রেলপথ-পকেটমার দৌরাত্ম্য
ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথে সুসংগঠিত পকেটমারদের দৌরাত্ম্য যাত্রীদের ক্রমাগত উদ্বিগ্ন করে চলেছে। জরুরি প্রয়োজনে টাকা নিয়ে ট্রেনে উঠলেই পকেটমারের ভয়ে তটস্থ থাকছেন যাত্রীরা। সাম্প্রতিককালে বেশকিছু পকেটমারের ঘটনায় ভীতি বেড়ে গেছে। যাত্রীদের পকেট কেটে, মাল-সামান নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।
শুধু চলন্ত ট্রেনেই যে অঘটন ঘটছে তা নয়, রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে কৃত্রিম ভিড় সৃষ্টি করে যাত্রীদের পকেট কাটা হচ্ছে। ট্রেনে ওঠার সময় দরজায় ভিড় লাগিয়েও অপকর্মটি সারছে সংঘবদ্ধ চক্রগুলো। চিকিৎসার্থে রাজধানীগামী যাত্রী হোক কি ব্যবসার্থে টাকা বহনকারী যাত্রী হোক রেহাই মিলছে না কারও। পকেটমারদের ধূর্ততার সঙ্গে পেরে না উঠে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রেলওয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেল পুলিশের। চলতি ট্রেন ও স্টেশনে রেল পুলিশের নিয়মিত টহল থাকার কথা। আর এই টহলরত পুলিশ দায়িত্ব পালনে সচেতন হলে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের ব্যাপারেও তাদের কাছে খোঁজখবর থাকার কথা। বিশেষত পকেটমাররা রেলপথের নিয়মিত যাত্রী, সাধারণ যাত্রীদের থেকে তাদের আলাদা করা কঠিন নয়। আর আলাদা করা সম্ভব হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণও কঠিন নয়। কিন্তু তেমন ব্যবস্থা বাস্তবে দেখা যাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে পকেটমার চক্রের। এমন ক্ষেত্রে পকেটমারদের মতো অপরাধীরাও যে দুরন্ত হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য। রেলওয়ের সুনাম ও রেলপথের নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশি তৎপরতা দরকার। চলতি পথে যাত্রীরা হয়রানির শিকার হলে, সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসলে এর দায় রেল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে তারা বিষয়গুলো অবজ্ঞা করতে পারেন না। সকলের সহযোগিতায় রেলপথ নিরাপদ হোক এটাই প্রত্যাশা।
No comments