নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিতে পারি না কেন? by আব্দুল কাইয়ুম
বকুলতলায় প্রেমিকার ঘন কালো চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে এক তরুণ, আর সেই সুখানুভূতির সাগরে ভাসছে তরুণী। কিন্তু তার বদলে যদি সে নিজেই নিজের চুলে বিলি কাটত, তাহলে কি আনন্দের শিহরণ পেত? না, অসম্ভব। অবশ্য এখানে প্রেমের একটা ব্যাপার আছে। তা যদি নাও থাকে, প্রায় একই ফল পাওয়া যাবে।
আপনি চোখ বন্ধ করে খুব হালকাভাবে নিজেকে সুড়সুড়ি দিন। দেখুন চেষ্টা করে নিজেকে হাসাতে পারেন কি না! অসম্ভব। কেন নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিতে পারি না? কারণ, আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলো বুঝতে পারে কোন সুড়সুড়িটা নিজে দিচ্ছি, আর তখন সে তাকে কম প্রাধান্য দেয়। কিন্তু অন্য কেউ দিলে তা গুরুত্ব বেশি পায়। একদল উৎসাহী বিজ্ঞানী এ নিয়ে গবেষণা করেছেন। সুড়সুড়ি দেওয়ার সময় মস্তিষ্কের কার্যক্রম এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং) মেশিনে স্ক্যান করে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের যে এলাকা স্পর্শানুভূতি প্রক্রিয়াভুক্ত করে, সেই সোমাটোসেনসরি করটেক্স নিজের চুলকানির চেয়ে অন্যের চুলকানির সময় বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। নিজের কোনো অঙ্গের নড়াচড়ার ফলে যদি কোথাও স্পর্শানুভূতির সৃষ্টি হয় তাহলে মস্তিষ্কের সেরেবেলাম সেটা বুঝতে পারে এবং কম তৎপরতা দেখায়। কিন্তু যেসব নড়াচড়ার ফলে স্পর্শানুভূতি সৃষ্টি হয় না, সেসব ক্ষেত্রে সেরেবেলাম বেশি সক্রিয় থাকে। এতে বোঝা যায়, নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিলে সেরেবেলাম সেটা আগেই বুঝতে পেরে সোমাটোসেনসরি করটেক্সে খবর পাঠায় যে, বেশি উত্তেজিত হওয়ার দরকার নেই। ফলে ওই সুড়সুড়িতে কাজ হয় না।
No comments