আউটার স্টেডিয়াম-মেলার নামে এসব কী হচ্ছে! by প্রণব বল
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, পাটবস্ত্র, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলা, সমরাস্ত্র প্রদর্শনী ও স্বাধীনতা মেলার পর এখন চলছে ম্যারাথন বৈশাখী মেলা। গত ডিসেম্বর থেকে এ রকম নানা মেলার নামে ব্যস্ত রাখা হয়েছে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামসংলগ্ন আউটার স্টেডিয়াম। খেলার এই মাঠটি এভাবে বছরব্যাপী মেলার কাজে ব্যস্ত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে খেলার অনুশীলন।
অভিযোগ রয়েছে, নামে মেলা হলেও প্রতিদিনই অশ্লীল নৃত্য, জুয়া আর ভ্যারাইটি শোর আসর বসে এখানে। আর এসবের পেছনে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সামনের সারির এক নেতা।
ক্রীড়া পরিবারসহ বিভিন্ন মহল থেকে বারবার এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হলেও এসব যেন দেখার কেউ নেই। কানে তালা দিয়ে আছে যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষই বা কে—তা নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। জানা যায়, জায়গাটি সেনাবাহিনীর। কিন্তু তাদের জায়গায় স্থাপিত এম এ আজিজ স্টেডিয়াম রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) অধীনে। তাই আউটার স্টেডিয়ামটিও তাদের তত্ত্বাবধানে থাকার কথা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তত্ত্বাবধানের এখতিয়ার সিজেকেএসের নেই।
সিজেকেএসের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের নেতা আজম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘এই মাঠটি আমাদের নয়। সেনা দপ্তর থেকেই এটা নিয়ন্ত্রিত হয়। আমাদের হাতে থাকলে আমরা এত মেলা করতে দিতাম না। এখানে ছেলেরা অনুশীলন করতে পারে না। সারা বছর মাঠে এই মেলা সেই মেলা লেগেই থাকে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’
তবে বিজয় মেলা কিংবা স্বাধীনতা মেলার মতো অনুষ্ঠান হওয়া দরকার রয়েছে বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, আউটার স্টেডিয়ামে প্রতিটি মেলার পেছনে কোনো না কোনো সরকারদলীয় রাজনীতিক জড়িত। তাঁদের ইন্ধনেই টাকা উপার্জনের জন্য এখানে এসব নোংরা নাচ-গানের অনুষ্ঠান চলে। পুলিশের নাকের ডগায় জুয়া ও অশ্লীল নাচ চললেও তাদের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।
জানা গেছে, বর্তমান মেলার অন্যতম আয়োজক নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক ওরফে দানু। মার্চ মাসে স্বাধীনতা মেলার নামে এখানে শুরু হয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। এরপর একে একে নতুন নতুন উপলক্ষ খুঁজে ম্যারাথনভাবে এই মেলা চলছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, এই মেলা আরও মাস খানেক চলবে। কারণ, রবীন্দ্র ও নজরুলজয়ন্তী পর্যন্ত এই মেলা টেনে নেওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকেরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাজী ইনামুল হক বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা মেলা দিয়ে মেলাটি শুরু করেছিলাম। এরপর এখন বৈশাখী মেলা চলছে। রবীন্দ্র ও নজরুলজয়ন্তী দিয়ে মেলা শেষ হবে। প্রথমে এক মাসের জন্য নয় লাখ টাকা দিয়ে মাঠটি ভাড়া নিয়েছিলাম। এখন নতুন করে আবার টাকা দিয়ে সময় বাড়িয়েছি।’
অশ্লীল নাচ-গানের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশকে বলেছি। কিন্তু পুলিশ টাকা খেয়ে এগুলো বন্ধ করে না। এখন এগুলো না মানলে আমরা কী করতাম। আমরাও চাই এগুলো বন্ধ হোক।’ মেলা থেকে যা আয় হবে তা মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আউটার স্টেডিয়ামে এখন চলছে বৈশাখী মেলা। প্রতিদিন বিকেল থেকে এখানে বসে জুয়ার আসর। এরপর সন্ধ্যা হতে না হতেই চলে ভ্যারাইটি শো নামের অশ্লীল নাচ-গানের আসর। কাজীর দেউড়ি এলাকায় বসবাস করা হাজার হাজার নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালক, হকারসহ নিম্ন আয়ের লোকজন এসব আসরের প্রধান দর্শক। ভোররাত পর্যন্ত উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে এসব গান-বাজনা চালানো হয়। প্রসঙ্গত কাজীর দেউড়ি এলাকায় বিপুলসংখ্যক নির্মাণশ্রমিক বসবাস করেন।
বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক ও বিদ্যালয়গুলোর সাময়িক পরীক্ষা চলছে। উচ্চৈ স্বরে মাইকের শব্দের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি হলেও অভিভাবকেরা অসহায়। শহীদুল ইসলাম নামে কাজীর দেউড়ি এলাকার এক অভিভাবক বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মাইকে অশ্লীল গান ভেসে আসে। বাচ্চাদের এখন পরীক্ষা চলছে। আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’
আউটার স্টেডিয়াম একসময় এই এলাকার অন্যতম প্রাণবন্ত খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত ছিল। এই মাঠে নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট ও স্টার যুব ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জমজমাট আসর বসত। মিনহাজুল আবেদিন, আকরাম খান, নাফিস ইকবাল, তামিম ইকবাল, আফতাব আহমেদরা এই মাঠে খেলতে খেলতে ক্রীড়াক্ষেত্রের নক্ষত্র হয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে এই মাঠের প্রতি যেন কারও কোনো মায়া নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আবদুল্লাহ হিল বাকী বলেন, ‘এটা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কমিশনার মহোদয়ও নির্দেশ দিয়েছেন এগুলো বন্ধ করতে। আজকালের মধ্যে মেলায় এসব অবৈধ ও অশ্লীল কার্যক্রম আমরা বন্ধ করে দেব।’
ক্রীড়া পরিবারসহ বিভিন্ন মহল থেকে বারবার এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হলেও এসব যেন দেখার কেউ নেই। কানে তালা দিয়ে আছে যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষই বা কে—তা নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। জানা যায়, জায়গাটি সেনাবাহিনীর। কিন্তু তাদের জায়গায় স্থাপিত এম এ আজিজ স্টেডিয়াম রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) অধীনে। তাই আউটার স্টেডিয়ামটিও তাদের তত্ত্বাবধানে থাকার কথা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তত্ত্বাবধানের এখতিয়ার সিজেকেএসের নেই।
সিজেকেএসের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের নেতা আজম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘এই মাঠটি আমাদের নয়। সেনা দপ্তর থেকেই এটা নিয়ন্ত্রিত হয়। আমাদের হাতে থাকলে আমরা এত মেলা করতে দিতাম না। এখানে ছেলেরা অনুশীলন করতে পারে না। সারা বছর মাঠে এই মেলা সেই মেলা লেগেই থাকে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’
তবে বিজয় মেলা কিংবা স্বাধীনতা মেলার মতো অনুষ্ঠান হওয়া দরকার রয়েছে বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, আউটার স্টেডিয়ামে প্রতিটি মেলার পেছনে কোনো না কোনো সরকারদলীয় রাজনীতিক জড়িত। তাঁদের ইন্ধনেই টাকা উপার্জনের জন্য এখানে এসব নোংরা নাচ-গানের অনুষ্ঠান চলে। পুলিশের নাকের ডগায় জুয়া ও অশ্লীল নাচ চললেও তাদের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।
জানা গেছে, বর্তমান মেলার অন্যতম আয়োজক নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক ওরফে দানু। মার্চ মাসে স্বাধীনতা মেলার নামে এখানে শুরু হয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। এরপর একে একে নতুন নতুন উপলক্ষ খুঁজে ম্যারাথনভাবে এই মেলা চলছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, এই মেলা আরও মাস খানেক চলবে। কারণ, রবীন্দ্র ও নজরুলজয়ন্তী পর্যন্ত এই মেলা টেনে নেওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকেরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাজী ইনামুল হক বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা মেলা দিয়ে মেলাটি শুরু করেছিলাম। এরপর এখন বৈশাখী মেলা চলছে। রবীন্দ্র ও নজরুলজয়ন্তী দিয়ে মেলা শেষ হবে। প্রথমে এক মাসের জন্য নয় লাখ টাকা দিয়ে মাঠটি ভাড়া নিয়েছিলাম। এখন নতুন করে আবার টাকা দিয়ে সময় বাড়িয়েছি।’
অশ্লীল নাচ-গানের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশকে বলেছি। কিন্তু পুলিশ টাকা খেয়ে এগুলো বন্ধ করে না। এখন এগুলো না মানলে আমরা কী করতাম। আমরাও চাই এগুলো বন্ধ হোক।’ মেলা থেকে যা আয় হবে তা মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আউটার স্টেডিয়ামে এখন চলছে বৈশাখী মেলা। প্রতিদিন বিকেল থেকে এখানে বসে জুয়ার আসর। এরপর সন্ধ্যা হতে না হতেই চলে ভ্যারাইটি শো নামের অশ্লীল নাচ-গানের আসর। কাজীর দেউড়ি এলাকায় বসবাস করা হাজার হাজার নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালক, হকারসহ নিম্ন আয়ের লোকজন এসব আসরের প্রধান দর্শক। ভোররাত পর্যন্ত উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে এসব গান-বাজনা চালানো হয়। প্রসঙ্গত কাজীর দেউড়ি এলাকায় বিপুলসংখ্যক নির্মাণশ্রমিক বসবাস করেন।
বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক ও বিদ্যালয়গুলোর সাময়িক পরীক্ষা চলছে। উচ্চৈ স্বরে মাইকের শব্দের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি হলেও অভিভাবকেরা অসহায়। শহীদুল ইসলাম নামে কাজীর দেউড়ি এলাকার এক অভিভাবক বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মাইকে অশ্লীল গান ভেসে আসে। বাচ্চাদের এখন পরীক্ষা চলছে। আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’
আউটার স্টেডিয়াম একসময় এই এলাকার অন্যতম প্রাণবন্ত খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত ছিল। এই মাঠে নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট ও স্টার যুব ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জমজমাট আসর বসত। মিনহাজুল আবেদিন, আকরাম খান, নাফিস ইকবাল, তামিম ইকবাল, আফতাব আহমেদরা এই মাঠে খেলতে খেলতে ক্রীড়াক্ষেত্রের নক্ষত্র হয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে এই মাঠের প্রতি যেন কারও কোনো মায়া নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আবদুল্লাহ হিল বাকী বলেন, ‘এটা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কমিশনার মহোদয়ও নির্দেশ দিয়েছেন এগুলো বন্ধ করতে। আজকালের মধ্যে মেলায় এসব অবৈধ ও অশ্লীল কার্যক্রম আমরা বন্ধ করে দেব।’
No comments