পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে সাহায্য ও বিজয় দান করেন
১৩. ক্বাদ কা-না লাকুম আ-ইয়াতুন ফী ফিআতাইনিল তাক্বাতা_; ফিআতুন তুক্বা-তিলু ফী ছাবীলিল্লাহি, ওয়া উখরা- কা-ফিরাতুন ইয়ারাওনাহুম মিছলাইহিম রা'ইয়াল আ'ইনি; ওয়াল্লাহু ইউআয়্যিদু বিনাসরিহি মাইঁয়্যাশা-উ; ইন্না ফী যা-লিকা লাই'বরাতাল লিউলিল আবসা-র।
১৪. যুয়্যিনা লিন্না-ছি হুব্বুশ্ শাহাওয়াতি মিনা নি্নছা-য়ি ওয়ালবানীনা ওয়ালক্বানা-ত্বীরিল মুক্বানত্বারাতি মিনায্ যাহাবি ওয়ালফিদ্দাতি ওয়ালখাইলিল মুছাওয়্যামাতি ওয়ালআনআ'-মি ওয়ালহার্ছি; যা-লিকা মাতা-উ'ল হাইয়া-তিদ্ দুনিয়া-; ওয়াল্লাহু ই'নদাহু হুছনুল মাআব। [সূরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩-১৪]
অনুবাদ : ১৩. তোমাদের জন্য কিছু শিক্ষণীয় নিদর্শন ছিল যে দুইটি দলের মধ্যে যারা সম্মুখসমরে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। এদের মধ্যে একদল লড়ছিল আল্লাহর পথে আর অপর বাহিনীটি ছিল অবিশ্বাসী কাফেরদের, তারা চর্মচক্ষু দিয়ে তাদের প্রতিপক্ষকে দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিল। আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে সাহায্য ও বিজয় দান করেন। এসব ঘটনার মাঝে সেসব লোকের জন্য অনেক কিছু শেখার আছে, যারা অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন।
১৪. নারী সানি্নধ্যের প্রতি কামনা, সন্তান-সন্তুতি, কাঁড়ি কাঁড়ি সোনা-রুপা, পছন্দসই ঘোড়া, গবাদিপশুর পাল ও জমিনের ফসল এসবই মানুষের জন্য লোভনীয় করে রাখা হয়েছে। এসব হচ্ছে পার্থিব জীবনের কিছু ভোগের সামগ্রী। উৎকৃষ্ট অবলম্বন তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছেই রয়েছে।
ব্যাখ্যা : ১৩ নম্বর আয়াতটিতে বদরের যুদ্ধের কথাই বলা হয়েছে। এই যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর বাহিনীতে যোদ্ধা ছিল ৩১৩ জন আর কোরাইশদের বাহিনীতে যোদ্ধা ছিল এক হাজারের ওপরে। তিনগুণ বেশি শক্তি-সামর্থ্য নিয়েও কোরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানের বাহিনী মুসলমানদের কাছে পরাজিত হয়েছিল। এখানে সত্যের পক্ষে মুসলমানদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে বলা হয়েছে, কাফেরদের অসহায়ত্ব ও নৈতিক দুর্বলতার কথা। কাফেররা চর্মচক্ষু দিয়েই মুসলমানদের দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিল। এটা এ কারণেই হয়েছিল যে কোরাইশরা ছিল মিথ্যা-অহমিকা ও ভ্রান্তপথের ওপর। আর রাসুল (সা.)-এর নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনী ছিল সত্যের পথে এবং সত্যের প্রতিভূ। সত্যের কাছে মিথ্যা সব সময়ই দুর্বল এবং অসহায়। 'আল্লাহ তায়ালা যাকে চান সাহায্য ও বিজয় দান করেন।' এ কথার অর্থ আল্লাহ সত্যকে বিজয় দান করেন এবং মিথ্যাকে পরাস্ত করেন। কারণ, আল্লাহ নিজে সত্য ও ন্যায়। তিনি শুধু দেখতে চান, তাঁর বান্দাদের কারা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে নির্ভিকচিত্তে দাঁড়ায়। বদরের যুদ্ধে মুসলমানরা নির্ভিকচিত্তে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং মিথ্যা ও বাতিলের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল। এ কারণেই কাফেররা তাদের দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিল এবং নিজেরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গিয়েছিল।
১৪ নম্বর আয়াতে ইহজাগতিক জীবনের বাস্তব চিত্র এবং এর বাহ্যিক চাকচিক্যের আসারতার মর্মকথা তুলে ধরা হয়েছে। লাস্যময়ী নারী, মায়াময় সন্তান এবং ধন-সম্পত্তির মোহে মানুষ মোহগ্রস্ত হয়ে থাকে। এসব পার্থিব জীবনের ভোগের সামগ্রীর কথা এখানে স্বীকার করা হয়েছে। এগুলো জীবনের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু এগুলোই জীবনের পরম পাওয়া নয়, শেষ কথা নয়। এগুলো অতি সাধারণ ভোগের সামগ্রী মাত্র। ভোগে জীবনের পরম পরিতৃপ্তি নয়, মানবজীবন এর চেয়ে অনেক বড় ও মহৎ। মানুষের জন্য এর চেয়ে উৎকৃষ্ট অবলম্বন আল্লাহর কাছে রয়েছে। সেটা আল্লার নৈকট্য, এটাই জীবনের পরম পরিতৃপ্তি। মানবজীবনের পরম লক্ষ্য, সেই উন্নততর স্তরে উপনীত হওয়া।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৩. তোমাদের জন্য কিছু শিক্ষণীয় নিদর্শন ছিল যে দুইটি দলের মধ্যে যারা সম্মুখসমরে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। এদের মধ্যে একদল লড়ছিল আল্লাহর পথে আর অপর বাহিনীটি ছিল অবিশ্বাসী কাফেরদের, তারা চর্মচক্ষু দিয়ে তাদের প্রতিপক্ষকে দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিল। আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে সাহায্য ও বিজয় দান করেন। এসব ঘটনার মাঝে সেসব লোকের জন্য অনেক কিছু শেখার আছে, যারা অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন।
১৪. নারী সানি্নধ্যের প্রতি কামনা, সন্তান-সন্তুতি, কাঁড়ি কাঁড়ি সোনা-রুপা, পছন্দসই ঘোড়া, গবাদিপশুর পাল ও জমিনের ফসল এসবই মানুষের জন্য লোভনীয় করে রাখা হয়েছে। এসব হচ্ছে পার্থিব জীবনের কিছু ভোগের সামগ্রী। উৎকৃষ্ট অবলম্বন তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছেই রয়েছে।
ব্যাখ্যা : ১৩ নম্বর আয়াতটিতে বদরের যুদ্ধের কথাই বলা হয়েছে। এই যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর বাহিনীতে যোদ্ধা ছিল ৩১৩ জন আর কোরাইশদের বাহিনীতে যোদ্ধা ছিল এক হাজারের ওপরে। তিনগুণ বেশি শক্তি-সামর্থ্য নিয়েও কোরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানের বাহিনী মুসলমানদের কাছে পরাজিত হয়েছিল। এখানে সত্যের পক্ষে মুসলমানদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে বলা হয়েছে, কাফেরদের অসহায়ত্ব ও নৈতিক দুর্বলতার কথা। কাফেররা চর্মচক্ষু দিয়েই মুসলমানদের দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিল। এটা এ কারণেই হয়েছিল যে কোরাইশরা ছিল মিথ্যা-অহমিকা ও ভ্রান্তপথের ওপর। আর রাসুল (সা.)-এর নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনী ছিল সত্যের পথে এবং সত্যের প্রতিভূ। সত্যের কাছে মিথ্যা সব সময়ই দুর্বল এবং অসহায়। 'আল্লাহ তায়ালা যাকে চান সাহায্য ও বিজয় দান করেন।' এ কথার অর্থ আল্লাহ সত্যকে বিজয় দান করেন এবং মিথ্যাকে পরাস্ত করেন। কারণ, আল্লাহ নিজে সত্য ও ন্যায়। তিনি শুধু দেখতে চান, তাঁর বান্দাদের কারা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে নির্ভিকচিত্তে দাঁড়ায়। বদরের যুদ্ধে মুসলমানরা নির্ভিকচিত্তে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং মিথ্যা ও বাতিলের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল। এ কারণেই কাফেররা তাদের দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিল এবং নিজেরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গিয়েছিল।
১৪ নম্বর আয়াতে ইহজাগতিক জীবনের বাস্তব চিত্র এবং এর বাহ্যিক চাকচিক্যের আসারতার মর্মকথা তুলে ধরা হয়েছে। লাস্যময়ী নারী, মায়াময় সন্তান এবং ধন-সম্পত্তির মোহে মানুষ মোহগ্রস্ত হয়ে থাকে। এসব পার্থিব জীবনের ভোগের সামগ্রীর কথা এখানে স্বীকার করা হয়েছে। এগুলো জীবনের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু এগুলোই জীবনের পরম পাওয়া নয়, শেষ কথা নয়। এগুলো অতি সাধারণ ভোগের সামগ্রী মাত্র। ভোগে জীবনের পরম পরিতৃপ্তি নয়, মানবজীবন এর চেয়ে অনেক বড় ও মহৎ। মানুষের জন্য এর চেয়ে উৎকৃষ্ট অবলম্বন আল্লাহর কাছে রয়েছে। সেটা আল্লার নৈকট্য, এটাই জীবনের পরম পরিতৃপ্তি। মানবজীবনের পরম লক্ষ্য, সেই উন্নততর স্তরে উপনীত হওয়া।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments