কফিনে ঝরল মায়ের অশ্রু
গগনশিরীষের গাছগুলো কাঁপছিল শ্রাবণের হাওয়ায়, যেন কাঁদছিল। আকাশে রোদ ঝলমল, তবে ঝাঁজালো নয়। চারদিক শোকে আচ্ছন্ন, রোদও যেন ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে শোকে। ঘড়ির কাঁটা ১১টার ঘর ছুঁইছুঁই করছে। শ্বেতশুভ্র বসনে শহীদ মিনারে আসেন রত্নগর্ভা মা আয়েশা ফয়েজ।
ছেলে হারানোর শোকে, কান্নায় গত কয়দিনে ভেঙে পড়েছেন অশীতিপর শহীদজায়া। তাঁর সদ্যপ্রয়াত বড় ছেলে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা অগণিত মানুষের ভিড় ঠেলে তিনি এগিয়ে গেলেন কফিনের কাছে। ছেলের মুখটি দেখে চোখ বেয়ে নামে অশ্রুধারা। দু-হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরেন ছেলের কফিন। চোখ থেকে কফিনে, ছেলের চাঁদমুখে টুপটুপ করে ঝরছিল নয়নজল।
একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে স্বামী নিহত হওয়ার পর ছয় সন্তান নিয়ে অকূল পাথারে পড়েন আয়েশা ফয়েজ। কিন্তু পরাভব মানেননি; শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরেন তিনি। শত কষ্টেও ছেলেমেয়েদের বুঝতে দেননি বাবার অভাব। ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করলেন নিজে। তাঁর ছেলেমেয়েরা আজ এ জাতির গর্বের ধন। কিন্তু গর্ভের ধন, প্রিয় কাজলের মৃত্যুভার এবার তিনি সইবেন কী করে?
কাজল নামের এই ছেলেই আশ্রয় খুঁজত তাঁর বুকে। বড় হয়েও অবলীলায় মাকে জড়িয়ে ধরত ছেলেটি। এবার আয়েশা ফয়েজ নিজেই মায়ার আবেশে জড়িয়ে ধরলেন ছেলেকে। কফিন জড়িয়ে যেন অনুভব করার চেষ্টা করলেন নিথর ছেলের অস্তিত্ব। অনেকটা সময় কফিনে মাথা ঠেকিয়ে রাখলেন মা। তখনো ঝরছিল অশ্রুধারা।
সে সময় হুমায়ূন আহমেদের কফিনের পাশে ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, হুমায়ূন আহমেদের ছেলে নুহাশ, মেয়ে শীলা ও নোভা, ভাই ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব এবং মামা নুরুননবী শেখসহ ঘনিষ্ঠজনরা। কফিনের আশপাশে যারা ছিলেন, তাঁদের চোখে আরেক দফা বান ডাকল ছেলের কফিনে মায়ের মাথা ঠেকিয়ে রাখার হৃদয়বিদারক দৃশ্যে।
হুমায়ূন আহমেদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব- এই তিন লেখকের মা আয়েশা ফয়েজ আত্মজীবনী লিখেছেন 'জীবন যে রকম' শিরোনামে। বইটির পরতে পরতে লেখা আছে ছেলেমেয়েদের কথা। লেখা আছে প্রথম সন্তানের জন্মের নানা স্মৃতি। তাঁর প্রথম সন্তান হুমায়ূন আহমেদ।
তাঁর আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হুমায়ূন আহমেদের নানার বাড়ির বিভিন্ন ঘটনা। জন্মের পর প্রথমে ছেলেটির নাম রাখা হলো কাজল। সেই কাজল ফিরে এসেছেন তাঁর বুকে কফিনে বন্দি হয়ে। কফিন জড়িয়ে মায়ের মনে কি সেই সব স্মৃতি ভাসছিল? তাঁর মনে কি পড়ছিল কাজলের শৈশবের দিনগুলো- তাঁর দুরন্তপনা, টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়া প্রভৃতি ঘটনা।
হুমায়ূন আহমেদের কফিনের পাশে তাঁর মায়ের মনে এমন কত স্মৃতিই না ভর করছিল। এই শ্রাবণের ঝলমলে রোদও কাল শোকার্ত হয়ে পড়েছিল শোকার্ত মায়ের সমব্যথী হয়ে। শহীদ মিনারের প্রবীণ বৃক্ষরাজি নুয়ে আসে যেন শোকাবহে; মায়ের মনের আকাশে তখন ইতি-উতি ওড়াওড়ি কত না সুখস্মৃতির। ছেলে হারানো মায়েরাই কেবল তা জানবেন, বুঝবেন।
একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে স্বামী নিহত হওয়ার পর ছয় সন্তান নিয়ে অকূল পাথারে পড়েন আয়েশা ফয়েজ। কিন্তু পরাভব মানেননি; শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরেন তিনি। শত কষ্টেও ছেলেমেয়েদের বুঝতে দেননি বাবার অভাব। ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করলেন নিজে। তাঁর ছেলেমেয়েরা আজ এ জাতির গর্বের ধন। কিন্তু গর্ভের ধন, প্রিয় কাজলের মৃত্যুভার এবার তিনি সইবেন কী করে?
কাজল নামের এই ছেলেই আশ্রয় খুঁজত তাঁর বুকে। বড় হয়েও অবলীলায় মাকে জড়িয়ে ধরত ছেলেটি। এবার আয়েশা ফয়েজ নিজেই মায়ার আবেশে জড়িয়ে ধরলেন ছেলেকে। কফিন জড়িয়ে যেন অনুভব করার চেষ্টা করলেন নিথর ছেলের অস্তিত্ব। অনেকটা সময় কফিনে মাথা ঠেকিয়ে রাখলেন মা। তখনো ঝরছিল অশ্রুধারা।
সে সময় হুমায়ূন আহমেদের কফিনের পাশে ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, হুমায়ূন আহমেদের ছেলে নুহাশ, মেয়ে শীলা ও নোভা, ভাই ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব এবং মামা নুরুননবী শেখসহ ঘনিষ্ঠজনরা। কফিনের আশপাশে যারা ছিলেন, তাঁদের চোখে আরেক দফা বান ডাকল ছেলের কফিনে মায়ের মাথা ঠেকিয়ে রাখার হৃদয়বিদারক দৃশ্যে।
হুমায়ূন আহমেদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব- এই তিন লেখকের মা আয়েশা ফয়েজ আত্মজীবনী লিখেছেন 'জীবন যে রকম' শিরোনামে। বইটির পরতে পরতে লেখা আছে ছেলেমেয়েদের কথা। লেখা আছে প্রথম সন্তানের জন্মের নানা স্মৃতি। তাঁর প্রথম সন্তান হুমায়ূন আহমেদ।
তাঁর আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হুমায়ূন আহমেদের নানার বাড়ির বিভিন্ন ঘটনা। জন্মের পর প্রথমে ছেলেটির নাম রাখা হলো কাজল। সেই কাজল ফিরে এসেছেন তাঁর বুকে কফিনে বন্দি হয়ে। কফিন জড়িয়ে মায়ের মনে কি সেই সব স্মৃতি ভাসছিল? তাঁর মনে কি পড়ছিল কাজলের শৈশবের দিনগুলো- তাঁর দুরন্তপনা, টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়া প্রভৃতি ঘটনা।
হুমায়ূন আহমেদের কফিনের পাশে তাঁর মায়ের মনে এমন কত স্মৃতিই না ভর করছিল। এই শ্রাবণের ঝলমলে রোদও কাল শোকার্ত হয়ে পড়েছিল শোকার্ত মায়ের সমব্যথী হয়ে। শহীদ মিনারের প্রবীণ বৃক্ষরাজি নুয়ে আসে যেন শোকাবহে; মায়ের মনের আকাশে তখন ইতি-উতি ওড়াওড়ি কত না সুখস্মৃতির। ছেলে হারানো মায়েরাই কেবল তা জানবেন, বুঝবেন।
No comments