বাবা আমার অস্তিত্ব জুড়েঃ নুহাশ by আদিত্য আরাফাত
কিছু কিছু রাতে খুব কষ্ট হতো নুহাশের। বাবার কথা মনে পড়তো। মাঝ রাতে বাবার জন্য কাঁদতেন নুহাশ। টেবিলে পড়ে থাকা বাবার লেখা বইগুলো হাতড়ে ধরে বুকে নিতেন। চুমু খেতেন। বাবার প্রতি নুহাশের এমন ভালোবাসার কথা জানেন মা গুলতেকিন। জানেন নুহাশের বোন ও কাছের বন্ধুরাও। মঙ্গলবার নুহাশ পল্লীতে সেই কাছের বন্ধুরাই বাংলানিউজকে জানালেন এসব কথা।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নুহাশ পা রাখেন তার নামেই গড়ে তোলা পল্লীর মাটিতে। শোকে স্তব্ধ নুহাশ। ঝির ঝির বৃষ্টি পড়ছে নুহাশপল্লীতে। নুহাশের চোখে জল। নুহাশের সে অশ্রু শ্রাবণের জলের সঙ্গে যেনো মিলেমিশে একাকার।
কি বলবেন নুহাশ। এ পরিস্থিতিতে যে বলার কিছু থাকে না। নীতিমালা ভেঙ্গে কৌতূহলের বশে তার অনুভূতি জানতে চাইতেই ডুকরে কেঁদে উঠে এ প্রতিবেদকের হাত ধরে বললেন, ``আমারে কিছু জিগ্যেস করবেন না প্লিজ...আমি কি বলবো...কি বলার আছে আমার...পিতার প্রতি ভালোবাসা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশ করার কিছু নেই। পিতা আমার অস্তিত্ব জুড়ে।``
স্রেফ এই কটি কথা বলে এগিয়ে গেলেন। তখন ঝুম বৃষ্টি নামে নুহাশ পল্লীতে। ভিজে যাচ্ছেন নুহাশ। ভিজে যাচ্ছে নুহাশের অশ্রুসিক্ত মুখ। শ্রাবণের জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছিলো নুহাশের চোখের জল। ক্যামরা নিয়ে টেলিভিশনের কয়েকজন সাংবাদিকও কথা বলার চেষ্টা করেন। নুহাশ কাউকেই কিছু বলতে চান না।
কি কষ্ট নুহাশ বয়ে বেড়াচ্ছেন তা নুহাশের মুখ দেখেই বোঝা যায়।
বাবার সঙ্গে সব স্মৃতিই যেনো মনে পড়ছে নুহাশের। নুহাশের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবার সঙ্গে স্কাইপিতে কথা হতো তার। মৃত্যুর দিন কয়েক আগেও কথা হয়েছে। বাবা-ছেলে দু`জন বসতেন স্কাইপিতে। হুমায়ূন আহমেদ স্কাইপিতে নুহাশের সঙ্গে কথা বলার সময় মাথায় ক্যাপ পরে থাকতেন। হুমায়ূন ভাবতেন তার চুল পড়ে গেছে জানলে নুহাশ মন খারাপ করবে।
পরিবারের সূত্রটি জানায়, স্কাইপিতে কথা বলার এমনই একদিনে নুহাশ হুমায়ূন আহমেদকে বলেন-``আব্বু ক্যাপ খোলো।`` হুমায়ূন বলেন-``কেনো বাবা?``। একপর্যায়ে ক্যাপ খোলেন হুমায়ূন আহমেদ। সেদিন বাবার মাথায় সব চুল পড়ে গেছে দেখে অঝোরে কেঁদেছেন নুহাশ। পরে হুমায়ূন আহমেদ নুহাশকে সান্ত্বনা দেন এই বলে যে- বাবা, কেমোথেরাপির কারণে চুল উঠেছে। আবার গজাবে...``।
২০০৫ সালে নুহাশের মা গুলতেকিনের সঙ্গে তার বাবার বিচ্ছেদ হলেও নুহাশ এভাবেই যোগাযোগ রেখেছেন হুমায়ূনের সঙ্গে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্সে অনার্স করছেন এখন নুহাশ। বন্ধরাই জানালেন, বাবার প্রায় সব বই তার পড়া হয়েছে। বাবার সৃষ্টি কিংবদন্তির চরিত্র হিমুকে নিজের ভেতর লালন করেন নুহাশ। মিসির আলী, শুভ্রের মতো চরিত্রগুলো তাকে কাছে টানলেও মনেপ্রাণে নুহাশ নিজেকে হিমু ভাবতেই ভালোবাসেন। সোমবার হলুদ পাঞ্জাবি পরেই ছিলেন সারাদিন। হিমু হয়ে কফিনের পাশে নির্বাক দাড়িয়ে ছিলেন।
এ নুহাশের নামেই গড়েছেন হুমায়ূন আহমেদ স্বপ্নের নুহাশপল্লী। একাধিক লেখায় হুমায়ূন আহমেদ নুহাশকে নিয়ে লিখেছেন-``নুহাশ আমার সাত রাজার ধন।``
গুলতেকিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেও গুলতেকিনের গর্ভের সন্তান নুহাশের নামেই নুহাশপল্লী। নুহাশপল্লীর নাম পরিবর্তন করেননি হুমায়ূন আহমেদ। কত আবেগ! কত স্মৃতি এ নুহাশপল্লীতে। সেই স্বপ্নের নুহাশপল্লীতে শায়িত হলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তির কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।
বেলা যখন ২টা। নুহাশ দাঁড়িয়ে দেখছেন সাদা কাফনে তার বাবাকে সাড়ে তিনহাত মাটির নিচে কবরে নামানো হচ্ছে। লম্বা হয়ে কবরে শোয়ানো হলো হুমায়ূন আহমেদকে। তারপর পাটাতন বিচানো হলো হুমায়ূন আহমেদের শরীরের উপরে।
দুপুর সোয়া ২টা। নুহাশ দেখছেন মাটি দিয়ে মানুষরা ঢেকে দিচ্ছে তার বাবাকে! একমুঠো মাটি হাতে নিয়ে নুহাশ আবারও ডুকরে কেঁদে ওঠেন। বাবার কবরে সে মাটি রাখেন নুহাশ। নুহাশ জানেন সাড়ে তিন হাত এ ঘর থেকে আর কখনো উঠে দাঁড়াবেন না তার বাবা। চিরদিনের জন্য নুহাশপল্লীতে এক অন্তহীন ঘুমে মগ্ন হলেন তার বাবা হুমায়ূন আহমেদ।
কি বলবেন নুহাশ। এ পরিস্থিতিতে যে বলার কিছু থাকে না। নীতিমালা ভেঙ্গে কৌতূহলের বশে তার অনুভূতি জানতে চাইতেই ডুকরে কেঁদে উঠে এ প্রতিবেদকের হাত ধরে বললেন, ``আমারে কিছু জিগ্যেস করবেন না প্লিজ...আমি কি বলবো...কি বলার আছে আমার...পিতার প্রতি ভালোবাসা গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রকাশ করার কিছু নেই। পিতা আমার অস্তিত্ব জুড়ে।``
স্রেফ এই কটি কথা বলে এগিয়ে গেলেন। তখন ঝুম বৃষ্টি নামে নুহাশ পল্লীতে। ভিজে যাচ্ছেন নুহাশ। ভিজে যাচ্ছে নুহাশের অশ্রুসিক্ত মুখ। শ্রাবণের জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছিলো নুহাশের চোখের জল। ক্যামরা নিয়ে টেলিভিশনের কয়েকজন সাংবাদিকও কথা বলার চেষ্টা করেন। নুহাশ কাউকেই কিছু বলতে চান না।
কি কষ্ট নুহাশ বয়ে বেড়াচ্ছেন তা নুহাশের মুখ দেখেই বোঝা যায়।
বাবার সঙ্গে সব স্মৃতিই যেনো মনে পড়ছে নুহাশের। নুহাশের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবার সঙ্গে স্কাইপিতে কথা হতো তার। মৃত্যুর দিন কয়েক আগেও কথা হয়েছে। বাবা-ছেলে দু`জন বসতেন স্কাইপিতে। হুমায়ূন আহমেদ স্কাইপিতে নুহাশের সঙ্গে কথা বলার সময় মাথায় ক্যাপ পরে থাকতেন। হুমায়ূন ভাবতেন তার চুল পড়ে গেছে জানলে নুহাশ মন খারাপ করবে।
পরিবারের সূত্রটি জানায়, স্কাইপিতে কথা বলার এমনই একদিনে নুহাশ হুমায়ূন আহমেদকে বলেন-``আব্বু ক্যাপ খোলো।`` হুমায়ূন বলেন-``কেনো বাবা?``। একপর্যায়ে ক্যাপ খোলেন হুমায়ূন আহমেদ। সেদিন বাবার মাথায় সব চুল পড়ে গেছে দেখে অঝোরে কেঁদেছেন নুহাশ। পরে হুমায়ূন আহমেদ নুহাশকে সান্ত্বনা দেন এই বলে যে- বাবা, কেমোথেরাপির কারণে চুল উঠেছে। আবার গজাবে...``।
২০০৫ সালে নুহাশের মা গুলতেকিনের সঙ্গে তার বাবার বিচ্ছেদ হলেও নুহাশ এভাবেই যোগাযোগ রেখেছেন হুমায়ূনের সঙ্গে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্সে অনার্স করছেন এখন নুহাশ। বন্ধরাই জানালেন, বাবার প্রায় সব বই তার পড়া হয়েছে। বাবার সৃষ্টি কিংবদন্তির চরিত্র হিমুকে নিজের ভেতর লালন করেন নুহাশ। মিসির আলী, শুভ্রের মতো চরিত্রগুলো তাকে কাছে টানলেও মনেপ্রাণে নুহাশ নিজেকে হিমু ভাবতেই ভালোবাসেন। সোমবার হলুদ পাঞ্জাবি পরেই ছিলেন সারাদিন। হিমু হয়ে কফিনের পাশে নির্বাক দাড়িয়ে ছিলেন।
এ নুহাশের নামেই গড়েছেন হুমায়ূন আহমেদ স্বপ্নের নুহাশপল্লী। একাধিক লেখায় হুমায়ূন আহমেদ নুহাশকে নিয়ে লিখেছেন-``নুহাশ আমার সাত রাজার ধন।``
গুলতেকিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেও গুলতেকিনের গর্ভের সন্তান নুহাশের নামেই নুহাশপল্লী। নুহাশপল্লীর নাম পরিবর্তন করেননি হুমায়ূন আহমেদ। কত আবেগ! কত স্মৃতি এ নুহাশপল্লীতে। সেই স্বপ্নের নুহাশপল্লীতে শায়িত হলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তির কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।
বেলা যখন ২টা। নুহাশ দাঁড়িয়ে দেখছেন সাদা কাফনে তার বাবাকে সাড়ে তিনহাত মাটির নিচে কবরে নামানো হচ্ছে। লম্বা হয়ে কবরে শোয়ানো হলো হুমায়ূন আহমেদকে। তারপর পাটাতন বিচানো হলো হুমায়ূন আহমেদের শরীরের উপরে।
দুপুর সোয়া ২টা। নুহাশ দেখছেন মাটি দিয়ে মানুষরা ঢেকে দিচ্ছে তার বাবাকে! একমুঠো মাটি হাতে নিয়ে নুহাশ আবারও ডুকরে কেঁদে ওঠেন। বাবার কবরে সে মাটি রাখেন নুহাশ। নুহাশ জানেন সাড়ে তিন হাত এ ঘর থেকে আর কখনো উঠে দাঁড়াবেন না তার বাবা। চিরদিনের জন্য নুহাশপল্লীতে এক অন্তহীন ঘুমে মগ্ন হলেন তার বাবা হুমায়ূন আহমেদ।
No comments