আরামদায়ক কনভার্স by তৌফিক অপু
সত্যিই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের এ দেশ। যে দেশে প্রকৃতি তার রূপ বদলায় আপন মহিমায়। ঋতুভিত্তিক এই দেশে একেক ঋতু একেক রূপ নিয়ে ধরা দেয়।
প্রতিটি ঋতুর স্বকীয় বৈশিষ্ট্য মুগ্ধ করে আমাদের। ঋতুর পালা বদলের চক্রে শীতকাল অতিবাহিত হচ্ছে। সকালের কুয়াশার জালে আবদ্ধ সূর্যের বিকিরণ যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি। ঘাসের কণায় শিশিরবিন্দু বার বারই যেন কবিগুরুর কবিতাটিকে মনে করিয়ে দেয়। শীতের সকালের এ দৃশ্য সত্যি আন্দোলিত করে তুলে মনকে। সকালের হিম বাতাস মনে করিয়ে দেয় শীতে এখনও চলে যায়নি। বার বারই মনে হয় কুয়াশার চাদরে হারিয়ে যেতে। আড়মোড়া দিয়ে বিছানাটা যেন ছাড়তে মন চায় না। ঋতুর পালা বদলে বইছে শীতের শেষ প্রহরের হীমেল হাওয়া। শীতের আমেজ এখনও বিরাজ করছে। এ সময়টাতে চারদিকে উৎসবের আমেজ লেগে থাকে। পারিবারিক, সামাজিক কিংবা ধর্মীয় যে কোন উৎসবই এ মৌসুমে এসে যেন অন্য রকম আবহ সৃষ্টি করে। এ সময়টায় উৎসবের আকাশ যেন আরও রঙিন হয়ে ওঠে। উৎসবপ্রিয় জাতি হিসেবে বাঙালী অনন্য বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। যে কোন উৎসবেই জাতিধর্মনির্বিশেষে একাকার হয়ে যেতে পারে। ভেদাভেদ ভুলে উৎসবকে করে তোলে আরও বর্ণময়। উৎসব উপলক্ষে নেয়া হয় নানা রকমের প্রস্তুতি। বাঙালী এখন ফ্যাশনসচেতন জাতি হিসেবে স্বীকৃত। বিশ্ব ফ্যাশন ট্রেন্ডের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে এদেশের ফ্যাশন জগত। আর এ পথ চলায় ফ্যাশন হাউসগুলোও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ফ্যাশন হাউসগুলো সবসময় সচেষ্ট থাকে ক্রেতার রুচি ও চাহিদা মোতাবেক পোশাক সরবরাহ করতে। যখন-যে উপলক্ষ সামনে এসে দাঁড়ায় সে উপলক্ষ নিয়েই অগ্রিম প্রস্তুতি সেরে ফেলে তারা। যে কারণে সাধারণ মানুষেরও নিত্যনতুন ফ্যাশন ট্রেন্ডের সঙ্গে পরিচিত হতে সময় লাগে না। এ আবহাওয়ায় পথ চলায় অন্যতম এক উপাদান হচ্ছে জুতো। সারাবছরই জুতো আমাদের সর্বক্ষণিক সঙ্গী হলেও শীত এলে এর কদর বেড়ে যায় বহুগুণ। যে কারণে শীত আসার আগেই নানান ডিজাইন এবং কালারের জুতোর পসরা সাজিয়ে থাকে দোকানিরা। তবে একটা সময় ছিল যখন জুতো শুধু প্রয়োজনের তাগিদে ব্যবহার হতো। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে জুতো এখন ফ্যাশনের একটি অঙ্গ। জুতোর মধ্যে অনেক ভেরিয়েশন রয়েছে। তবে তরুণ প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় জুতো হচ্ছে কনভার্স। কাপড়, সিনথেটিক এবং লেদার যে কোন কনভার্সেই তরুণরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কনভার্সের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হচ্ছে কালার এবং ডিজাইন। গাঢ় কালারের কনভার্সের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। তরুণ-তরুণী উভয়েরই পছন্দের তালিকার শীর্ষে কনভার্স। আরামদায়ক এবং সহনীয় দাম কনভার্সকে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিহাব জানান, কনভার্স সারা বছর পরার উপযোগী। হাল্কা হওয়াতে পরেও আরাম। তারুণ্যের আকর্ষণ গাঢ় রঙের প্রতি। কনভার্সগুলো গাঢ় রঙের হওয়াতে এর জৌলুস আরও বেড়ে গেছে। নগরীর প্রায় সব দোকানেই দেখা মিলবে কনভার্সের। কনভার্স এখন ফ্যাশনের একটি অংশ। ক্যাম্পাস, বন্ধুদের আড্ডা কিংবা ঘুরে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে কনভার্স তরুণ প্রজন্মের প্রথম পছন্দ। এ প্রসঙ্গে এলিফ্যান্ট রোডের জুতোর ব্যবসায়ী আলী ইমরান জানান, আগে কেডসের ব্যবহার প্রচুর ছিল তরুণদের মধ্যে। কিন্তু কনভার্সের প্রচলন হওয়ায় এখন কেডসের চাহিদা একটু হলেও কমেছে। কনভার্স কেডস এবং কাপড়ের জুতোর ডিজাইন মিক্্রড হওয়ায় মানিয়ে যায় দারুণ। যে কারণে খুব দ্রুত তরুণদের পছন্দের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। আর চাহিদা মোতাবেগ কনভার্সের কালেকশন বেড়ে যাচ্ছে। আরামদায়ক এবং দেখতে সুন্দর কনভার্স এখন পথ চলার নিত্যসঙ্গী। বিশেষ করে এই শীতে এর চাহিদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শীত কিংবা ধুলোবালি থেকে রক্ষা যাই হোক না কেন কনভার্স অনায়াসে মানিয়ে যায়। ধুয়ে বা মুছে রাখলেই আবার নতুনের মতো চকচকে। রঙ করার ঝামেলা নেই বললেই চলে। দামও হাতের নাগালে। একেকটি কনভার্স ৮০০ থেকে ৩২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। ষড়ঋতুর যে কোন ঋতুতেই কনভার্স মানানসই। তবে শীতকালে চাহিদা যেন একটু বেশিই থাকে। তাছাড়া শীতে ফ্যাশনের গতি বৃদ্ধি পায় বহুগুণে। সেই ধারাবাহিকতায় কনভার্স এখন তুঙ্গে।ছবি : মোশারফ
মডেল : সোহাগ ও রজনী
No comments