টুকিটাকি by শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
তাগড়া জওয়ান টিটু। তাকে নিয়ে নানা কথা। মা বলেন, ‘পোলাডা এক্কেরে সিধা।’ পড়শিরা বলে, ‘তলি ছাড়া বেক্কল।’ এ নিয়ে টিটুর অবশ্য মাথাব্যথা নেই। সে আছে তার মতন। তার বন্ধুরা অনেকেই বিয়ে করেছে। তারা এক পাক করে শ্বশুরবাড়ি ঘুরে আসে, আর গপ্পের ছালা ঝাড়ে টিটুর সামনে। সেই গপ্পের চোটে টিটু বেচারা দিশেহারা।
মুরগির ইয়া বড় বড় রান ভাসে চোখে। থালা ভরা সাজানো দই হাতছানি দেয়। ঠিক থাকা দায় টিটুর। জিবের জল সামলে সে উতলা হয়ে বলে, ‘যাব রে, আমিও শ্বশুরবাড়ি যাব!’
কিন্তু বললেই তো আর হলো না। শ্বশুরবাড়ি টিটু পাবে কোথায়? সে তো বিয়েই করেনি। মাকে গিয়ে ধরে টিটু। রীতিমতো হামলে পড়ে, ‘আমারে জলদি বিয়া করাও, মা। আমি শ্বশুরবাড়ি গিয়া দাওয়াত খামু। হাবলু, বিশা, রতইন্না বারবার শ্বশুরবাড়ি যায়, আর পেট ভইরা খাইয়া আইসা নাকের সামনে ঢেঁকুর ছাড়ে। এই সব সহ্য করা যায়?’
অস্থির টিটুকে এখন সামলাবে কে? বড় ভাই এগিয়ে আসেন। টিটুকে তিনি বোঝান, ‘বিয়া তো চাইলেই হুট কইরা হয় না। সময় লাগে। তোর দাওয়াত খাইতে মন চায়, আমার শ্বশুরবাড়ি যা। ওরা দিলদরিয়া মানুষ। খাতির-যত্ন কম হইব না।’
টিটু এতেই রাজি। আরে, শ্বশুরবাড়ি একটা হলেই হলো। তোফা ভোজ নিয়ে কথা। এক সকালে বেশ ফুরফুরে মেজাজে বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির দিকে রওনা হয় টিটু। যাওয়ার সময় মা পইপই করে বলে দেন, ‘পথে যে যা কইব, তা-ই বিশ্বাস করবি না। ভাইবা দেখবি, কথাডা ঠিক কি না।’ টিটুর পকেটে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইষ্টি বাড়ি যাইতাছস, পথে কিছু কিনা লইস।’
টিটু বলে, ‘কী কিনমু?’
‘এই টুকিটাকি কিছু।’
‘আইচ্ছা, লমুনে।’ এই বলে বেরিয়ে পড়ে টিটু। হঠাৎ মনে পড়ে, শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে, পাড়ার বন্ধুদের না দেখিয়ে গেলে কি হয়? ডাঁট দেখানোর এমন উমদা মওকা হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। এক জায়গায় জটলা করে আড্ডা দিচ্ছিল বন্ধুরা। সে ব্যস্ততার ভাব দেখিয়ে হনহনিয়ে যেতে লাগল তাদের সামনে দিয়ে। বন্ধুদের তা নজর এড়াল না। এক বন্ধু জানতে চাইল, ‘এমন মচমচিয়ে যাস কই?’
টিটু বেশ মুড মেরে বলে, ‘শ্বশুরবাড়ি।’
বন্ধুরা ভাবে, হাবলা টিটু রসিকতা করছে। তারাও পাল্টা রসিকতা করে, ‘শ্বশুরবাড়ি যাস, তা সাজগোজ কই? মুখে রং কই? মুখে রং না মাইখা কেউ শ্বশুরবাড়ি গেছে, শুনি নাই।’
টিটু ভাবে, মুখে রং মেখে যাওয়াই বুঝি শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার রেওয়াজ। সে চট করে দোকান থেকে কিছু লাল রং কিনে নেয়। এবার হুঁশ হয়, ও বাড়ির জামাই তো আসলে সে নয়, বড় ভাই। তার কি রং মেখে যাওয়া ঠিক হবে? এ নিয়ে দোনোমনায় ভোগে টিটু। এদিকে টাকা দিয়ে কিনেছে রং, ফেলেও দিতে পারছে না। সে জানে, রং পকেটে রাখাটা বিপজ্জনক। বুবুর বিয়ের সময় দুলাভাইকে রাঙাবে বলে এক পুরিয়া রং পকেটে রেখেছিল সে। কাগজের পুরিয়া ঘামে ভিজে শেষে নিজেই নাকালের একশেষ। কিন্তু ঘটে বুদ্ধি থাকতে টিটুকে আটকায় কে? সে তার ঘন চুলের ভেতর রঙের পুরিয়া গুঁজে রাখে।
ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির কাছাকাছি গিয়ে টিটুর খেয়াল হয়, মা ওকে টুকিটাকি নিয়ে যেতে বলেছেন। এই যাহ্, মাকে তো জিজ্ঞেস করা হলো না—টুকিটাকি জিনিসটা কী? সে রাস্তার পাশে এক দোকানে গিয়ে দোকানিকে বলল, ‘ও ভাই, আপনের দোকানে টুকিটাকি আছে?’
দোকানি চালু মাল। সহজেই টের পায়, খদ্দেরের ঘটে ঠন্ঠন্। সে রাস্তার ওপারে খানিকটা দূরে খেতের পাশে বড়সড় এক জলাশয় দেখিয়ে বলে, ‘ওইহানে অনেক টাকি মাছ আছে। ওইগুল্যান ডুব দিয়া টুকাইয়া লন। টুকাইয়া যে টাকি পাওয়া যায়, এইডাই তো টুকিটাকি।’
দোকানির বুদ্ধির বহরে টিটু ধন্য। মনে মনে তাকে বাহবা দেয় সে। ছাত্রজীবনে অঙ্ক আর বিজ্ঞানে বরাবরই নাস্তানাবুদ হয়েছে টিটু। এ কারণে গণিতবিদ আর বিজ্ঞানীরা তার দুই চোখের বিষ। এর মধ্যে সবচেয়ে অপছন্দ করে সে আইজ্যাক নিউটনকে। মনে মনে তাঁর উদ্দেশে টিটু বলে, ‘এই দোকানি আপনার সময় জন্মাইলে ভাতে মরতেন।’
শার্ট-প্যান্ট খুলে শুধু জাঙিয়া নিয়ে জলে নেমে পড়ে টিটু। কোমর-জলে ঝপাঝপ ডুব দিয়ে টাকি খুঁজে বেড়ায়। এদিকে তার চুলের ভেতর লুকানো রং পানিতে ভিজে ছড়িয়ে একাকার।
পাশের এক খেতে মাটির ডেলা কুড়াচ্ছিল এক বুড়ো চাষি। বাড়িতে লেপা-পোছার কাজে লাগাবে। ভরদুপুরের রোদে রং-মাখা তাগড়া যুবককে পানিতে বারবার ডুব দিতে দেখে সে ঠাওরাল, নির্ঘাত বায়ু চড়েছে মাথায়। কিন্তু এভাবে ডুব দিতে দিতে তো কাহিল হয়ে পড়বে বেচারা। সে তড়িঘড়ি ডেলাগুলো গামছায় বেঁধে জলাশয়ের ধারে গিয়ে দাঁড়াল। বলল, ‘ও বাবা, এইভাবে বারবার ডুব দিতাছ ক্যান? কী খোঁজো?’
টিটু হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, ‘টাকি মাছ খুঁজি। টুকাইনা টাকি জড়ো করলে টুকিটাকি হইব। ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি নিতে হইব। মায় নিতে কইছে।’
বুড়ো টের পেল, সে যা ভেবেছে ঠিক তা-ই। যুবকের মাথার নাটবোল্ট সব ঢিলা। মায়া হলো বুড়োর। সে বলল, ‘এই পগারে টাকি দূরে থাইক, একখান তিত পুঁডিও নাই।’
ডুবাডুবি ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায় টিটু। হতাশ কণ্ঠে বলে, ‘কিন্তু আমার তো টুকিটাকি না হইলে চলব না।’
বুড়ো ভাবে, বেকুব বেটাকে আগে জল থেকে বাঁচানো যাক। সে ডেলার পোঁটলা দেখিয়ে বলল, ‘টুকিটাকি পানিতে থাকে কে কইছে তোমারে? এই পোঁটলাডা দেখতাছো, এর মইধ্যে আছে টুকিটাকি। এইডা লইয়া যাও।’
খানিক পর ডেলার পোঁটলা নিয়ে বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে হাজির রং-মাখা টিটু। তাকে দেখে সে বাড়ির সবাই আতঙ্কিত। এ আবার কোন্ পাগল! অনেক দিন ওই বাড়িতে না যাওয়ায় তার চেহারা কারও মনে নেই। টিটু যতই বলে, সে এ বাড়ির মেজো জামাইয়ের ছোট ভাই, বাড়ির লোকজনের সন্দেহ তত বাড়ে। গোল বাধায় টুকিটাকির পোঁটলাটা। সবাই এবার নিশ্চিত হয়, পাগল না হলে কেউ কুটুমবাড়ি মাটির ডেলা নিয়ে যায়! উত্তম-মধ্যম খেয়ে দৌড়ে পালায় টিটু।
সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফেরে বিধ্বস্ত টিটু। রং-মাখা টিটুকে দেখে আপনজনেরা ভাবেন, ও-বাড়িতে খুব ফুর্তি হয়েছে। বড় ভাই দাঁত বের করে বলেন, ‘তা খাওয়া-দাওয়া কেমুন হইল রে, টিটু?’
টিটু গাল ফুলিয়ে বলে, ‘খুব ভালো হইছে। এমুন খাবার জন্মেও খাই নাই।’
‘তা, কী কী খাইলি?’
‘কিল, ঘুসি, ঝাঁটা...!’
কিন্তু বললেই তো আর হলো না। শ্বশুরবাড়ি টিটু পাবে কোথায়? সে তো বিয়েই করেনি। মাকে গিয়ে ধরে টিটু। রীতিমতো হামলে পড়ে, ‘আমারে জলদি বিয়া করাও, মা। আমি শ্বশুরবাড়ি গিয়া দাওয়াত খামু। হাবলু, বিশা, রতইন্না বারবার শ্বশুরবাড়ি যায়, আর পেট ভইরা খাইয়া আইসা নাকের সামনে ঢেঁকুর ছাড়ে। এই সব সহ্য করা যায়?’
অস্থির টিটুকে এখন সামলাবে কে? বড় ভাই এগিয়ে আসেন। টিটুকে তিনি বোঝান, ‘বিয়া তো চাইলেই হুট কইরা হয় না। সময় লাগে। তোর দাওয়াত খাইতে মন চায়, আমার শ্বশুরবাড়ি যা। ওরা দিলদরিয়া মানুষ। খাতির-যত্ন কম হইব না।’
টিটু এতেই রাজি। আরে, শ্বশুরবাড়ি একটা হলেই হলো। তোফা ভোজ নিয়ে কথা। এক সকালে বেশ ফুরফুরে মেজাজে বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির দিকে রওনা হয় টিটু। যাওয়ার সময় মা পইপই করে বলে দেন, ‘পথে যে যা কইব, তা-ই বিশ্বাস করবি না। ভাইবা দেখবি, কথাডা ঠিক কি না।’ টিটুর পকেটে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইষ্টি বাড়ি যাইতাছস, পথে কিছু কিনা লইস।’
টিটু বলে, ‘কী কিনমু?’
‘এই টুকিটাকি কিছু।’
‘আইচ্ছা, লমুনে।’ এই বলে বেরিয়ে পড়ে টিটু। হঠাৎ মনে পড়ে, শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে, পাড়ার বন্ধুদের না দেখিয়ে গেলে কি হয়? ডাঁট দেখানোর এমন উমদা মওকা হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। এক জায়গায় জটলা করে আড্ডা দিচ্ছিল বন্ধুরা। সে ব্যস্ততার ভাব দেখিয়ে হনহনিয়ে যেতে লাগল তাদের সামনে দিয়ে। বন্ধুদের তা নজর এড়াল না। এক বন্ধু জানতে চাইল, ‘এমন মচমচিয়ে যাস কই?’
টিটু বেশ মুড মেরে বলে, ‘শ্বশুরবাড়ি।’
বন্ধুরা ভাবে, হাবলা টিটু রসিকতা করছে। তারাও পাল্টা রসিকতা করে, ‘শ্বশুরবাড়ি যাস, তা সাজগোজ কই? মুখে রং কই? মুখে রং না মাইখা কেউ শ্বশুরবাড়ি গেছে, শুনি নাই।’
টিটু ভাবে, মুখে রং মেখে যাওয়াই বুঝি শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার রেওয়াজ। সে চট করে দোকান থেকে কিছু লাল রং কিনে নেয়। এবার হুঁশ হয়, ও বাড়ির জামাই তো আসলে সে নয়, বড় ভাই। তার কি রং মেখে যাওয়া ঠিক হবে? এ নিয়ে দোনোমনায় ভোগে টিটু। এদিকে টাকা দিয়ে কিনেছে রং, ফেলেও দিতে পারছে না। সে জানে, রং পকেটে রাখাটা বিপজ্জনক। বুবুর বিয়ের সময় দুলাভাইকে রাঙাবে বলে এক পুরিয়া রং পকেটে রেখেছিল সে। কাগজের পুরিয়া ঘামে ভিজে শেষে নিজেই নাকালের একশেষ। কিন্তু ঘটে বুদ্ধি থাকতে টিটুকে আটকায় কে? সে তার ঘন চুলের ভেতর রঙের পুরিয়া গুঁজে রাখে।
ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির কাছাকাছি গিয়ে টিটুর খেয়াল হয়, মা ওকে টুকিটাকি নিয়ে যেতে বলেছেন। এই যাহ্, মাকে তো জিজ্ঞেস করা হলো না—টুকিটাকি জিনিসটা কী? সে রাস্তার পাশে এক দোকানে গিয়ে দোকানিকে বলল, ‘ও ভাই, আপনের দোকানে টুকিটাকি আছে?’
দোকানি চালু মাল। সহজেই টের পায়, খদ্দেরের ঘটে ঠন্ঠন্। সে রাস্তার ওপারে খানিকটা দূরে খেতের পাশে বড়সড় এক জলাশয় দেখিয়ে বলে, ‘ওইহানে অনেক টাকি মাছ আছে। ওইগুল্যান ডুব দিয়া টুকাইয়া লন। টুকাইয়া যে টাকি পাওয়া যায়, এইডাই তো টুকিটাকি।’
দোকানির বুদ্ধির বহরে টিটু ধন্য। মনে মনে তাকে বাহবা দেয় সে। ছাত্রজীবনে অঙ্ক আর বিজ্ঞানে বরাবরই নাস্তানাবুদ হয়েছে টিটু। এ কারণে গণিতবিদ আর বিজ্ঞানীরা তার দুই চোখের বিষ। এর মধ্যে সবচেয়ে অপছন্দ করে সে আইজ্যাক নিউটনকে। মনে মনে তাঁর উদ্দেশে টিটু বলে, ‘এই দোকানি আপনার সময় জন্মাইলে ভাতে মরতেন।’
শার্ট-প্যান্ট খুলে শুধু জাঙিয়া নিয়ে জলে নেমে পড়ে টিটু। কোমর-জলে ঝপাঝপ ডুব দিয়ে টাকি খুঁজে বেড়ায়। এদিকে তার চুলের ভেতর লুকানো রং পানিতে ভিজে ছড়িয়ে একাকার।
পাশের এক খেতে মাটির ডেলা কুড়াচ্ছিল এক বুড়ো চাষি। বাড়িতে লেপা-পোছার কাজে লাগাবে। ভরদুপুরের রোদে রং-মাখা তাগড়া যুবককে পানিতে বারবার ডুব দিতে দেখে সে ঠাওরাল, নির্ঘাত বায়ু চড়েছে মাথায়। কিন্তু এভাবে ডুব দিতে দিতে তো কাহিল হয়ে পড়বে বেচারা। সে তড়িঘড়ি ডেলাগুলো গামছায় বেঁধে জলাশয়ের ধারে গিয়ে দাঁড়াল। বলল, ‘ও বাবা, এইভাবে বারবার ডুব দিতাছ ক্যান? কী খোঁজো?’
টিটু হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, ‘টাকি মাছ খুঁজি। টুকাইনা টাকি জড়ো করলে টুকিটাকি হইব। ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি নিতে হইব। মায় নিতে কইছে।’
বুড়ো টের পেল, সে যা ভেবেছে ঠিক তা-ই। যুবকের মাথার নাটবোল্ট সব ঢিলা। মায়া হলো বুড়োর। সে বলল, ‘এই পগারে টাকি দূরে থাইক, একখান তিত পুঁডিও নাই।’
ডুবাডুবি ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায় টিটু। হতাশ কণ্ঠে বলে, ‘কিন্তু আমার তো টুকিটাকি না হইলে চলব না।’
বুড়ো ভাবে, বেকুব বেটাকে আগে জল থেকে বাঁচানো যাক। সে ডেলার পোঁটলা দেখিয়ে বলল, ‘টুকিটাকি পানিতে থাকে কে কইছে তোমারে? এই পোঁটলাডা দেখতাছো, এর মইধ্যে আছে টুকিটাকি। এইডা লইয়া যাও।’
খানিক পর ডেলার পোঁটলা নিয়ে বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে হাজির রং-মাখা টিটু। তাকে দেখে সে বাড়ির সবাই আতঙ্কিত। এ আবার কোন্ পাগল! অনেক দিন ওই বাড়িতে না যাওয়ায় তার চেহারা কারও মনে নেই। টিটু যতই বলে, সে এ বাড়ির মেজো জামাইয়ের ছোট ভাই, বাড়ির লোকজনের সন্দেহ তত বাড়ে। গোল বাধায় টুকিটাকির পোঁটলাটা। সবাই এবার নিশ্চিত হয়, পাগল না হলে কেউ কুটুমবাড়ি মাটির ডেলা নিয়ে যায়! উত্তম-মধ্যম খেয়ে দৌড়ে পালায় টিটু।
সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফেরে বিধ্বস্ত টিটু। রং-মাখা টিটুকে দেখে আপনজনেরা ভাবেন, ও-বাড়িতে খুব ফুর্তি হয়েছে। বড় ভাই দাঁত বের করে বলেন, ‘তা খাওয়া-দাওয়া কেমুন হইল রে, টিটু?’
টিটু গাল ফুলিয়ে বলে, ‘খুব ভালো হইছে। এমুন খাবার জন্মেও খাই নাই।’
‘তা, কী কী খাইলি?’
‘কিল, ঘুসি, ঝাঁটা...!’
No comments