এক রেকর্ড দুবার!
ব্রায়ান লারার রেকর্ড পুনরুদ্ধারের অষ্টম বর্ষপূর্তি হলো সম্প্রতি। ম্যাথু হেইডেনের কাছে খোয়ানো সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসের রেকর্ড আবার নিজের করে নিয়েছিলেন ২০০৪ সালের এপ্রিলে। রেকর্ড পুনরুদ্ধার কিংবা নিজেকে ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়া—এমন কিছু কীর্তি এবং কীর্তিমানের কথা জানাচ্ছেন আরিফুল ইসলাম
দেজাভূ! ঠিক যেন ১০ বছর আগের টুকরো টুকরো দৃশ্যগুলোর পুনরাভিনয়। ১৮ এপ্রিল, ১৯৯৪-এর অ্যান্টিগা রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল ২০০৪ সালের ১২ এপ্রিলে। সেই উপচেপড়া গ্যালারির উচ্ছ্বাস, একই রকম হাসিতে গ্যালারিতে স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্সের উপস্থিতি। আবারও গ্যালারিতে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু থেকে রাষ্ট্রের হর্তাকর্তারা, কিছুক্ষণের জন্য অসহায়ত্ব মুছে গিয়ে ইংলিশ ক্রিকেটারদের চোখে-মুখে মুগ্ধতা, এগিয়ে গিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত অভিনন্দন জানানো। আবারও হাঁটু গেড়ে পিচে চুমু, আর দুই হাত উঁচিয়ে যেন অভাবনীয় উচ্চতায় ওঠার ইঙ্গিত। ব্রায়ান লারার অসাধ্য সাধন!
অপরাজিত ৪০০ রানের ওই ইনিংসটা অনেকের কাছেই লারার গ্রেটনেসের চূড়ান্ত উদাহরণ। গ্রেটদের কাতারে নাম লিখিয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু ওই ইনিংসটা যেন সিল-ছাপ্পর মেরে গ্রেটনেস একদম পাকাপোক্ত করেছিল। ক্রিকেটের বাইবেল উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাক লিখেছিল, ‘যেভাবে ব্যাট করছিলেন, ইনিংস ঘোষণা না করলে লারা হয়তো ৫০০-৬০০ করে ফেলতেন।’ তবে স্রেফ ইতিহাসের প্রথম কোয়াড্রপল সেঞ্চুরি বা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরির চেয়েও বেশি ছিল ওই ইনিংসের মহিমা। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড হাতবদল হয়েছে ১০ বার, কিন্তু পুনরুদ্ধার করতে পেরেছেন একমাত্র লারাই! সেটাও ম্যাথু হেইডেনের (৩৮০) কাছে রেকর্ড হারানোর মাত্র ১৮৫ দিন পরই।
লারার মতো আছেন আরও কয়েকজন, যাঁরা নিজের হারানো এমন বড় কোনো রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেছেন বা ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকেই। প্রথমেই শচীন টেন্ডুলকারের নাম আসবে। টেস্ট-ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড তো প্রতি মুহূর্তেই নতুন করে গড়ছেন টেন্ডুলকার, প্রতিটি রানের সঙ্গে হচ্ছে নতুন রেকর্ড। তেমনি সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিসহ টেন্ডুলকারের আরও একগাদা কীর্তির ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি। টেন্ডুলকারকে হিসাবের বাইরে রেখে তাই দৃষ্টি দেওয়া যাক সমসাময়িক আরেক গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরনের দিকে। টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার। তাঁর রেকর্ড ছোঁয়া তো বহু দূর, কাছাকাছিও কাউকে যেতে আমাদের জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারব কি না, সংশয় আছে। তো ওই চূড়ায় নিশ্চিন্ত অবস্থানের আগে কিন্তু মুরালির জোর লড়াই হয়েছে আরেক গ্রেট শেন ওয়ার্নের সঙ্গে! ওয়ার্ন-মুরালি দৃশ্যপটে আসার আগে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ছিলেন কোর্টনি ওয়ালশ (৫১৯)। ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলারকে মুরালি পেছনে ফেলেন ২০০৪ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে। তবে ওই বছরই আবার মুরালিকে পেছনে ফেলেন ওয়ার্ন। অবশ্য সবারই জানা ছিল, রেকর্ডটি একদিন আবার মুরালির হবে। হয়েছেও। ২০০৭ সালে অবসর নেন ওয়ার্ন (৭০৮), ২০০৮ সালে রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেন মুরালি। পরে ক্যারিয়ারের শেষ বলে উইকেট নিয়ে ছুঁয়েছেন ৮০০।
সাকলায়েন মুশতাকের পরিচিতি মূলত ‘দুসরা’র জনক হিসেবে। অনেকেই ভুলে যান, একসময় বিশ্বসেরা অফ স্পিনারের জায়গাটা নিয়ে মুরালির সঙ্গে জোর লড়াই করেছেন সাকলায়েনের। ১৯৯৯-২০০০ সালের দিকে তো সাকলায়েনই ছিলেন এগিয়ে। ১৯৯৫ সালে অভিষেক হলেও সাকলায়েন ক্রিকেট বিশ্বে হইচই ফেলে দিলেন পরের বছর, ওয়ানডেতে ৬৫ উইকেট নিয়ে। এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড! পরের বছর, মানে ১৯৯৭ সালেই আবার নিজেকে ছাড়ালেন সাকলায়েন, এবার ৬৯ উইকেট! এখনো এই রেকর্ডের শীর্ষ দুইয়ে সাকলায়েন।
এবার বেশ খানিকটা পেছনে যাওয়া যাক। গ্রেট ব্যাটসম্যানের ‘প্রাথমিক শর্ত’ পূরণ করতে পারেননি বিল পন্সফোর্ড, টেস্ট গড় ‘মাত্র’ ৪৮.২২। ২৯ টেস্টে ৭ সেঞ্চুরি অবশ্য বলছে ব্যাটিংটা খারাপ করতেন না তিনি! আর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তো তাঁর আছে অতিমানবীয় সব কীর্তি। ট্রিপল সেঞ্চুরিই আছে চারটি, এর চেয়ে বেশি আছে কেবল স্যার ডন ব্র্যাডম্যানেরই। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে পন্সফোর্ডের (৬৫.১৮) চেয়ে বেশি গড় আছে আর কেবল পাঁচজনের। আছে টানা ১০ ম্যাচে সেঞ্চুরির অনন্য কীর্তি। আছে এমন এক কীর্তি, যা নেই ইতিহাসে আর কারও—প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে দুটো কোয়াড্রপল সেঞ্চুরি বা ৪০০ রানের ইনিংস। প্রথমটি ১৯২৩ সালে, তাসমানিয়ার বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার ওপেনার করেছিলেন ৪২৯। ভেঙে দিয়েছিলেন ১৮৯৫ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে গড়া আর্চি ম্যাকলরেনের রেকর্ড (৪২৪)। তিন বছর পর নিজের বিশ্ব রেকর্ডই ভেঙে দিলেন পন্সফোর্ড, এবার কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৩৭!
পন্সফোর্ডের কীর্তির হাত ধরেই চলে আসে তাঁর দল ভিক্টোরিয়ার রেকর্ড। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে হাজার রানের দুটো দলীয় ইনিংস আছে, দুটোই পন্সফোর্ডের ভিক্টোরিয়ার। পন্সফোর্ডের প্রথম কোয়াড্রপল সেঞ্চুরির ইনিংসে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট হাজার রানের ইনিংস দেখেছিল প্রথম। পন্সফোর্ডের ৪২৯, হ্যামি লাভের ১৫৬ রানের সঙ্গে আরও চার ফিফটিতে ১৯২৩ সালে মেলবোর্নে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ভিক্টোরিয়া তুলেছিল ১০৫৯। ১৯২৬ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে মেলবোর্নেই নিজেদের ছাড়িয়ে গেল ভিক্টোরিয়া। খুব বেশি ওভার লাগেনি কিন্তু, ১৯০.৭ ওভারে অলআউট ১১০৭! এবার অবশ্য পন্সফোর্ডের অবদান কমই, ‘মাত্র’ ৩৫২। সঙ্গে জ্যাক রাইডার ২৯৫, বিল উডফুলের ১৩৩, স্টর্ক হেনড্রির ১০০ আর দুটো ফিফটি।
ওয়ানডেতে এই কীর্তি আছে শ্রীলঙ্কার। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে তাদের করা ৩৯৮ ওয়ানডের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস রেকর্ড হিসেবে অক্ষত ছিল ১০ বছর। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গের পাগলাটে এক দিনে প্রথমে অস্ট্রেলিয়া, পরে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু চার মাসের মধ্যে রেকর্ডটি আবারও নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা হল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪৩ রান তুলে!
গাদা গাদা কীর্তির কথা ভেবে টেন্ডুলকারকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে শুরুতেই। তবে তাঁর দুটো রেকর্ড বোধ হয় এখানে টানাই যায়। একটি অবশ্য ঠিক বিশ্ব রেকর্ড নয়, বিশ্বকাপ রেকর্ড। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে গ্রাহাম গুচের করা ৪৭১ রানের রেকর্ড টেন্ডুলকার ভেঙেছিলেন ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ৫২৩ করে। ২০০৩ সালে অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে সেটাকেও ছাড়িয়ে করেছিলেন ৬৭৩, যা এখনো রেকর্ড। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের পাশাপাশি ১৯৯৬ সালে আরও এক কীর্তি গড়েছিলেন টেন্ডুলকার। বছরে ১৬১১ রান করে ভেঙে দিয়েছিলেন এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ওয়ানডে রানের ব্রায়ান লারার রেকর্ড (১৩৪৯)। ১৯৯৮ সালে নিজেকেও ছাড়িয়ে টেন্ডুলকার করলেন ১৮৯৪। এই রেকর্ড টিকে আছে এখনো।
রেকর্ড বই খুঁজলে পাওয়া যাবে হয়তো আরও এমন কিছু কীর্তি। আজ না হয় এতটুকুই থাকুক!
অপরাজিত ৪০০ রানের ওই ইনিংসটা অনেকের কাছেই লারার গ্রেটনেসের চূড়ান্ত উদাহরণ। গ্রেটদের কাতারে নাম লিখিয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু ওই ইনিংসটা যেন সিল-ছাপ্পর মেরে গ্রেটনেস একদম পাকাপোক্ত করেছিল। ক্রিকেটের বাইবেল উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাক লিখেছিল, ‘যেভাবে ব্যাট করছিলেন, ইনিংস ঘোষণা না করলে লারা হয়তো ৫০০-৬০০ করে ফেলতেন।’ তবে স্রেফ ইতিহাসের প্রথম কোয়াড্রপল সেঞ্চুরি বা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরির চেয়েও বেশি ছিল ওই ইনিংসের মহিমা। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড হাতবদল হয়েছে ১০ বার, কিন্তু পুনরুদ্ধার করতে পেরেছেন একমাত্র লারাই! সেটাও ম্যাথু হেইডেনের (৩৮০) কাছে রেকর্ড হারানোর মাত্র ১৮৫ দিন পরই।
লারার মতো আছেন আরও কয়েকজন, যাঁরা নিজের হারানো এমন বড় কোনো রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেছেন বা ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকেই। প্রথমেই শচীন টেন্ডুলকারের নাম আসবে। টেস্ট-ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড তো প্রতি মুহূর্তেই নতুন করে গড়ছেন টেন্ডুলকার, প্রতিটি রানের সঙ্গে হচ্ছে নতুন রেকর্ড। তেমনি সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিসহ টেন্ডুলকারের আরও একগাদা কীর্তির ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি। টেন্ডুলকারকে হিসাবের বাইরে রেখে তাই দৃষ্টি দেওয়া যাক সমসাময়িক আরেক গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরনের দিকে। টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার। তাঁর রেকর্ড ছোঁয়া তো বহু দূর, কাছাকাছিও কাউকে যেতে আমাদের জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারব কি না, সংশয় আছে। তো ওই চূড়ায় নিশ্চিন্ত অবস্থানের আগে কিন্তু মুরালির জোর লড়াই হয়েছে আরেক গ্রেট শেন ওয়ার্নের সঙ্গে! ওয়ার্ন-মুরালি দৃশ্যপটে আসার আগে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ছিলেন কোর্টনি ওয়ালশ (৫১৯)। ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলারকে মুরালি পেছনে ফেলেন ২০০৪ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে। তবে ওই বছরই আবার মুরালিকে পেছনে ফেলেন ওয়ার্ন। অবশ্য সবারই জানা ছিল, রেকর্ডটি একদিন আবার মুরালির হবে। হয়েছেও। ২০০৭ সালে অবসর নেন ওয়ার্ন (৭০৮), ২০০৮ সালে রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেন মুরালি। পরে ক্যারিয়ারের শেষ বলে উইকেট নিয়ে ছুঁয়েছেন ৮০০।
সাকলায়েন মুশতাকের পরিচিতি মূলত ‘দুসরা’র জনক হিসেবে। অনেকেই ভুলে যান, একসময় বিশ্বসেরা অফ স্পিনারের জায়গাটা নিয়ে মুরালির সঙ্গে জোর লড়াই করেছেন সাকলায়েনের। ১৯৯৯-২০০০ সালের দিকে তো সাকলায়েনই ছিলেন এগিয়ে। ১৯৯৫ সালে অভিষেক হলেও সাকলায়েন ক্রিকেট বিশ্বে হইচই ফেলে দিলেন পরের বছর, ওয়ানডেতে ৬৫ উইকেট নিয়ে। এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড! পরের বছর, মানে ১৯৯৭ সালেই আবার নিজেকে ছাড়ালেন সাকলায়েন, এবার ৬৯ উইকেট! এখনো এই রেকর্ডের শীর্ষ দুইয়ে সাকলায়েন।
এবার বেশ খানিকটা পেছনে যাওয়া যাক। গ্রেট ব্যাটসম্যানের ‘প্রাথমিক শর্ত’ পূরণ করতে পারেননি বিল পন্সফোর্ড, টেস্ট গড় ‘মাত্র’ ৪৮.২২। ২৯ টেস্টে ৭ সেঞ্চুরি অবশ্য বলছে ব্যাটিংটা খারাপ করতেন না তিনি! আর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তো তাঁর আছে অতিমানবীয় সব কীর্তি। ট্রিপল সেঞ্চুরিই আছে চারটি, এর চেয়ে বেশি আছে কেবল স্যার ডন ব্র্যাডম্যানেরই। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে পন্সফোর্ডের (৬৫.১৮) চেয়ে বেশি গড় আছে আর কেবল পাঁচজনের। আছে টানা ১০ ম্যাচে সেঞ্চুরির অনন্য কীর্তি। আছে এমন এক কীর্তি, যা নেই ইতিহাসে আর কারও—প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে দুটো কোয়াড্রপল সেঞ্চুরি বা ৪০০ রানের ইনিংস। প্রথমটি ১৯২৩ সালে, তাসমানিয়ার বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার ওপেনার করেছিলেন ৪২৯। ভেঙে দিয়েছিলেন ১৮৯৫ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে গড়া আর্চি ম্যাকলরেনের রেকর্ড (৪২৪)। তিন বছর পর নিজের বিশ্ব রেকর্ডই ভেঙে দিলেন পন্সফোর্ড, এবার কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৩৭!
পন্সফোর্ডের কীর্তির হাত ধরেই চলে আসে তাঁর দল ভিক্টোরিয়ার রেকর্ড। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে হাজার রানের দুটো দলীয় ইনিংস আছে, দুটোই পন্সফোর্ডের ভিক্টোরিয়ার। পন্সফোর্ডের প্রথম কোয়াড্রপল সেঞ্চুরির ইনিংসে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট হাজার রানের ইনিংস দেখেছিল প্রথম। পন্সফোর্ডের ৪২৯, হ্যামি লাভের ১৫৬ রানের সঙ্গে আরও চার ফিফটিতে ১৯২৩ সালে মেলবোর্নে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ভিক্টোরিয়া তুলেছিল ১০৫৯। ১৯২৬ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে মেলবোর্নেই নিজেদের ছাড়িয়ে গেল ভিক্টোরিয়া। খুব বেশি ওভার লাগেনি কিন্তু, ১৯০.৭ ওভারে অলআউট ১১০৭! এবার অবশ্য পন্সফোর্ডের অবদান কমই, ‘মাত্র’ ৩৫২। সঙ্গে জ্যাক রাইডার ২৯৫, বিল উডফুলের ১৩৩, স্টর্ক হেনড্রির ১০০ আর দুটো ফিফটি।
ওয়ানডেতে এই কীর্তি আছে শ্রীলঙ্কার। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে তাদের করা ৩৯৮ ওয়ানডের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস রেকর্ড হিসেবে অক্ষত ছিল ১০ বছর। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গের পাগলাটে এক দিনে প্রথমে অস্ট্রেলিয়া, পরে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু চার মাসের মধ্যে রেকর্ডটি আবারও নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা হল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪৩ রান তুলে!
গাদা গাদা কীর্তির কথা ভেবে টেন্ডুলকারকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে শুরুতেই। তবে তাঁর দুটো রেকর্ড বোধ হয় এখানে টানাই যায়। একটি অবশ্য ঠিক বিশ্ব রেকর্ড নয়, বিশ্বকাপ রেকর্ড। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে গ্রাহাম গুচের করা ৪৭১ রানের রেকর্ড টেন্ডুলকার ভেঙেছিলেন ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ৫২৩ করে। ২০০৩ সালে অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে সেটাকেও ছাড়িয়ে করেছিলেন ৬৭৩, যা এখনো রেকর্ড। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের পাশাপাশি ১৯৯৬ সালে আরও এক কীর্তি গড়েছিলেন টেন্ডুলকার। বছরে ১৬১১ রান করে ভেঙে দিয়েছিলেন এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ওয়ানডে রানের ব্রায়ান লারার রেকর্ড (১৩৪৯)। ১৯৯৮ সালে নিজেকেও ছাড়িয়ে টেন্ডুলকার করলেন ১৮৯৪। এই রেকর্ড টিকে আছে এখনো।
রেকর্ড বই খুঁজলে পাওয়া যাবে হয়তো আরও এমন কিছু কীর্তি। আজ না হয় এতটুকুই থাকুক!
No comments