কোণঠাসা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ দরকার টেকসই পদক্ষেপ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে পাড়ি দিতে হচ্ছে এক অসময়ের কঠিন আবর্ত। মূলত পরিবেশ নিয়ে একটি সামষ্টিক গবেষণা ও একটি টেকসই উন্নয়নের নেতৃত্বের মহৎ চিন্তা নিয়েই ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত গবেষক ও বিজ্ঞানী ড. সৈয়দ সফিউল্লাহ স্যারের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ।


শুরু থেকেই শ্রেণীকক্ষ সংকট, শিক্ষকদের কক্ষ সংকট, গবেষণাগারের জায়গার অভাব ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে শ্রেণীকক্ষ ভাগাভাগি করেই পরিচালিত হয় শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষকদের আন্তরিকতা আর ছাত্রছাত্রীদের প্রবল ইচ্ছার কারণেই এত বাধাবিপত্তি পেরিয়েও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাতটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করে দেশের স্বনামধন্য ছয়টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। পরিবেশ মেলায় কয়েকবার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এ বিভাগের জাপানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেই রয়েছে মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমইউ)। তাছাড়াও পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিভাগটি।
১৩ বছর অতিবাহিত করেও শুরুর সেই জরাজীর্ণ, অন্য বিভাগের সঙ্গে শ্রেণীকক্ষ ভাগাভাগি করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ১৯৯৯ সালের সেই ছোট্ট বিভাগটি আজ কয়েকশ' সম্ভাবনাময়ী তরুণ পরিবেশ বিজ্ঞানীর পদচারণায় মুখরিত। কিন্তু এই সম্ভাবনা দিনের পর দিন ক্ষীণই হয়ে আসছে শুধু শ্রেণীকক্ষ ও গবেষণার জায়গার অভাবে। প্রায় সময়ই দুটি ব্যাচের ক্লাস চলাকালে অন্য ছাত্রছাত্রীদের বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। গবেষণাগারের অনেক যন্ত্রপাতিই জায়গার অভাবে এক কক্ষে স্তূপ করে রেখে দিতে হচ্ছে। একই সময়ে শুরু হওয়া অনেক বিভাগের থেকে অবকাঠামোগতভাবে অনেকাংশেই সুবিধাবঞ্চিত পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ। বিভাগের সব ছাত্রছাত্রীই তাদের ক্লাস, পরীক্ষা বর্জন করছে নিজেদের শ্রেণীকক্ষ ও গবেষণার জায়গাসহ অন্যান্য নূ্যনতম অধিকার আদায়ের জন্য। একটি সুন্দর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাই আগামী বাংলাদেশের সুন্দর পরিবেশ গঠনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে এ বিভাগের তরুণ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এগিয়ে নিয়ে যাবে অনেক দূর। আর তাই দীর্ঘসূত্রতায় ভারাক্রান্ত না হয়ে এই তরুণ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের চলার পথ সুগম করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনের একটি কার্যকরী ও টেকসই পদক্ষেপ সবারই কাম্য।

সলেখকরা : শিক্ষার্থী, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.