ছুটিতে গেলেন সেতু বিভাগের সাবেক সচিব -মন্ত্রিত্ব ছাড়তেই হলো আবুল হোসেনকে
অবশেষে পদত্যাগ করলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। গত রোববার তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। ছুটিতে গেছেন সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াও। তিনি সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত পূরণ করতেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রগুলো বলছে। বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি অব্যাহত রাখতে মন্ত্রীসহ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার নাম দিয়ে তাঁদের ছুটিতে পাঠানোর শর্ত দিয়েছিল। এই শর্তের কথা চিন্তা করেই নতুন করে আলোচনা শুরুর ক্ষেত্র তৈরির অংশ হিসেবে আবুল হোসেনকে সরে যাওয়ার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। সরকারের ভেতর থেকেও এ জন্য চাপ ছিল।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, গত রোববার রাতে সৈয়দ আবুল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছেন। তবে কয়েক দিন ধরেই তাঁর পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা ছিল। গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যোগ দেননি সৈয়দ আবুল হোসেন। এর পরই তাঁর পদত্যাগের খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরে বিজ্ঞাপন দেন। সেখানেও পদত্যাগ করতে পারেন বলে ইঙ্গিত ছিল।
পদত্যাগ করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আবুল হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আমি যাঁদের শ্রদ্ধা করি, তাঁরা বিভিন্ন সময় আমাকে বলেছেন, তদন্ত চলাকালে আমার মন্ত্রী পদে থাকা উচিত নয়। আমি সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। কার্যকর ব্যবস্থাও নিয়ে ফেলেছি। আমি দায়িত্বে থাকব না।’
সাবেক এই মন্ত্রীর সঙ্গে এসব কথা হয় দুপুরবেলা। এরপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মুঠোফোন বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গুলশানে সৈয়দ আবুল হোসেনের বাসভবনে যান। তবে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী বাসায় ছিলেন না বলে অর্থমন্ত্রী ফিরে যান। জানা গেছে, সকাল সাতটার সময় তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আর তিনি বাসায় ফেরেননি। তিনি গতকালই দেশের বাইরে গেছেন বলে একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়। গতকাল তিনি পতাকাবাহী গাড়িও ব্যবহার করেননি।
সূত্র জানায়, জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার নতুন প্রেসিডেন্ট একিহিকো তানাকা এখন ওয়াশিংটন রয়েছেন। সেখানে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী জাইকার প্রেসিডেন্টকে ফোন করে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেছেন। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ওই বৈঠকে নতুন করে আলোচনা করতে হলে নতুন প্রস্তাব দিতে হবে। এ কারণেই মন্ত্রীর পদত্যাগ ও সচিবকে ছুটি দেওয়া হলো। এর আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়নি।
অর্থমন্ত্রী গত রোববার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গোল্ডস্টেইনের (বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর) দেওয়া চার প্রস্তাবের মধ্যে চতুর্থটি মেনে নেওয়া একটু অসুবিধা ছিল। আমরা চেষ্টা করছি, এটাও কীভাবে সমাধান করা যায়।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তা-ই যদি হয়ে যায়, তাহলে শিগগিরই আমরা শুরু করতে পারি।’
সরকারি সূত্রগুলো মনে করছে, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক সেতু সচিবের বিদায়ের ফলে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। অর্থমন্ত্রীও এর আগে একাধিকবার বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারত বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। সরকারের আশা, এখন পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত শুরু হওয়ার পরিবেশ তৈরি হবে। এ ছাড়া, দুর্নীতির সুরাহা না হলে এডিবিসহ অন্য দাতারা অর্থায়নে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না জানিয়ে দেওয়ার পর সরকারের হাতে আর বিকল্প ছিল না। আবার বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত অন্য প্রকল্পগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে—এই ভাবনাও সরকারের মধ্যে ছিল। বর্তমানে পদ্মা সেতু ছাড়া যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৩৪টি প্রকল্প চলমান আছে।
গত সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। এ সময় সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। গত জানুয়ারিতে তাঁকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নামে একটি নতুন মন্ত্রণালয় করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই দফায় দুবার মন্ত্রী হয়েছিলেন। দুবারই তাঁকে পদত্যাগ করতে হলো। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দুই পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণের দায়ে তাঁর মন্ত্রিত্ব যায়। আর এবার গেল পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, গত রোববার রাতে সৈয়দ আবুল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছেন। তবে কয়েক দিন ধরেই তাঁর পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা ছিল। গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যোগ দেননি সৈয়দ আবুল হোসেন। এর পরই তাঁর পদত্যাগের খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরে বিজ্ঞাপন দেন। সেখানেও পদত্যাগ করতে পারেন বলে ইঙ্গিত ছিল।
পদত্যাগ করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আবুল হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আমি যাঁদের শ্রদ্ধা করি, তাঁরা বিভিন্ন সময় আমাকে বলেছেন, তদন্ত চলাকালে আমার মন্ত্রী পদে থাকা উচিত নয়। আমি সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। কার্যকর ব্যবস্থাও নিয়ে ফেলেছি। আমি দায়িত্বে থাকব না।’
সাবেক এই মন্ত্রীর সঙ্গে এসব কথা হয় দুপুরবেলা। এরপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মুঠোফোন বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গুলশানে সৈয়দ আবুল হোসেনের বাসভবনে যান। তবে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী বাসায় ছিলেন না বলে অর্থমন্ত্রী ফিরে যান। জানা গেছে, সকাল সাতটার সময় তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আর তিনি বাসায় ফেরেননি। তিনি গতকালই দেশের বাইরে গেছেন বলে একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়। গতকাল তিনি পতাকাবাহী গাড়িও ব্যবহার করেননি।
সূত্র জানায়, জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার নতুন প্রেসিডেন্ট একিহিকো তানাকা এখন ওয়াশিংটন রয়েছেন। সেখানে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী জাইকার প্রেসিডেন্টকে ফোন করে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেছেন। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ওই বৈঠকে নতুন করে আলোচনা করতে হলে নতুন প্রস্তাব দিতে হবে। এ কারণেই মন্ত্রীর পদত্যাগ ও সচিবকে ছুটি দেওয়া হলো। এর আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়নি।
অর্থমন্ত্রী গত রোববার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গোল্ডস্টেইনের (বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর) দেওয়া চার প্রস্তাবের মধ্যে চতুর্থটি মেনে নেওয়া একটু অসুবিধা ছিল। আমরা চেষ্টা করছি, এটাও কীভাবে সমাধান করা যায়।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তা-ই যদি হয়ে যায়, তাহলে শিগগিরই আমরা শুরু করতে পারি।’
সরকারি সূত্রগুলো মনে করছে, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক সেতু সচিবের বিদায়ের ফলে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। অর্থমন্ত্রীও এর আগে একাধিকবার বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারত বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। সরকারের আশা, এখন পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত শুরু হওয়ার পরিবেশ তৈরি হবে। এ ছাড়া, দুর্নীতির সুরাহা না হলে এডিবিসহ অন্য দাতারা অর্থায়নে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না জানিয়ে দেওয়ার পর সরকারের হাতে আর বিকল্প ছিল না। আবার বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত অন্য প্রকল্পগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে—এই ভাবনাও সরকারের মধ্যে ছিল। বর্তমানে পদ্মা সেতু ছাড়া যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৩৪টি প্রকল্প চলমান আছে।
গত সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। এ সময় সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। গত জানুয়ারিতে তাঁকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নামে একটি নতুন মন্ত্রণালয় করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই দফায় দুবার মন্ত্রী হয়েছিলেন। দুবারই তাঁকে পদত্যাগ করতে হলো। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দুই পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণের দায়ে তাঁর মন্ত্রিত্ব যায়। আর এবার গেল পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে।
No comments