ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি-ইতিহাস গড়লেন প্রণব মুখার্জি
নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের চিত্রা তীরবর্তী জেলা নড়াইলের জামাইবাবু প্রণব মুখার্জি উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্র ভারতের রাষ্ট্রপতি। তাঁর হাত ধরে বাঙালি পৌঁছে গেল রাইসিনা পাহাড়ের শৃঙ্গে। যে দেশে সংসদীয় ব্যবস্থা ছয় দশকেরও পুরনো, সেই গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি শপথ নেবেন
কাল। এই প্রথম কোনো বঙ্গসন্তান ভারতের রাষ্ট্রপতি। দেশের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে উত্তেজনাময় নির্বাচনের ভেতর দিয়ে। সাম্প্রতিককালে ভারতের সবচেয়ে উত্তেজনাময় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণব মুখার্জি জিতেছেন ৬৯.৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে। প্রদত্ত মোট ১০ লাখ ২৯ হাজার ৯২৪টি ভোটের মধ্যে তিনি পেয়েছেন সাত লাখ ১৩ হাজার ৯৩৭টি।
ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়েছে মোট ১৪ বার। এ পর্যন্ত তিনজন বাঙালি প্রার্থী মোট পাঁচবার এই সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করলেন কীর্ণহারের খর্বকায় বঙ্গসন্তানই। প্রণববাবুর আগে কৃষ্ণকুমার চট্টোপাধ্যায় তিনবার ও আরএসপি নেতা ত্রিদিব চৌধুরী একবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নিলেও জয় ছিল অধরাই। ১৯৫২ থেকে ২০১২- ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাঙালির লড়াই শুরু থেকেই। ১৯৫২ সালে যে লড়াই শুরু করেছিলেন কৃষ্ণকুমার চট্টোপাধ্যায়, ২০১২ সালে এসে তা পূর্ণতা পেল প্রণব মুখার্জির জয়ের মধ্য দিয়ে। প্রায় চার লাখ ভোটে জেতার পর প্রণব মুখার্জি প্রথম বাঙালি হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিতে চলেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে অবতীর্ণ করার লড়াইটাও খুব ছোট নয়। দলের মধ্যে নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে হয়েছে। তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর দল তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত করলেও জোটের শরিক তৃণমূল কংগ্রেস শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে। একেবারে শেষ সময়ে এসে বরফ গলে। মমতার সমর্থনও পেয়ে যান প্রণব মুখার্জি।
নড়াইলের জামাইবাবু প্রণব মুখার্জির রাজনৈতিক জীবন বর্ণাঢ্য। ১৯৬৯ সালে মেদিনীপুরে উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়েছিলেন ইন্দিরাপন্থীদের প্রার্থী কৃষ্ণ মেনন। মেননের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন প্রণব। তখনই ইন্দিরা গান্ধীর চোখে পড়ে যান তিনি। তাঁকে রাজ্যসভায় নিয়ে আসেন দূরদর্শী ইন্দিরা। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি প্রণব মুখার্জিকে। দ্রুত হয়ে ওঠেন ইন্দিরা গান্ধীর সবচেয়ে আস্থাভাজন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পাঁচবার রাজ্যসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দুবার জিতেছেন লোকসভা থেকে (২০০৪ ও ২০০৯)। বাণিজ্য থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, লোকসভার নেতা- এক কথায় বহুরূপে কংগ্রেসে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। এমনকি মনমোহনের জমানায়ও তিনিই ছিলেন সংকটমোচনে ইউপিএ সরকারের প্রধান ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলে তিনিই ডাকতেন মন্ত্রিসভার বৈঠক। ইন্দিরার সময় ছিলেন অঘোষিত 'নম্বর টু'। বলা হয়ে থাকে, বরাবরই দিল্লির রাজনৈতিক আবহাওয়ায় স্বচ্ছন্দ প্রণববাবু।
প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংকটের সময় তিনি বন্ধু হিসেবেই এসেছেন এই দেশে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। সব সময় বন্ধু হিসেবে পাশে থেকেছেন। কাজের মধ্য দিয়েই প্রকাশ করেছেন নিজের আন্তরিকতা। আমরা আশা করব, ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রণব মুখার্জি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। অতীতেও তিনি দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়ে দৌত্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এই হিতৈষী-ভূমিকা ভবিষ্যতেও তিনি পালন করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। বাংলাদেশের পরম শুভাকাঙ্ক্ষী প্রণব মুখার্জিকে আমাদের অনেক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা।
ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়েছে মোট ১৪ বার। এ পর্যন্ত তিনজন বাঙালি প্রার্থী মোট পাঁচবার এই সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করলেন কীর্ণহারের খর্বকায় বঙ্গসন্তানই। প্রণববাবুর আগে কৃষ্ণকুমার চট্টোপাধ্যায় তিনবার ও আরএসপি নেতা ত্রিদিব চৌধুরী একবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নিলেও জয় ছিল অধরাই। ১৯৫২ থেকে ২০১২- ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাঙালির লড়াই শুরু থেকেই। ১৯৫২ সালে যে লড়াই শুরু করেছিলেন কৃষ্ণকুমার চট্টোপাধ্যায়, ২০১২ সালে এসে তা পূর্ণতা পেল প্রণব মুখার্জির জয়ের মধ্য দিয়ে। প্রায় চার লাখ ভোটে জেতার পর প্রণব মুখার্জি প্রথম বাঙালি হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিতে চলেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে অবতীর্ণ করার লড়াইটাও খুব ছোট নয়। দলের মধ্যে নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে হয়েছে। তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর দল তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত করলেও জোটের শরিক তৃণমূল কংগ্রেস শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে। একেবারে শেষ সময়ে এসে বরফ গলে। মমতার সমর্থনও পেয়ে যান প্রণব মুখার্জি।
নড়াইলের জামাইবাবু প্রণব মুখার্জির রাজনৈতিক জীবন বর্ণাঢ্য। ১৯৬৯ সালে মেদিনীপুরে উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়েছিলেন ইন্দিরাপন্থীদের প্রার্থী কৃষ্ণ মেনন। মেননের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন প্রণব। তখনই ইন্দিরা গান্ধীর চোখে পড়ে যান তিনি। তাঁকে রাজ্যসভায় নিয়ে আসেন দূরদর্শী ইন্দিরা। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি প্রণব মুখার্জিকে। দ্রুত হয়ে ওঠেন ইন্দিরা গান্ধীর সবচেয়ে আস্থাভাজন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পাঁচবার রাজ্যসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দুবার জিতেছেন লোকসভা থেকে (২০০৪ ও ২০০৯)। বাণিজ্য থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, লোকসভার নেতা- এক কথায় বহুরূপে কংগ্রেসে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। এমনকি মনমোহনের জমানায়ও তিনিই ছিলেন সংকটমোচনে ইউপিএ সরকারের প্রধান ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলে তিনিই ডাকতেন মন্ত্রিসভার বৈঠক। ইন্দিরার সময় ছিলেন অঘোষিত 'নম্বর টু'। বলা হয়ে থাকে, বরাবরই দিল্লির রাজনৈতিক আবহাওয়ায় স্বচ্ছন্দ প্রণববাবু।
প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংকটের সময় তিনি বন্ধু হিসেবেই এসেছেন এই দেশে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। সব সময় বন্ধু হিসেবে পাশে থেকেছেন। কাজের মধ্য দিয়েই প্রকাশ করেছেন নিজের আন্তরিকতা। আমরা আশা করব, ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রণব মুখার্জি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। অতীতেও তিনি দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়ে দৌত্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এই হিতৈষী-ভূমিকা ভবিষ্যতেও তিনি পালন করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। বাংলাদেশের পরম শুভাকাঙ্ক্ষী প্রণব মুখার্জিকে আমাদের অনেক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা।
No comments