কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী by মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আমি যাই ১৯৯৭ বা ১৯৯৮ সালে। প্রথম দর্শনেই ভালো লেগে গেল বিশ্ববিদ্যালয়টি, এর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ ক্যাম্পাস। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বাকৃবি এ ব্যাপারে খুব বেশি যে পিছিয়ে আছে তা বলব না।
তবে উন্নতির আরও অনেক সুযোগ আমাদের আছে এবং সময়ের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে অতি দ্রুত আমাদের তা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে অ্যাগ্রোনমি (অমৎড়হড়সু), হর্টিকালচার (ঐড়ৎঃরপঁষঃঁৎব), ডেইরি (উধরৎু), পোলট্রি (চড়ঁষঃৎু) এবং অ্যাকুয়াকালচারে (অয়ঁধপঁষঃঁৎব) এতদিনেও কেন অনার্স ডিগ্রি চালু হলো না তা আমার বোধগম্য নয়। অতি দ্রুত আমাদের সুনির্দিষ্ট বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করতে হবে এবং মাস্টার্সে গবেষণাভিত্তিক আরও নতুন বিষয়ের সংযোজন করতে হবে।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের সীমাবদ্ধতা বহুমাত্রিক, এরপরও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও আজ একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়। যার সুফল ভোগ করছি আমরা, আমার মতো আরও অনেকে। প্রথম যখন নরওয়েজিয়ান ইউনিভার্সিটি অব লাইফ সায়েন্সে এলাম, তখন এর গঠন দেখে আমার বাকৃবির কথা মনে পড়ে গেল। পরে জানলাম, এটিও আগে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামেই ছিল, পরে নাম পরিবর্তন করে আজকের এই নাম ধারণ করেছে। আজ পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বাকৃবির গ্র্যাজুয়েট দু'একজন পাওয়া যায় না। সেখানে কেউবা প্রফেসর, কেউ গবেষক, আবার কেউ বড় কোনো কর্মকর্তা। মোটকথা, তারা সবাই আজ শুধু নিজেদেরই প্রতিষ্ঠিত করেননি, একই সঙ্গে দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাংলাদেশকে। আর এই কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
কৃষিকে আমরা জন্মগতভাবে পেয়েছি, এটি আমাদের জন্য প্রকৃতি প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা বলেই আমার মনে হয়। কৃষির প্রতি জাতিগতভাবে আমাদের এত অনীহা, পেশাগতভাবেও তাই এটি খুব বেশি প্রণিধানযোগ্য নয়। কিন্তু বাংলাদেশের বাইরে প্রতিটি দেশেই দেখেছি কৃষির কী কদর, কী সম্মান কৃষিবিদদের। পৃথিবীতে যেসব রাষ্ট্রকে শক্তিধর বিবেচনা করা হয়, তাদের সবারই রয়েছে নিজস্ব শক্তিশালী কৃষি ব্যবস্থা। যার কৃষি যত বেশি শক্তিশালী, সে দেশ তত বেশি শক্তিশালী।
খাদ্য নিরাপত্তা বিশ্বজুড়ে বর্তমান সময়ের এক আলোচিত ইস্যু। বাকৃবি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় আজ এক আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কেবল সম্ভব হয়েছে এর ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশিল্গষ্ট অন্যদের সম্মিলিত নিরলস প্রচেষ্টার কারণে। দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে চাইলে আমার মনে হয় অন্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বাকৃবির ছাত্রদের সুযোগ অনেক বেশি। অন্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বহির্বিশ্বে বাকৃবির ছাত্রসংখ্যা আনুপাতিক হারে অনেক বেশি। আনন্দের কথা হলো, যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র নিজস্ব অর্থায়নে পড়াশোনা করতে দেশের বাইরে যায়, সেখানে বাকৃবির ছাত্রছাত্রীরা বেশিরভাগই যায় বৃত্তি নিয়ে। আর অনেক সময় বৃত্তির আবেদন করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত থাকতে হয়। এদিক দিয়েও বাকৃবির অবস্থান দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।
নরওয়েতে বসে যখন অবসর মেলে, তখনও মনের অজান্তেই বাকৃবি নিয়ে নানা ভাবনা মনের মাঝে উঁকি দেয়। বাকৃবি নিয়ে যখনই কোনো ভালো খবর দেখি তখন গর্বে বুক ভরে যায়_ এই আমার বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তেমনিভাবে খারাপ খবরগুলোও আমাদের কষ্ট দেয়; তবে তা কাটিয়ে উঠে নতুন স্বপ্ন দেখতে আমাদের বেশি সময় লাগে না। কারণ এ যে আমাদের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। শুভকামনা তোমার ৫০ বছর পূর্তিতে।
মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম : নরওয়েতে পিএইচডি অধ্যয়নরত সহকারী অধ্যাপক ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগ, বাকৃবি ময়মনসিংহ
dairyislambau@gmail.com
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের সীমাবদ্ধতা বহুমাত্রিক, এরপরও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও আজ একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়। যার সুফল ভোগ করছি আমরা, আমার মতো আরও অনেকে। প্রথম যখন নরওয়েজিয়ান ইউনিভার্সিটি অব লাইফ সায়েন্সে এলাম, তখন এর গঠন দেখে আমার বাকৃবির কথা মনে পড়ে গেল। পরে জানলাম, এটিও আগে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামেই ছিল, পরে নাম পরিবর্তন করে আজকের এই নাম ধারণ করেছে। আজ পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বাকৃবির গ্র্যাজুয়েট দু'একজন পাওয়া যায় না। সেখানে কেউবা প্রফেসর, কেউ গবেষক, আবার কেউ বড় কোনো কর্মকর্তা। মোটকথা, তারা সবাই আজ শুধু নিজেদেরই প্রতিষ্ঠিত করেননি, একই সঙ্গে দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাংলাদেশকে। আর এই কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
কৃষিকে আমরা জন্মগতভাবে পেয়েছি, এটি আমাদের জন্য প্রকৃতি প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা বলেই আমার মনে হয়। কৃষির প্রতি জাতিগতভাবে আমাদের এত অনীহা, পেশাগতভাবেও তাই এটি খুব বেশি প্রণিধানযোগ্য নয়। কিন্তু বাংলাদেশের বাইরে প্রতিটি দেশেই দেখেছি কৃষির কী কদর, কী সম্মান কৃষিবিদদের। পৃথিবীতে যেসব রাষ্ট্রকে শক্তিধর বিবেচনা করা হয়, তাদের সবারই রয়েছে নিজস্ব শক্তিশালী কৃষি ব্যবস্থা। যার কৃষি যত বেশি শক্তিশালী, সে দেশ তত বেশি শক্তিশালী।
খাদ্য নিরাপত্তা বিশ্বজুড়ে বর্তমান সময়ের এক আলোচিত ইস্যু। বাকৃবি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় আজ এক আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কেবল সম্ভব হয়েছে এর ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশিল্গষ্ট অন্যদের সম্মিলিত নিরলস প্রচেষ্টার কারণে। দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে চাইলে আমার মনে হয় অন্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বাকৃবির ছাত্রদের সুযোগ অনেক বেশি। অন্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বহির্বিশ্বে বাকৃবির ছাত্রসংখ্যা আনুপাতিক হারে অনেক বেশি। আনন্দের কথা হলো, যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র নিজস্ব অর্থায়নে পড়াশোনা করতে দেশের বাইরে যায়, সেখানে বাকৃবির ছাত্রছাত্রীরা বেশিরভাগই যায় বৃত্তি নিয়ে। আর অনেক সময় বৃত্তির আবেদন করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত থাকতে হয়। এদিক দিয়েও বাকৃবির অবস্থান দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।
নরওয়েতে বসে যখন অবসর মেলে, তখনও মনের অজান্তেই বাকৃবি নিয়ে নানা ভাবনা মনের মাঝে উঁকি দেয়। বাকৃবি নিয়ে যখনই কোনো ভালো খবর দেখি তখন গর্বে বুক ভরে যায়_ এই আমার বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তেমনিভাবে খারাপ খবরগুলোও আমাদের কষ্ট দেয়; তবে তা কাটিয়ে উঠে নতুন স্বপ্ন দেখতে আমাদের বেশি সময় লাগে না। কারণ এ যে আমাদের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। শুভকামনা তোমার ৫০ বছর পূর্তিতে।
মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম : নরওয়েতে পিএইচডি অধ্যয়নরত সহকারী অধ্যাপক ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগ, বাকৃবি ময়মনসিংহ
dairyislambau@gmail.com
No comments