মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-কামারুজ্জামানের পরিকল্পনায় সোহাগপুর গ্রামে গণহত্যা
একাত্তরের ২৫ জুলাই শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে আলবদরের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরুষদের হত্যা ও নারীদের ধর্ষণ করে। গ্রামটিতে গণহত্যা করা হয়েছিল জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামানের পরিকল্পনা ও পরামর্শে।
সেদিন একসঙ্গে ১২০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। ৪০ বছর ধরে গ্রামটি ‘বিধবাপল্লি’ নামে পরিচিত।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপনকালে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপক্ষ এ তথ্য জানায়। কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয়েছে। ২৫ মার্চ আসামিপক্ষের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
সকালে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্যের (এক সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন) ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর আগেই কামারুজ্জামানকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে নয় ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। সেগুলো হলো: হত্যা, গণহত্যা, দেশান্তরে বাধ্য করা, নির্যাতন, ধর্ষণ, ব্যাপক নিধনযজ্ঞ চালানো, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনের ষড়যন্ত্র, উসকানি ও প্ররোচনা দেওয়া এবং উচ্চপর্যায়ের নেতা হওয়ায় সব ধরনের অপরাধের দায়।
দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযোগ উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম বলেন, সোহাগপুর গ্রামে গণহত্যার শিকার অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, শেরপুরের বাসিন্দা কামারুজ্জামান একাত্তরে ময়মনসিংহ জেলায় ইসলামী ছাত্রসংঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও আলবদরের প্রধান সংগঠক ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ অঞ্চলে দ্রুত আলবদর বাহিনী গড়ে ওঠে এবং তারা নানা স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করে। জুন মাসের প্রথম দিকে শেরপুরের মৃধানারায়ণপুর গ্রামের এমদাদুল হক ভারতে চলে গেলে কামারুজ্জামানের সহযোগিতায় আলবদর তাঁর বাড়িতে ক্যাম্প স্থাপন করে। আলবদর ওই গ্রামের অনেকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধ শেষে এমদাদুল হক বাড়ি ফিরে এসে ভিটি খুঁড়তে গেলে চার ব্যক্তির হাড়গোড় বেরিয়ে আসে।
অভিযোগে বলা হয়, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতেও আলবদরের ক্যাম্প ছিল। জুলাইয়ের শেষ দিকে আনন্দমোহন কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজউদ্দিন ওই এলাকায় এসে এক ব্যক্তির বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। খবর পেয়ে আলবদরের সদস্যরা ওই বাসা ঘেরাও করে তাঁকে ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে কামারুজ্জামান বিভিন্ন স্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য উত্তেজনাকর বক্তব্যের মাধ্যমে উসকানি ও প্ররোচনা দিয়েছেন। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ‘কাফের’ বলে উল্লেখ করেন এবং নির্বিচারে হত্যা করার নির্দেশ দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শেরপুরের ব্যবসায়ী সুরেন্দ্রমোহন সাহার বাড়ি অস্ত্রের মুখে দখল করে কামারুজ্জামান সেখানে আলবদরের ক্যাম্প গড়ে তোলেন। নভেম্বর মাসে কামারুজ্জামানের নির্দেশে জহুরুল হক মুন্সী নামের এক ব্যক্তিকে ওই ক্যাম্পে নিয়ে চরম নির্যাতন চালানো হয়। কামারুজ্জামান নিজেও তাঁকে নির্যাতন করেছেন। রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক সন্ধ্যায় মুজিবর রহমানসহ চার-পাঁচজনকে রঘুনাথ বাজারের আলবদর ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করার পর থানায় সোপর্দ করা হয়। চার দিন পর তাঁদেরসহ ১১ জনকে ঝিনাইগাতী উপজেলার আহমেদনগরে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের একটি গর্তের পাশে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। কামারুজ্জামান ও তাঁর সহযোগী কামরান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের ২৯ জুন নালিতাবাড়ীর কালীনগর গ্রামের বদিউজ্জামানকে আলবদরের সদস্যরা ঝিনাইগাতীর রামনগর গ্রামের আহমেদ মেম্বারের বাড়ি থেকে ধরে আহমেদনগর সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। ওই সেনাক্যাম্পে কামারুজ্জামানের নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
অভিযোগ উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আলবদর ও ছাত্রসংঘের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম-এর একটি খবর উদ্ধৃত করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী ‘কিলিং স্কোয়াড’ হিসেবে আলবদর বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। একাত্তরের ১৬ মে ছাত্রসংঘের ৪৭ জনকে সাত থেকে ১২ দিনের সম্মিলিত সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র চালানো, মাইন নিষ্ক্রিয় করা, বিমানবিধ্বংসী কামান চালানো শেখানো হয়। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁদের আলবদর বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এই বাহিনী সূর্যদি, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, জগৎপুর প্রভৃতি এলাকায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, সাংগঠনিক কাঠামোতে কামারুজ্জামান উচ্চপর্যায়ের নেতা ছিলেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এবং অধীন কর্মীরা সেই নির্দেশ পালন করেছে। এ জন্য অধীন কর্মীদের অপরাধের দায় কামারুজ্জামানের ওপর বর্তায়।
অভিযোগ উপস্থাপন শেষ হলে রাষ্ট্রপক্ষ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে। ট্রাইব্যুনাল পরে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৫ মার্চ দিন ধার্য করেন।
গোলাম আযমের মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন ২৫ মার্চ: জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগের বিষয়ে শুনানিতে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৫ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল ট্রাইব্যুনালের এক সদস্য অনুপস্থিত থাকায় আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক শুনানির দিন পুনর্নির্ধারণের আরজি জানালে ট্রাইব্যুনাল এই সিদ্ধান্ত দেন।
দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত খবরে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি: গতকাল ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের শুরুতেই দৈনিক সংগ্রাম-এ প্রকাশিত একটি খবর নিয়ে আপত্তি জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেয়াদ-আল-মালুম। তিনি বলেন, ‘মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী হাজিরে আবারও ব্যর্থ প্রসিকিউশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি শুধু আসামিপক্ষের বক্তব্য দিয়ে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, শুধু এক পক্ষের বক্তব্য দিয়ে খবর দেওয়া ঠিক নয়। তবে একজন সাংবাদিক যদি মনে করেন, সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের কিছু বলার নেই। সাংবাদিকেরা এমনিতেই ট্রাইব্যুনালকে সহযোগিতা করেন, আরেকটু সহযোগিতা করবেন।
এর আগেও ট্রাইব্যুনাল কয়েকবার খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আদালতের সমালোচনা করা যাবে, কিন্তু যথাযথ ভাষা প্রয়োগ করতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপনকালে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপক্ষ এ তথ্য জানায়। কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয়েছে। ২৫ মার্চ আসামিপক্ষের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
সকালে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্যের (এক সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন) ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর আগেই কামারুজ্জামানকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে নয় ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। সেগুলো হলো: হত্যা, গণহত্যা, দেশান্তরে বাধ্য করা, নির্যাতন, ধর্ষণ, ব্যাপক নিধনযজ্ঞ চালানো, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনের ষড়যন্ত্র, উসকানি ও প্ররোচনা দেওয়া এবং উচ্চপর্যায়ের নেতা হওয়ায় সব ধরনের অপরাধের দায়।
দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযোগ উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম বলেন, সোহাগপুর গ্রামে গণহত্যার শিকার অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, শেরপুরের বাসিন্দা কামারুজ্জামান একাত্তরে ময়মনসিংহ জেলায় ইসলামী ছাত্রসংঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও আলবদরের প্রধান সংগঠক ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ময়মনসিংহ অঞ্চলে দ্রুত আলবদর বাহিনী গড়ে ওঠে এবং তারা নানা স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করে। জুন মাসের প্রথম দিকে শেরপুরের মৃধানারায়ণপুর গ্রামের এমদাদুল হক ভারতে চলে গেলে কামারুজ্জামানের সহযোগিতায় আলবদর তাঁর বাড়িতে ক্যাম্প স্থাপন করে। আলবদর ওই গ্রামের অনেকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধ শেষে এমদাদুল হক বাড়ি ফিরে এসে ভিটি খুঁড়তে গেলে চার ব্যক্তির হাড়গোড় বেরিয়ে আসে।
অভিযোগে বলা হয়, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতেও আলবদরের ক্যাম্প ছিল। জুলাইয়ের শেষ দিকে আনন্দমোহন কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজউদ্দিন ওই এলাকায় এসে এক ব্যক্তির বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। খবর পেয়ে আলবদরের সদস্যরা ওই বাসা ঘেরাও করে তাঁকে ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে কামারুজ্জামান বিভিন্ন স্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য উত্তেজনাকর বক্তব্যের মাধ্যমে উসকানি ও প্ররোচনা দিয়েছেন। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ‘কাফের’ বলে উল্লেখ করেন এবং নির্বিচারে হত্যা করার নির্দেশ দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শেরপুরের ব্যবসায়ী সুরেন্দ্রমোহন সাহার বাড়ি অস্ত্রের মুখে দখল করে কামারুজ্জামান সেখানে আলবদরের ক্যাম্প গড়ে তোলেন। নভেম্বর মাসে কামারুজ্জামানের নির্দেশে জহুরুল হক মুন্সী নামের এক ব্যক্তিকে ওই ক্যাম্পে নিয়ে চরম নির্যাতন চালানো হয়। কামারুজ্জামান নিজেও তাঁকে নির্যাতন করেছেন। রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক সন্ধ্যায় মুজিবর রহমানসহ চার-পাঁচজনকে রঘুনাথ বাজারের আলবদর ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করার পর থানায় সোপর্দ করা হয়। চার দিন পর তাঁদেরসহ ১১ জনকে ঝিনাইগাতী উপজেলার আহমেদনগরে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের একটি গর্তের পাশে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। কামারুজ্জামান ও তাঁর সহযোগী কামরান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের ২৯ জুন নালিতাবাড়ীর কালীনগর গ্রামের বদিউজ্জামানকে আলবদরের সদস্যরা ঝিনাইগাতীর রামনগর গ্রামের আহমেদ মেম্বারের বাড়ি থেকে ধরে আহমেদনগর সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। ওই সেনাক্যাম্পে কামারুজ্জামানের নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
অভিযোগ উপস্থাপনকালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আলবদর ও ছাত্রসংঘের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম-এর একটি খবর উদ্ধৃত করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী ‘কিলিং স্কোয়াড’ হিসেবে আলবদর বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। একাত্তরের ১৬ মে ছাত্রসংঘের ৪৭ জনকে সাত থেকে ১২ দিনের সম্মিলিত সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র চালানো, মাইন নিষ্ক্রিয় করা, বিমানবিধ্বংসী কামান চালানো শেখানো হয়। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁদের আলবদর বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এই বাহিনী সূর্যদি, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, জগৎপুর প্রভৃতি এলাকায় ব্যাপক গণহত্যা চালায়।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, সাংগঠনিক কাঠামোতে কামারুজ্জামান উচ্চপর্যায়ের নেতা ছিলেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এবং অধীন কর্মীরা সেই নির্দেশ পালন করেছে। এ জন্য অধীন কর্মীদের অপরাধের দায় কামারুজ্জামানের ওপর বর্তায়।
অভিযোগ উপস্থাপন শেষ হলে রাষ্ট্রপক্ষ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে। ট্রাইব্যুনাল পরে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৫ মার্চ দিন ধার্য করেন।
গোলাম আযমের মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন ২৫ মার্চ: জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগের বিষয়ে শুনানিতে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৫ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল ট্রাইব্যুনালের এক সদস্য অনুপস্থিত থাকায় আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক শুনানির দিন পুনর্নির্ধারণের আরজি জানালে ট্রাইব্যুনাল এই সিদ্ধান্ত দেন।
দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত খবরে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি: গতকাল ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের শুরুতেই দৈনিক সংগ্রাম-এ প্রকাশিত একটি খবর নিয়ে আপত্তি জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেয়াদ-আল-মালুম। তিনি বলেন, ‘মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী হাজিরে আবারও ব্যর্থ প্রসিকিউশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি শুধু আসামিপক্ষের বক্তব্য দিয়ে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, শুধু এক পক্ষের বক্তব্য দিয়ে খবর দেওয়া ঠিক নয়। তবে একজন সাংবাদিক যদি মনে করেন, সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের কিছু বলার নেই। সাংবাদিকেরা এমনিতেই ট্রাইব্যুনালকে সহযোগিতা করেন, আরেকটু সহযোগিতা করবেন।
এর আগেও ট্রাইব্যুনাল কয়েকবার খবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আদালতের সমালোচনা করা যাবে, কিন্তু যথাযথ ভাষা প্রয়োগ করতে হবে।
No comments