চমেক হাসপাতাল-প্রসূতি ওয়ার্ডে ‘শুভাকাঙ্ক্ষীর’ উৎপাত by নিয়াজ তুহিন
বেলা ১১টা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের সামনে প্রচণ্ড হট্টগোল। ওয়ার্ডের প্রধান ফটকে রোগীর আত্মীয়স্বজনের হইচই। চিকিৎসকেরাও মহাব্যস্ত। কিছুক্ষণ পরপর আসছে রোগীর ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন)। কিন্তু ব্যবস্থাপত্র স্বজনের হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘিরে ধরছে কয়েকটি লোক।
কে কার আগে ব্যবস্থাপত্র নেবেন, সেই প্রতিযোগিতা তাঁদের মধ্যে। এরপর শুরু হয়ে যায় দৌড়ঝাঁপ। তাঁদের নিজেদের পছন্দের দোকানে নিয়ে যান ওষুধ কেনার জন্য। তাঁরা সবাই রোগীর কথিত ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’। আদতে ওষুধের দোকানের দালাল। কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করেন তাঁরা।
প্রসূতি ওয়ার্ডের এই চিত্র প্রতিদিনের। অভিযোগ রয়েছে, হাসাপাতালের কিছু ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের যোগসাজশে দালালেরা রোগীর স্বজনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মফস্বল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন সহজেই তাঁদের কথা বিশ্বাস করেন। পরে যখন বুঝতে পারেন দালালের খপ্পরে পড়েছেন, তখন আর কিছুই করার থাকে না।
খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়া থেকে স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখানে কোনো পরিচিতজন না থাকায় তাঁদের কথামতো মেডিকেল পূর্বগেটের একটি দোকান থেকে ওষুধ কিনি। কিন্তু পরে অন্য দোকানে দেখেছি, প্রতি ওষুধে গড়ে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এর পর থেকে আমি অন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনছি।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রসূতি ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা ১৯৮। কেবিন ২৩টি। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী।
রোগীর স্বজন পরিচয় দিয়ে কালাম নামের এক দালালের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘সব ধরনের ওষুধ আমার মাধ্যমে কিনতে পারবেন।’ দাম বেশি রাখবেন কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘অন্যদের চেয়ে আমার রেট অনেক কম।’
সূত্র জানায়, প্রসূতি ওয়ার্ডে দালালের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ জন। তাঁরা ওয়ার্ডের আশপাশেই ঘোরাফেরা করেন। দালালদের হাতে রোগী ও স্বজনেরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রসূতি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব আলম বলেন, ‘দালালদের দৌরাত্ম্য অবশ্যই আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার জানিয়েছি। এসব দালালের তৎপরতা বন্ধ করা জরুরি।’
ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের যোগসাজশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সবাই নন, কিছু কিছু ওয়ার্ডবয় জড়িত থাকতে পারে।’
এদিকে ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসাসেবাও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ী সজল বড়ুয়া বোন শাম্মী বড়ুয়াকে নিয়ে ২৯ এপ্রিল প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করান।
তিনি জানান, ডাক্তাররা জরুরি রক্তের প্রয়োজন বললে সন্ধানীর ব্লাড ব্যাংকে না পেয়ে এক আত্মীয়ের কল্যাণে রক্ত জোগাড় করেন।
কিন্তু সকাল ১১টায় রক্ত জোগাড় করলেও সেই রক্ত দেওয়া হয় বিকেল পাঁচটায়। ফলে তাঁর বোনের অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়।
ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় রোগীদের মরণদশা হয়। কিন্তু তাতেও কর্তৃপক্ষের কোনো টনক নড়েনি। অনেকবার বললেও তার বোনকে সিটে না রেখে মাটিতে রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডা. মাহবুব আলম বলেন, ‘চিকিৎসাসেবায় কোনো অবহেলা নেই। ধারণক্ষমতার চার-পাঁচগুণ বেশি রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তার পরও তো সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
প্রসূতি ওয়ার্ডের এই চিত্র প্রতিদিনের। অভিযোগ রয়েছে, হাসাপাতালের কিছু ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের যোগসাজশে দালালেরা রোগীর স্বজনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মফস্বল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন সহজেই তাঁদের কথা বিশ্বাস করেন। পরে যখন বুঝতে পারেন দালালের খপ্পরে পড়েছেন, তখন আর কিছুই করার থাকে না।
খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়া থেকে স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখানে কোনো পরিচিতজন না থাকায় তাঁদের কথামতো মেডিকেল পূর্বগেটের একটি দোকান থেকে ওষুধ কিনি। কিন্তু পরে অন্য দোকানে দেখেছি, প্রতি ওষুধে গড়ে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এর পর থেকে আমি অন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনছি।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রসূতি ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা ১৯৮। কেবিন ২৩টি। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী।
রোগীর স্বজন পরিচয় দিয়ে কালাম নামের এক দালালের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘সব ধরনের ওষুধ আমার মাধ্যমে কিনতে পারবেন।’ দাম বেশি রাখবেন কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘অন্যদের চেয়ে আমার রেট অনেক কম।’
সূত্র জানায়, প্রসূতি ওয়ার্ডে দালালের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ জন। তাঁরা ওয়ার্ডের আশপাশেই ঘোরাফেরা করেন। দালালদের হাতে রোগী ও স্বজনেরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রসূতি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব আলম বলেন, ‘দালালদের দৌরাত্ম্য অবশ্যই আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার জানিয়েছি। এসব দালালের তৎপরতা বন্ধ করা জরুরি।’
ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের যোগসাজশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সবাই নন, কিছু কিছু ওয়ার্ডবয় জড়িত থাকতে পারে।’
এদিকে ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসাসেবাও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ী সজল বড়ুয়া বোন শাম্মী বড়ুয়াকে নিয়ে ২৯ এপ্রিল প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করান।
তিনি জানান, ডাক্তাররা জরুরি রক্তের প্রয়োজন বললে সন্ধানীর ব্লাড ব্যাংকে না পেয়ে এক আত্মীয়ের কল্যাণে রক্ত জোগাড় করেন।
কিন্তু সকাল ১১টায় রক্ত জোগাড় করলেও সেই রক্ত দেওয়া হয় বিকেল পাঁচটায়। ফলে তাঁর বোনের অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়।
ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় রোগীদের মরণদশা হয়। কিন্তু তাতেও কর্তৃপক্ষের কোনো টনক নড়েনি। অনেকবার বললেও তার বোনকে সিটে না রেখে মাটিতে রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডা. মাহবুব আলম বলেন, ‘চিকিৎসাসেবায় কোনো অবহেলা নেই। ধারণক্ষমতার চার-পাঁচগুণ বেশি রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তার পরও তো সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
No comments