আজ মাদকবিরোধী দিবস-অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোরেরা by মিঠুন চৌধুরী
বটতলি রেলস্টেশন চত্বরে বসে গাঁজা খাচ্ছিল আট থেকে ১০ বছর বয়সের দুই শিশু। নাম জিজ্ঞাসা করলে বলল, ‘নাম দিয়া কাম কী?’। নাম না জানালেও কথা বলতে আপত্তি ছিল না তাদের। আলাপে জানা গেল স্টেশনে মালপত্র টানার কাজ করে তারা দুজন।
নিজেদের উপার্জনের টাকা দিয়েই কখনো ‘গাঁজা’, কখনো ‘গাম’ সেবন করে তারা। গত শনিবার বিকেলে বটতলি রেলস্টেশনে এই দুজনের মতো আরও কয়েকজনের দেখা মেলে। শুধু রেলস্টেশন চত্বর নয়, নগরের নিউমার্কেট থেকে বিআরটিসি মোড় পর্যন্ত ফুটপাতের বিভিন্ন অংশ, সিআরবি এলাকা, ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকা, সাগরিকা বাসস্টেশন এলাকা, বাকলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদকসেবী শিশু-কিশোরদের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। এদের অধিকাংশই পথশিশু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ থেকে ৪০ টাকায় একধরনের জুতার গাম কেনে শিশুরা। নগরের প্রায় সব এলাকার দোকানেই এসব জুতার গাম সহজলভ্য। পলিথিনের ব্যাগে আঠাল ওই পদার্থ নিয়ে কিছুক্ষণ ঝাঁকানো হয়। তারপর পলিথিন থেকে নাক বা মুখ দিয়ে বাতাস টেনে নেয়। এই নেশা ‘ড্যান্ডি’ নামেই পরিচিত। এ ছাড়া বটতলি, ষোলশহর রেলস্টেশন চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হয় গাঁজা ও ফেনসিডিল। বটতলি স্টেশনের ওই দুই শিশু বলে, ‘সারা দিন কাজকাম করলে এক শ ট্যাকা হয়। কোনো দিন ট্যাকা বেশি পাইলে ড্যান্ডি খাই। টাকা কম হইলে খাই গাঁজা। ড্যান্ডি খাইলে ক্ষুধা লাগে না, মাথা ঝিম ঝিম করে। ভালাই লাগে।’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, মাদকাসক্তি থেকে মাদক বিক্রি ও পরিবহনের কাজে জড়িয়ে পড়ছে কোনো কোনো শিশু-কিশোর। পাশাপাশি মাদকদ্রব্য কেনার টাকা জোগাড় করতে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করছে অল্প বয়সী মাদকাসক্তরা।
নগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প খরচের মাদক ‘গাম’- এর প্রতি আসক্তি সবচেয়ে বেশি। বয়স ও সামর্থ্য ভেদে নেশার উপকরণেও পার্থক্য আছে। আট থেকে ১০ বছর বয়সের শিশুরা সাধারণত গাঁজা, সিগারেট ও গাম সেবন করে। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা ফেনসিডিল ও হেরোইন সেবন করে। মধ্যবিত্ত বা উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারের কিশোর-যুবকদের নেশার অন্যতম উপকরণ ইয়াবা। নগরের পাহাড়তলি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানস বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২৮ মে রাত দুইটায় ইস্পাহানি সি গেট এলাকা থেকে ১৫-১৬ বছরের দুজনকে গ্রেপ্তার করি। দুজনেরই পায়ের সঙ্গে রাবার দিয়ে ছুরি আটকানো ছিল। এরা সাধারণত রাতে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে। মাদকের টাকা জোগাড় করতেই এ কাজ করে বলে ওই দুজন জানায়।’
নগরের কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলস্টেশন চত্বর, বিআরটিসি ও সিআরবি এলাকায় উঠতি বয়সী কিছু মাদকাসক্তের দেখা মেলে। মাদকের টাকা জোগাড়ের জন্য তারা চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময় আমরা হকার সমিতি ও ছিন্নমূল মানুষদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করি।’
এ বিষয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অপরাজেয় বাংলার প্রকল্প সমন্বয়কারী মাহাবুব উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নগরে আমরা ১২ বছর ধরে পথশিশুদের আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করছি। আমাদের কেন্দ্রের শিশুদের মধ্যে মাদকাসক্তির পরিমাণ কম। তবে অন্য পথশিশুরা বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত। এখন শিশু- কিশোরদের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত নেশা হচ্ছে “ড্যান্ডি”। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অল্প বয়সীরা মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।’
এ ব্যাপারে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ- কমিশনার মো. তারেক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মাদক পরিবহন ও বিক্রি অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় অনেকেই সাজা ভোগের পরও এ কাজ করে। বয়সের বাধ্যবাধকতার কারণে অনেক সময় কিশোরদের বিরুদ্ধে মামলা করাও কঠিন হয়। সংখ্যায় খুব বেশি না হলেও দরিদ্র শিশুদের একাংশ মাদক পরিবহন ও বিক্রিতে জড়িয়ে পড়ছে। চট্টগ্রামে শিশু-কিশোর সংশোধনকেন্দ্র করে এসব কাজে জড়িত শিশু-কিশোরদের সঠিক পথে আনা যেতে পারে। প্রয়োজনে তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ থেকে ৪০ টাকায় একধরনের জুতার গাম কেনে শিশুরা। নগরের প্রায় সব এলাকার দোকানেই এসব জুতার গাম সহজলভ্য। পলিথিনের ব্যাগে আঠাল ওই পদার্থ নিয়ে কিছুক্ষণ ঝাঁকানো হয়। তারপর পলিথিন থেকে নাক বা মুখ দিয়ে বাতাস টেনে নেয়। এই নেশা ‘ড্যান্ডি’ নামেই পরিচিত। এ ছাড়া বটতলি, ষোলশহর রেলস্টেশন চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হয় গাঁজা ও ফেনসিডিল। বটতলি স্টেশনের ওই দুই শিশু বলে, ‘সারা দিন কাজকাম করলে এক শ ট্যাকা হয়। কোনো দিন ট্যাকা বেশি পাইলে ড্যান্ডি খাই। টাকা কম হইলে খাই গাঁজা। ড্যান্ডি খাইলে ক্ষুধা লাগে না, মাথা ঝিম ঝিম করে। ভালাই লাগে।’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, মাদকাসক্তি থেকে মাদক বিক্রি ও পরিবহনের কাজে জড়িয়ে পড়ছে কোনো কোনো শিশু-কিশোর। পাশাপাশি মাদকদ্রব্য কেনার টাকা জোগাড় করতে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করছে অল্প বয়সী মাদকাসক্তরা।
নগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প খরচের মাদক ‘গাম’- এর প্রতি আসক্তি সবচেয়ে বেশি। বয়স ও সামর্থ্য ভেদে নেশার উপকরণেও পার্থক্য আছে। আট থেকে ১০ বছর বয়সের শিশুরা সাধারণত গাঁজা, সিগারেট ও গাম সেবন করে। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা ফেনসিডিল ও হেরোইন সেবন করে। মধ্যবিত্ত বা উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারের কিশোর-যুবকদের নেশার অন্যতম উপকরণ ইয়াবা। নগরের পাহাড়তলি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানস বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২৮ মে রাত দুইটায় ইস্পাহানি সি গেট এলাকা থেকে ১৫-১৬ বছরের দুজনকে গ্রেপ্তার করি। দুজনেরই পায়ের সঙ্গে রাবার দিয়ে ছুরি আটকানো ছিল। এরা সাধারণত রাতে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে। মাদকের টাকা জোগাড় করতেই এ কাজ করে বলে ওই দুজন জানায়।’
নগরের কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলস্টেশন চত্বর, বিআরটিসি ও সিআরবি এলাকায় উঠতি বয়সী কিছু মাদকাসক্তের দেখা মেলে। মাদকের টাকা জোগাড়ের জন্য তারা চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময় আমরা হকার সমিতি ও ছিন্নমূল মানুষদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করি।’
এ বিষয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অপরাজেয় বাংলার প্রকল্প সমন্বয়কারী মাহাবুব উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নগরে আমরা ১২ বছর ধরে পথশিশুদের আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করছি। আমাদের কেন্দ্রের শিশুদের মধ্যে মাদকাসক্তির পরিমাণ কম। তবে অন্য পথশিশুরা বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত। এখন শিশু- কিশোরদের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত নেশা হচ্ছে “ড্যান্ডি”। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অল্প বয়সীরা মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।’
এ ব্যাপারে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ- কমিশনার মো. তারেক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মাদক পরিবহন ও বিক্রি অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় অনেকেই সাজা ভোগের পরও এ কাজ করে। বয়সের বাধ্যবাধকতার কারণে অনেক সময় কিশোরদের বিরুদ্ধে মামলা করাও কঠিন হয়। সংখ্যায় খুব বেশি না হলেও দরিদ্র শিশুদের একাংশ মাদক পরিবহন ও বিক্রিতে জড়িয়ে পড়ছে। চট্টগ্রামে শিশু-কিশোর সংশোধনকেন্দ্র করে এসব কাজে জড়িত শিশু-কিশোরদের সঠিক পথে আনা যেতে পারে। প্রয়োজনে তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার।
No comments