পরিবেশ বিনষ্টকারী এই প্রবণতা রুখতে হবে-সংরক্ষিত বনে তামাক চাষ

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় তিনটি সংরক্ষিত বনে পাঁচ শতাধিক তামাকচুল্লি নির্মাণ করা হয়েছে। এখন চলছে সংরক্ষিত বন থেকে কাঠ এনে তামাকপাতা শুকানোর প্রস্তুতি। এতে ১০ লাখ মণ কাঠ পোড়ানো হবে, যার সিংহভাগ আসবে এসব বন থেকে। এর ফলে পরিবেশ বিনষ্ট হবে এবং বনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।


গত শনিবার প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার সেখানে তিন গুণেরও বেশি জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। এই তামাক চাষ বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে বিভিন্ন তামাক উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা। বেশি টাকার প্রলোভন; চাষিদের বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ এবং উত্পাদিত তামাক কিনে নেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে আগ্রহী করে তোলার অভিযোগ উঠেছে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। এই বাড়তি তামাক চাষ হুমকির মধ্যে ফেলেছে সংরক্ষিত বনকে। বিপুল মুনাফার উদ্দেশ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ আইনকে এভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা ঠেকাতে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সংরক্ষিত বনে তামাক চাষের এমন বিস্তারের পেছনে বন বিভাগের তদারকির অভাব অনেকাংশে দায়ী। বন বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী যে বন ধ্বংসের কাজে সহায়তা করেন, তা নানা সময়ে দেখা গেছে। আবার লোকবলের সংকট, তাঁদের নিরাপত্তার অভাবজনিত ভীতির ফলে সৃষ্ট অসহায়ত্বের কথাও আমাদের অজানা নয়। বন বিভাগের বিদ্যমান নানা সমস্যা সমাধান করে বন রক্ষার কাজে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার কৌশল উদ্ভাবনও তাই জরুরি হয়ে পড়েছে।
সংরক্ষিত বনে তামাক চাষ বন্ধ করতে এবং বনের কাঠ ব্যবহার রোধে তামাকচুল্লিগুলোতে ঘন ঘন অভিযান চালানো প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.