বিশেষ সাক্ষাত্কার-পঞ্চম সংশোধনীতে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বদল হয়নি by টি এইচ খান ও মাহ্বুবে আলম
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সম্প্রতি পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রেখেছেন। এ বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী টি এইচ খান ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহ্বুবে আলমের সাক্ষাত্কার ছাপা হলো। গত শুক্রবার সাক্ষাত্কার দুটি নেওয়া হয়েছে।
সাক্ষাত্কার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান
প্রথম আলো আপনার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, আপনি সামরিক শাসন কিংবা ফরমান দিয়ে সংবিধান সংশোধনের ধারণা সমর্থন করেন?
টি এইচ খান এটা সত্য থেকে অনেক দূরে। আদালতের রায়ের চেয়ে সংবিধান সবকিছুর ঊর্ধ্বে। রাষ্ট্র পরিচালনায় রাষ্ট্রনায়কেরা যখন ব্যর্থ হন; বাস্তবে যখন দেশের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে; নিরাপত্তার অভাব বিরাজ করে; আইন প্রয়োগে অক্ষমতা বা ইচ্ছাকৃত ঔদাসীন্য দেখানো হয়; শাসনতান্ত্রিক সংকট, রাজনৈতিক হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি নাগরিকদের অনাস্থা চরমে ওঠে—তখনই আবির্ভাব ঘটে সামরিক শাসনের।
প্রথম আলো কিন্তু ফরমান দিয়ে সংবিধান বদলে দেওয়া যায় কি না?
টি এইচ খান সামরিক শাসন কোনো দেশের কোনো ছক অবলম্বন করে আসে না। যাঁরা মনে করেন আলোচ্য রায়ের ফলে সামরিক শাসনের আবির্ভাব আর ঘটবে না, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি বলতে চাই, আমি বোকার স্বর্গে বাস করি না। বাস্তবতা ও চিন্তাবিলাসিতার মধ্যে পার্থক্য অনেক। এটি কম বুদ্ধিমানেরাও বোঝেন, শুধু দলবাজ ও মতলববাজেরা বোঝেন না।
প্রথম আলো আপনি শুনানিতে কেন একটি কথাই বললেন যে এ কাজ সংসদের—আদালতের এখতিয়ার নেই?
টি এইচ খান আমি আমার লিখিত বক্তব্যে বিষয়টি বিস্তারিত বলেছি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের ক্ষেত্রে কী ঘটল? সংসদ আইন দিয়ে তা বাতিল করল, আদালতের রায়ে বাতিল হয়নি। ১৯৭৭ সালের ৭ নম্বর এমএলআরএর বৈধতা হাইকোর্টে বহুবার চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। চার-পাঁচটা মামলায় এটাকে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে; কিন্তু নাকচ করা হয়নি। মুন সিনেমার মামলাতেও বিচারপতি মোস্তাফা কামাল আবেদনকারীদের প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
প্রথম আলো কিন্তু এবারে মুন প্রশ্নে কিছু বলেননি। আপনারা কি রায়ের এটুকু মেনে নিয়েছেন?
টি এইচ খান মুন সিনেমা সরকার তাদের দিক বা না দিক, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। মাথাব্যথা হলো আইনগত অবস্থান নিয়ে। এই যে কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হলো, সে আবেদন হাইকোর্ট গ্রহণই করতে পারেন না। রায় দিতে পারেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত চতুর্থ তফসিলে (১৫০ অনুচ্ছেদ) ৩ক অনুচ্ছেদ ও ১৮ নম্বর প্যারাগ্রাফ থাকবে, ততক্ষণ আদালতের এখতিয়ার থাকবে না।
প্রথম আলো সংসদের আইন চ্যালেঞ্জ হয়। আইনে লেখা থাকে না, আদালত তা পারবে না। কিন্তু ফরমানগুলোর ক্ষেত্রে এটা থাকবে কেন?
টি এইচ খান এটা নতুন নয়। সারা পৃথিবীতে একই কথা লেখা। সামরিক শাসন থাকলে কোর্ট তা মেনে চলেন। তখন আর অত বীরত্ব দেখাতে পারেন না।
প্রথম আলো কিন্তু ৭ অনুচ্ছেদের (লেখা আছে সংবিধানের সঙ্গে যে আইন যতটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততটা বাতিল) সঙ্গে সংঘাতের প্রশ্নটি আপনি কীভাবে দেখবেন?
টি এইচ খান সপ্তম অনুচ্ছেদ নিয়ে যেমন খুশি তেমন ব্যাখ্যা হচ্ছে। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো একটা অস্পষ্ট কথা। এখন যেকোনো বিষয়কেই মৌলিক কাঠামো বলা হচ্ছে। যেমন, সমাজতন্ত্রকে মৌলিক কাঠামো বলা হচ্ছে। আমি ভিন্নমত পোষণ করি। এটা একটা অর্থনৈতিক নীতি। দুনিয়ার বহু দেশে এটা ব্যর্থ হয়েছে। কোথাও সংশোধিত অবস্থায় আছে। একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা মৌলিক কাঠামো হতে পারে না।
প্রথম আলো অষ্টম সংশোধনী মামলায় মৌলিক কাঠামো যেভাবে এসেছে তার সঙ্গে কি আপনি একমত? আমরা দেখেছি, বিচারপতিরা সেখানে বিভক্ত হলেন।
টি এইচ খান তাহলে দেখলেন তো যে তাঁরা সেখানে সর্বসম্মত নন। তবে সেখানে ইউনিটারি স্টেট অর্থাত্ রাষ্ট্রের যে এককেন্দ্রিকতা সেটা একটা মৌলিক কাঠামো। সংখ্যাগরিষ্ঠরা ভাবলেন যে, যদি সুপ্রিম কোর্ট খণ্ড করা হয়, তাহলে তা পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রে ভাঙন ডেকে আনতে পারে।
প্রথম আলো পঞ্চম সংশোধনীর কিছু অংশ তো হাইকোর্ট মার্জনা করেছেন। যেমন, বাকশাল। সেভাবে আপনারা তো মার্জনার পরিধি বাড়ানোর দিকটি শুনানিতে আনতে পারতেন।
টি এইচ খান কন্ডোনেশন বা মার্জনার বিষয়টি শুনানিতে এসেছে। আমার কথা হলো, যদি আদালতের এখতিয়ার না থাকে, তাহলে তাঁরা মার্জনা করা না-করার কে। তবে আমি এটা বলেছি যে কোর্ট এ ক্ষেত্রে ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ বা বাছাই করেছেন। এই অধিকার কোর্ট কোথায় পেলেন। আবার দেখুন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল মার্জনা করা হলো, কিন্তু গণভোট করা হলো না। জনগণের কাছে যাওয়ার বিষয়টি মার্জনা পেল না কেন?
প্রথম আলো আপনি কি মনে করেন এটা রায়ের বড় দুর্বলতা?
টি এইচ খান এক শবার।
প্রথম আলো আপিল বিভাগ এখন মডিফিকেশন বা পরিমার্জনা করতে গিয়ে এদিকটি বিবেচনায় নিতে পারেন?
টি এইচ খান আমি অনুমান করতে পারি না। তাঁরা কী বলবেন বা বলবেন না।
প্রথম আলো লিভ মঞ্জুর না হওয়ায় আপনি খুব অবাক হয়েছেন?
টি এইচ খান আমি একটু অবাক হয়েছি। এটা দুর্ভাগ্য বললে কম বলা হয়।
প্রথম আলো আপনি যেসব বিষয় আদালতে বলেছেন, তার কোনো প্রতিকার আপিল বিভাগের আসন্ন রায়ে আশা করেন? তা ছাড়া আপনি মনে করেন কি যে রিভিউ পর্যায়ে একটা উদ্যোগ আপনি নেবেন? মওদুদ আহমদ প্রতিকার সম্পর্কে একটু আশাবাদী...।
টি এইচ খান মওদুদ আহমদ কী বলেছেন তা আমি জানি না। আমি আগেই বলেছি, কোনো অনুমান করতে চাই না। আমি অতটা বোকা নই যে এটা ধরে নেব, একই আদালত একই সরকারের সময় রিভিউতে ভিন্নতর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন। আমাদের ছয় দিনের শ্রম নিষ্ফল হয়েছে।
প্রথম আলো আসমা জিলানি, দোসো, পারভেজ মোশাররফের মামলাগুলো রায়ে ও শুনানিতে এসেছে। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু সর্বশেষ বলেছেন, সামরিক ফরমান দিয়ে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বদলানো যায় না। আপনারা সেটুকুও কিন্তু মানলেন না।
টি এইচ খান প্রথম কথা হলো, তুলনা চলে না। কোনো সামরিক শাসনের সঙ্গে কোনোটির মিল নেই। তবে মওদুদ কিন্তু এটা বলেছেন, ফরমান দিয়ে মৌলিক কাঠামো বদলানো যায় না।
প্রথম আলো পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে মৌলিক কাঠামো বদলানো হয়নি?
টি এইচ খান পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বদলানো হয়েছে বলে আমি মনে করি না। আমার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে, সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে সংশোধনী। এখানে নির্দিষ্ট করে মৌলিক কাঠামে বলে দিতে হবে। না হলে কোর্ট ইচ্ছেমতো ব্যাখ্যা দেবেন।
প্রথম আলো অষ্টম সংশোধনীতে সংসদ বিল আনেনি। আদালতের রায়ে ১০০ অনুচ্ছেদ আগের অবস্থায় নেওয়া হয়। এবারে কি আপিল বিভাগের রায়ের পরে নতুন করে সংবিধান ছাপলেই হবে?
টি এইচ খান আমি তা মনে করি না। দুয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। রায়ের আলোকে সংসদে বিল আনাটাই আইনের দাবি।
প্রথম আলো তবে গণভোটের তো আর দরকার পড়বে না।
টি এইচ খান এতক্ষণে আসল জায়গায় এলেন। এই সংসদ তো বাহাত্তরের অবস্থায় যেতে পারত বা ভালোভাবেই পারে। গণভোট এড়াতেই এত কিছু।
প্রথম আলো আপনার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, আপনি সামরিক শাসন কিংবা ফরমান দিয়ে সংবিধান সংশোধনের ধারণা সমর্থন করেন?
টি এইচ খান এটা সত্য থেকে অনেক দূরে। আদালতের রায়ের চেয়ে সংবিধান সবকিছুর ঊর্ধ্বে। রাষ্ট্র পরিচালনায় রাষ্ট্রনায়কেরা যখন ব্যর্থ হন; বাস্তবে যখন দেশের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে; নিরাপত্তার অভাব বিরাজ করে; আইন প্রয়োগে অক্ষমতা বা ইচ্ছাকৃত ঔদাসীন্য দেখানো হয়; শাসনতান্ত্রিক সংকট, রাজনৈতিক হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি নাগরিকদের অনাস্থা চরমে ওঠে—তখনই আবির্ভাব ঘটে সামরিক শাসনের।
প্রথম আলো কিন্তু ফরমান দিয়ে সংবিধান বদলে দেওয়া যায় কি না?
টি এইচ খান সামরিক শাসন কোনো দেশের কোনো ছক অবলম্বন করে আসে না। যাঁরা মনে করেন আলোচ্য রায়ের ফলে সামরিক শাসনের আবির্ভাব আর ঘটবে না, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি বলতে চাই, আমি বোকার স্বর্গে বাস করি না। বাস্তবতা ও চিন্তাবিলাসিতার মধ্যে পার্থক্য অনেক। এটি কম বুদ্ধিমানেরাও বোঝেন, শুধু দলবাজ ও মতলববাজেরা বোঝেন না।
প্রথম আলো আপনি শুনানিতে কেন একটি কথাই বললেন যে এ কাজ সংসদের—আদালতের এখতিয়ার নেই?
টি এইচ খান আমি আমার লিখিত বক্তব্যে বিষয়টি বিস্তারিত বলেছি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের ক্ষেত্রে কী ঘটল? সংসদ আইন দিয়ে তা বাতিল করল, আদালতের রায়ে বাতিল হয়নি। ১৯৭৭ সালের ৭ নম্বর এমএলআরএর বৈধতা হাইকোর্টে বহুবার চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। চার-পাঁচটা মামলায় এটাকে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে; কিন্তু নাকচ করা হয়নি। মুন সিনেমার মামলাতেও বিচারপতি মোস্তাফা কামাল আবেদনকারীদের প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
প্রথম আলো কিন্তু এবারে মুন প্রশ্নে কিছু বলেননি। আপনারা কি রায়ের এটুকু মেনে নিয়েছেন?
টি এইচ খান মুন সিনেমা সরকার তাদের দিক বা না দিক, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। মাথাব্যথা হলো আইনগত অবস্থান নিয়ে। এই যে কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হলো, সে আবেদন হাইকোর্ট গ্রহণই করতে পারেন না। রায় দিতে পারেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত চতুর্থ তফসিলে (১৫০ অনুচ্ছেদ) ৩ক অনুচ্ছেদ ও ১৮ নম্বর প্যারাগ্রাফ থাকবে, ততক্ষণ আদালতের এখতিয়ার থাকবে না।
প্রথম আলো সংসদের আইন চ্যালেঞ্জ হয়। আইনে লেখা থাকে না, আদালত তা পারবে না। কিন্তু ফরমানগুলোর ক্ষেত্রে এটা থাকবে কেন?
টি এইচ খান এটা নতুন নয়। সারা পৃথিবীতে একই কথা লেখা। সামরিক শাসন থাকলে কোর্ট তা মেনে চলেন। তখন আর অত বীরত্ব দেখাতে পারেন না।
প্রথম আলো কিন্তু ৭ অনুচ্ছেদের (লেখা আছে সংবিধানের সঙ্গে যে আইন যতটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততটা বাতিল) সঙ্গে সংঘাতের প্রশ্নটি আপনি কীভাবে দেখবেন?
টি এইচ খান সপ্তম অনুচ্ছেদ নিয়ে যেমন খুশি তেমন ব্যাখ্যা হচ্ছে। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো একটা অস্পষ্ট কথা। এখন যেকোনো বিষয়কেই মৌলিক কাঠামো বলা হচ্ছে। যেমন, সমাজতন্ত্রকে মৌলিক কাঠামো বলা হচ্ছে। আমি ভিন্নমত পোষণ করি। এটা একটা অর্থনৈতিক নীতি। দুনিয়ার বহু দেশে এটা ব্যর্থ হয়েছে। কোথাও সংশোধিত অবস্থায় আছে। একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা মৌলিক কাঠামো হতে পারে না।
প্রথম আলো অষ্টম সংশোধনী মামলায় মৌলিক কাঠামো যেভাবে এসেছে তার সঙ্গে কি আপনি একমত? আমরা দেখেছি, বিচারপতিরা সেখানে বিভক্ত হলেন।
টি এইচ খান তাহলে দেখলেন তো যে তাঁরা সেখানে সর্বসম্মত নন। তবে সেখানে ইউনিটারি স্টেট অর্থাত্ রাষ্ট্রের যে এককেন্দ্রিকতা সেটা একটা মৌলিক কাঠামো। সংখ্যাগরিষ্ঠরা ভাবলেন যে, যদি সুপ্রিম কোর্ট খণ্ড করা হয়, তাহলে তা পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রে ভাঙন ডেকে আনতে পারে।
প্রথম আলো পঞ্চম সংশোধনীর কিছু অংশ তো হাইকোর্ট মার্জনা করেছেন। যেমন, বাকশাল। সেভাবে আপনারা তো মার্জনার পরিধি বাড়ানোর দিকটি শুনানিতে আনতে পারতেন।
টি এইচ খান কন্ডোনেশন বা মার্জনার বিষয়টি শুনানিতে এসেছে। আমার কথা হলো, যদি আদালতের এখতিয়ার না থাকে, তাহলে তাঁরা মার্জনা করা না-করার কে। তবে আমি এটা বলেছি যে কোর্ট এ ক্ষেত্রে ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ বা বাছাই করেছেন। এই অধিকার কোর্ট কোথায় পেলেন। আবার দেখুন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল মার্জনা করা হলো, কিন্তু গণভোট করা হলো না। জনগণের কাছে যাওয়ার বিষয়টি মার্জনা পেল না কেন?
প্রথম আলো আপনি কি মনে করেন এটা রায়ের বড় দুর্বলতা?
টি এইচ খান এক শবার।
প্রথম আলো আপিল বিভাগ এখন মডিফিকেশন বা পরিমার্জনা করতে গিয়ে এদিকটি বিবেচনায় নিতে পারেন?
টি এইচ খান আমি অনুমান করতে পারি না। তাঁরা কী বলবেন বা বলবেন না।
প্রথম আলো লিভ মঞ্জুর না হওয়ায় আপনি খুব অবাক হয়েছেন?
টি এইচ খান আমি একটু অবাক হয়েছি। এটা দুর্ভাগ্য বললে কম বলা হয়।
প্রথম আলো আপনি যেসব বিষয় আদালতে বলেছেন, তার কোনো প্রতিকার আপিল বিভাগের আসন্ন রায়ে আশা করেন? তা ছাড়া আপনি মনে করেন কি যে রিভিউ পর্যায়ে একটা উদ্যোগ আপনি নেবেন? মওদুদ আহমদ প্রতিকার সম্পর্কে একটু আশাবাদী...।
টি এইচ খান মওদুদ আহমদ কী বলেছেন তা আমি জানি না। আমি আগেই বলেছি, কোনো অনুমান করতে চাই না। আমি অতটা বোকা নই যে এটা ধরে নেব, একই আদালত একই সরকারের সময় রিভিউতে ভিন্নতর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন। আমাদের ছয় দিনের শ্রম নিষ্ফল হয়েছে।
প্রথম আলো আসমা জিলানি, দোসো, পারভেজ মোশাররফের মামলাগুলো রায়ে ও শুনানিতে এসেছে। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু সর্বশেষ বলেছেন, সামরিক ফরমান দিয়ে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বদলানো যায় না। আপনারা সেটুকুও কিন্তু মানলেন না।
টি এইচ খান প্রথম কথা হলো, তুলনা চলে না। কোনো সামরিক শাসনের সঙ্গে কোনোটির মিল নেই। তবে মওদুদ কিন্তু এটা বলেছেন, ফরমান দিয়ে মৌলিক কাঠামো বদলানো যায় না।
প্রথম আলো পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে মৌলিক কাঠামো বদলানো হয়নি?
টি এইচ খান পঞ্চম সংশোধনী দিয়ে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বদলানো হয়েছে বলে আমি মনে করি না। আমার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে, সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে সংশোধনী। এখানে নির্দিষ্ট করে মৌলিক কাঠামে বলে দিতে হবে। না হলে কোর্ট ইচ্ছেমতো ব্যাখ্যা দেবেন।
প্রথম আলো অষ্টম সংশোধনীতে সংসদ বিল আনেনি। আদালতের রায়ে ১০০ অনুচ্ছেদ আগের অবস্থায় নেওয়া হয়। এবারে কি আপিল বিভাগের রায়ের পরে নতুন করে সংবিধান ছাপলেই হবে?
টি এইচ খান আমি তা মনে করি না। দুয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। রায়ের আলোকে সংসদে বিল আনাটাই আইনের দাবি।
প্রথম আলো তবে গণভোটের তো আর দরকার পড়বে না।
টি এইচ খান এতক্ষণে আসল জায়গায় এলেন। এই সংসদ তো বাহাত্তরের অবস্থায় যেতে পারত বা ভালোভাবেই পারে। গণভোট এড়াতেই এত কিছু।
No comments