এখান থেকেই সুন্দর ভবিষ্যতের শুরু-প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা

পাঁচ বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা শেষে শিশু শিক্ষার্থীদের যে পরীক্ষা চলছে, তা একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিরাট উৎসাহের বিষয়, তেমনই সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যও গুরুত্ববহ। আগে এ অধ্যায়টি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় সম্পন্ন হতো। তা ছিল অনেকটাই নিষ্প্রাণ।


গত বছর থেকে এ পরীক্ষা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে তৃণমূল পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যে সনদ পাওয়া যাবে, তা শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার পথে হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ছাড়পত্র। এটা শিশুদের জন্য বিরাট অনুপ্রেরণার উৎস। তাই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এ বছর প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে। অবশ্য প্রায় পৌনে তিন লাখ অনুপস্থিত ছিল। তা সত্ত্বেও এই পরীক্ষাই দেশের সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুষ্ঠুভাবে এ পরীক্ষা সম্পন্ন করা আসলে অধিদপ্তরেরই একটি পরীক্ষা। ছোটখাটো ভুলত্রুটি, সমস্যা কিছু থাকতেই পারে। তবে বড় ধরনের কোনো সমস্যা যে এখনো হয়নি, তার কারণ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পর্যাপ্ত মনোযোগ ও তৎপরতা। সেদিক থেকে অধিদপ্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বলা যায়।
তবে একটি বিষয় সত্যিই পীড়াদায়ক। প্রথম তিন দিনের পরীক্ষায় চার শর কিছু বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে বহিষ্কৃত হয়েছে। নওগাঁর পোরশা উপজেলায় ১৫ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী ধরা পড়েছে। আরও বড় দুঃসংবাদ হলো, তাদের সহযোগিতার দায়ে চার শিক্ষিকাকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হবে সততার আদর্শ, কোনোভাবেই তাদের কোনো অসাধু কাজে লিপ্ত হতে দেওয়া যায় না। যারা সেই সুশিক্ষা দেবেন, সেই শিক্ষকেরাই যদি অপরাধে লিপ্ত হন, তাহলে সমাজে ভালো কিছুর উদাহরণ সৃষ্টি করবে কে? যদিও এদের সংখ্যা কম, কিন্তু সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখতে হবে। সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে শিশুদের সুন্দরভাবে বড় হওয়ার ওপর। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে এদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
বাংলা প্রবাদে বলা হয়, সকালের দুই মুঠি, সারা দিনের খুঁটি। প্রাথমিক শিক্ষা হলো সারা জীবনের সুশিক্ষার ভিত্তি। যেকোনো মূল্যে একে শক্ত গাঁথুনির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা সে দিক থেকে সুন্দর ভবিষ্যতের দ্বারোদ্ঘাটনের ভূমিকা পালন করতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.