মাননীয় স্পিকার, শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিন-সংসদে বল্গাহীন অশালীন বক্তব্য
জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেওয়ার অবাধ স্বাধীনতাকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহারের সুযোগ সংসদীয় গণতন্ত্রে নেই। ষোড়শ শতাব্দীর ইংল্যান্ডে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, সংসদে যা কিছু বলা হবে, তার জবাবদিহি বাইরের কোনো কর্তৃপক্ষ নয়, শুধু সংসদকেই তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ সংবিধানেও তা স্বীকৃত। সংসদের কার্যধারার বৈধতা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।
কিন্তু তার অর্থ এই নয়, সাংসদেরা যা খুশি তাই বলতে পারেন। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে শালীনতা ও নৈতিকতা সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু সংসদে মাঝেমধ্যেই সীমা অতিক্রমের ঘটনা ঘটছে। এর রাশ টানতে হবে। বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে হবে। নিন্দা ও কাদা-ছোড়াছুড়ির ডামাডোলে এর বিহিত ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা এড়ানো যাবে না।
১৮ মার্চ জাতীয় সংসদে যা ঘটেছে, তাতে সাধারণ মানুষ ছি দিচ্ছেন। সেটা ছিল কার্যত গুরুতর বিশৃঙ্খলা। ওই ধরনের বক্তব্য প্রদানের দায়ে স্পিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সংসদকক্ষ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করতে পারতেন। আইন ও রীতি হলো, স্পিকার এ অবস্থায় যখন কোনো সদস্যের নাম উল্লেখ করেন, তখন কোনো কোনো পার্লামেন্টে সংশ্লিষ্ট সদস্যকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাব আনা হয়। বাংলাদেশেও স্পিকার সংশ্লিষ্ট সদস্যদের ‘অধিবেশনের অনধিক অবশিষ্ট সময়ের জন্য বহিষ্কার’ করতে পারেন। এখন পর্যন্ত এই বিধানের প্রয়োগ ঘটেনি। সংসদীয় টিভি একদিকে সংসদীয় বিতর্ক (অসংসদীয় শব্দসহ) সরাসরি সম্প্রচার করবে এবং অন্যদিকে স্পিকার কার্যবিবরণী থেকে অসংসদীয় বা আপত্তিকর বলে বিবেচিত শব্দ বাদ দেবেন, তা আর তেমন অর্থপূর্ণ নয়।
অসংসদীয় ও অশালীন শব্দের ব্যবহার বাংলাদেশের সংসদে ক্রমশ ভয়ানক হয়ে উঠছে। কারও অনুপস্থিতিতেও ব্যক্তিগত আক্রমণ চলছে। দুই প্রধান দল অতীতে কে কখন কী কটুকাটব্য করেছিল, তার নজির টেনে অনেক সময় বর্তমানকে যথার্থতা দেওয়ার ভ্রান্ত ও অগ্রহণযোগ্য প্রয়াস চালিয়ে থাকে। এর অবসান হতে হবে। এখনই একটা লাগাম টানা দরকার। স্পিকার কোনো শব্দের উল্লেখ না করে শুধু ‘অশালীন শব্দ’ কর্তন করার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা অপর্যাপ্ত এবং অসম্পূর্ণ ছিল। এ ধরনের অবস্থায় স্পিকার মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করেন। এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে জীবাণুর মতো সংক্রমিত হয়ে সংসদের পরিবেশকে একেবারেই দূষিত করে তুলতে পারে।
মাননীয় স্পিকারকে অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা ও পক্ষপাতিত্বের দায় স্পিকার দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যভাবে এড়াতে পারেন—যদি তিনি সংবিধান, কার্যপ্রণালিবিধি ও সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি মেনে শৃঙ্খলামূলক সিদ্ধান্ত নেন।
আমরা আশা করব, অল্প কিছু সংসদ সদস্যের অসংযত, অপরিমিত ও অশালীন আচার-আচরণ ও বক্তব্যের কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য বা রাজনীতিক জাতির কাছে লজ্জিত হতে পারেন না। সে কারণে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট মহলসমূহকে স্পিকারের জন্য উৎসাহ ও নৈতিক সাহস জোগাতে হবে। সংসদীয় সংস্কৃতির মান রক্ষায় স্পিকারকেই বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে হবে।
১৮ মার্চ জাতীয় সংসদে যা ঘটেছে, তাতে সাধারণ মানুষ ছি দিচ্ছেন। সেটা ছিল কার্যত গুরুতর বিশৃঙ্খলা। ওই ধরনের বক্তব্য প্রদানের দায়ে স্পিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সংসদকক্ষ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করতে পারতেন। আইন ও রীতি হলো, স্পিকার এ অবস্থায় যখন কোনো সদস্যের নাম উল্লেখ করেন, তখন কোনো কোনো পার্লামেন্টে সংশ্লিষ্ট সদস্যকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাব আনা হয়। বাংলাদেশেও স্পিকার সংশ্লিষ্ট সদস্যদের ‘অধিবেশনের অনধিক অবশিষ্ট সময়ের জন্য বহিষ্কার’ করতে পারেন। এখন পর্যন্ত এই বিধানের প্রয়োগ ঘটেনি। সংসদীয় টিভি একদিকে সংসদীয় বিতর্ক (অসংসদীয় শব্দসহ) সরাসরি সম্প্রচার করবে এবং অন্যদিকে স্পিকার কার্যবিবরণী থেকে অসংসদীয় বা আপত্তিকর বলে বিবেচিত শব্দ বাদ দেবেন, তা আর তেমন অর্থপূর্ণ নয়।
অসংসদীয় ও অশালীন শব্দের ব্যবহার বাংলাদেশের সংসদে ক্রমশ ভয়ানক হয়ে উঠছে। কারও অনুপস্থিতিতেও ব্যক্তিগত আক্রমণ চলছে। দুই প্রধান দল অতীতে কে কখন কী কটুকাটব্য করেছিল, তার নজির টেনে অনেক সময় বর্তমানকে যথার্থতা দেওয়ার ভ্রান্ত ও অগ্রহণযোগ্য প্রয়াস চালিয়ে থাকে। এর অবসান হতে হবে। এখনই একটা লাগাম টানা দরকার। স্পিকার কোনো শব্দের উল্লেখ না করে শুধু ‘অশালীন শব্দ’ কর্তন করার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা অপর্যাপ্ত এবং অসম্পূর্ণ ছিল। এ ধরনের অবস্থায় স্পিকার মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করেন। এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে জীবাণুর মতো সংক্রমিত হয়ে সংসদের পরিবেশকে একেবারেই দূষিত করে তুলতে পারে।
মাননীয় স্পিকারকে অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা ও পক্ষপাতিত্বের দায় স্পিকার দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যভাবে এড়াতে পারেন—যদি তিনি সংবিধান, কার্যপ্রণালিবিধি ও সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি মেনে শৃঙ্খলামূলক সিদ্ধান্ত নেন।
আমরা আশা করব, অল্প কিছু সংসদ সদস্যের অসংযত, অপরিমিত ও অশালীন আচার-আচরণ ও বক্তব্যের কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য বা রাজনীতিক জাতির কাছে লজ্জিত হতে পারেন না। সে কারণে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট মহলসমূহকে স্পিকারের জন্য উৎসাহ ও নৈতিক সাহস জোগাতে হবে। সংসদীয় সংস্কৃতির মান রক্ষায় স্পিকারকেই বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে হবে।
No comments