনতম ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ আমৃত্যু কারাদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে।
কেবল ধর্ষণ নয়, সার্বিকভাবে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে আরো সক্রিয় হতে বলেছে কমিটি। প্রত্যক্ষ যৌন হয়রানির পাশাপাশি ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা, ইশারা ও আচার-আচরণকেও যৌন নির্যাতনের আওতায় এনে কঠোর সাজার সুপারিশ করা হয়েছে। বিচারপতি বার্মার বক্তব্য, 'আজ যারা ইভ টিজিং করছে, কাল তারাই ধর্ষণ করতে পারে। তাই এ ধরনের মানসিক প্রবণতা অঙ্কুরেই বিনাশ করা জরুরি।'
১৬ বছরের অপরাধীকে প্রাপ্তবয়স্ক ধরার ব্যাপারে সায় দেয়নি কমিটি। বিচারপতি সুব্রামনিয়ামের বক্তব্য, 'একজন কিশোর যদি ১৬ বছরেই অপরাধী হয়ে ওঠে, সমাজ তার দায় এড়াতে পারে না।' দিল্লির ওই গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের একজন নিজেকে নাবালক বলে দাবি করেছে। অথচ পুলিশের দাবি, ঘটনার দিন তার পাশবিকতার মাত্রাই ছিল সবচেয়ে বেশি। এ অবস্থায় অপরাধীর বয়স কমানোর দাবি ওঠে।
আইন সংশোধনের চেয়ে বার্মা কমিটি বেশি গুরুত্ব দিয়েছে পুলিশ প্রশাসনের মানসিকতার ওপর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হতে পারে। পুলিশি ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর জোর দিতে বলেছে কমিটি। ধর্ষণের অভিযোগ না নেওয়া এবং তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিক্ষায় নারী ও শিশুদের প্রতি বৈষম্য দূর করতেই হবে। ধর্ষণ থেকে বাঁচতে কোনো নারী যদি কাউকে খুন করেন, সেটা তাঁর আত্মরক্ষার অধিকার বলে স্বীকৃত হতে হবে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে নিম্ন আদালতের ওপর উচ্চ আদালতের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো দরকার বলেও মনে করে কমিটি। কারো বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হলেই তার ভোটে দাঁড়ানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত। খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, জিনিউজ।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা ৬৩০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
বার্মা কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আর পি এন সিং। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি জানান, শিগগির প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে পাঠানো হবে। পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই কিছু ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় দেশব্যাপী ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে জনমত জোরালো হয়। প্রবল আন্দোলনের মুখে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধসংক্রান্ত আইন সংশোধনের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতে ওই কমিটি গঠন করে সরকার। ওই গণধর্ষণের শিকার ২৩ বছরের তরুণী ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ভারতের ২৭তম প্রধান বিচারপতি বার্মা ছাড়া কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি লেইলা সেথ ও সাবেক সলিসিটর জেনারেল গোপাল সুব্রামনিয়াম।
ইচ্ছাকৃতভাবে খুনের অভিসন্ধি পাওয়া যায়নি, অথচ নির্যাতনের শিকার নারীর মৃত্যু হয়েছে_এমন ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় একটি উপধারা যোগ করার সুপারিশ করেছে কমিটি। ওই উপধারায় ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু এবং ধর্ষণজনিত কারণে স্থায়ীভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অক্ষম (ভেজিটেটিভ স্টেট) অবস্থায় চলে যাওয়ার ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নূ্যনতম ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ আমৃত্যু কারাদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে।
কেবল ধর্ষণ নয়, সার্বিকভাবে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে আরো সক্রিয় হতে বলেছে কমিটি। প্রত্যক্ষ যৌন হয়রানির পাশাপাশি ইঙ্গিতপূর্ণ কথাবার্তা, ইশারা ও আচার-আচরণকেও যৌন নির্যাতনের আওতায় এনে কঠোর সাজার সুপারিশ করা হয়েছে। বিচারপতি বার্মার বক্তব্য, 'আজ যারা ইভ টিজিং করছে, কাল তারাই ধর্ষণ করতে পারে। তাই এ ধরনের মানসিক প্রবণতা অঙ্কুরেই বিনাশ করা জরুরি।'
১৬ বছরের অপরাধীকে প্রাপ্তবয়স্ক ধরার ব্যাপারে সায় দেয়নি কমিটি। বিচারপতি সুব্রামনিয়ামের বক্তব্য, 'একজন কিশোর যদি ১৬ বছরেই অপরাধী হয়ে ওঠে, সমাজ তার দায় এড়াতে পারে না।' দিল্লির ওই গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের একজন নিজেকে নাবালক বলে দাবি করেছে। অথচ পুলিশের দাবি, ঘটনার দিন তার পাশবিকতার মাত্রাই ছিল সবচেয়ে বেশি। এ অবস্থায় অপরাধীর বয়স কমানোর দাবি ওঠে।
আইন সংশোধনের চেয়ে বার্মা কমিটি বেশি গুরুত্ব দিয়েছে পুলিশ প্রশাসনের মানসিকতার ওপর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হতে পারে। পুলিশি ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর জোর দিতে বলেছে কমিটি। ধর্ষণের অভিযোগ না নেওয়া এবং তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিক্ষায় নারী ও শিশুদের প্রতি বৈষম্য দূর করতেই হবে। ধর্ষণ থেকে বাঁচতে কোনো নারী যদি কাউকে খুন করেন, সেটা তাঁর আত্মরক্ষার অধিকার বলে স্বীকৃত হতে হবে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে নিম্ন আদালতের ওপর উচ্চ আদালতের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো দরকার বলেও মনে করে কমিটি। কারো বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হলেই তার ভোটে দাঁড়ানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত। খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, জিনিউজ।
No comments