ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুলহাস
বাউফল থানায় মামলা নম্বর ৬। তারিখ ২০০৩ সালের ৫ ফেব্রম্নয়ারি। এই মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি ক্যাডার ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলহাস।
২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ইউপি নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে একটি ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর করে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলাটি করা হয়। ওই সময় বাউফলের সূর্যমণি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলহাস তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের পক্ষে রাজাপুর এফতেদায়ী মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে ব্যালটসহ বাক্স প্রিসাইডিং অফিসার এমাদুল হককে মারধর করে অস্ত্রেও মুখে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও জুলহাস ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় ও কোর্টে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখল, লুটপাট, জালিয়াতির মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের মামলা রয়েছে। মামলা নম্বর জিআর ৩০৫ তারিখ ১২/৮/০৬ কোতোয়ালি থানা বরিশাল। জুলহাস তার আপন মামা রেজাউল করিম মন্টুকে সায়েসত্মা করতে তার ভাই বাদশাকে দিয়ে একটি সাজানো অপহরণ মামলা দায়ের করেছিল। এই মামলায় ভিকটিম করা হয়েছিল সন্ত্রাসী জুলহাসকে। মামলাটি তদনত্মে মিথ্যা প্রমাণিত হলে বাদী ও ভিকটিম জুলহাসের বিরম্নদ্ধে টু ইলেভেনের মামলা রম্নজু করা হয়। জুলহাস এতটা ভয়ঙ্কর ছিল যে, তার সন্ত্রাসী কর্মকা-ের হাত থেকে রা পায়নি আপনজনরাও। মামলা নম্বর জিআর ৬৮ তারিখ ২৪/৪/০৬ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় মামা রেজাউল করিমের শাশুড়ি সালেহা বেগমের ওপর নির্যাতন চালায় জুলহাস। মারধর করে তাকে গুরম্নতর জখম করে। তার নিষ্ঠুরতার হাত থেকে রা পায়নি মামি শিরিন রেজা চৌধুরীও। মামলা নম্বর জিআর-১৩ তারিখ ২৭/৪/০৭ বাকিতে ওষুধ না দেয়ায় সন্ত্রাসী জুলহাস একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে মারধর করে নগদ ১৬ হাজার টাকা , একটি সোনার চেন ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। মামলা নম্বর জিআর ২১৩ তারিখ ১৮/৯/০৮ স্থানীয় এক ব্যক্তি দুস্থদের মধ্যে যাকাতের টাকা বিতরণের সময় সন্ত্রাসী জুলহাস ও তার বাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে মারধর করে তার কাছ থেকে যাকাতের ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। মামলা নম্বর সিআর-৫৫ তারিখ ৯/১/০৩ বাউফল সাব রেজিস্ট্র্রারের স্বার জাল জালিয়াতি করে অন্যের জমি নিজ নামে ভুয়া দলিল করে নেয়ায় জুলহাসের বিরম্নদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর সিআর ১৬৫ তারিখ ২০/১১/০৩ বছর সন্ত্রাসী জুলহাস তার পেশীশক্তি প্রভাব দেখিয়ে দাশপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমান ও মিজানুর রহমান গংয়ের ৪ একর সম্পত্তি দখল করে নেয়। মামলা নম্বর জিআর ৭৩ তারিখ ১০/৫/০৭ দাশ পাড়া গ্রামে প্রতিপরে ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে। সন্ত্রাসী জুলহাসের নির্য়াতনের শিকার হয়েছেন সংবাদের সাংবাদিক আল মামুন। জুলহাস ওই সাংবাদিককে উপজেলা পরিষদ এলাকায় প্রকাশ্যে মারধর করে। এ ছাড়াও জুলহাসের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সমকালের সাংবাদিক জিতেন্দ্র নাত রায়। জুলহাস তাকে হাসপাতালের সামনে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। সাংবাদিক জিতেন্দ্র নাথ তার ভয়ে চিকিৎসা নিতেও সাহস পাননি। জুলহাসের হাতে নির্যাতিত এমন অনেক সাধারণ মানুষ রয়েছে যার তার ভয়ে কোন ধরনের আইনী সহায়তা নিতে সাহস পাননি। মহাজোট সরকারের সময়ও বিএনপির ক্যাডার জুলহাস নানা সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন। জুলহাসের সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ে জনকণ্ঠে সংবাদ ছাপা হলে জুলহাস সাংবাদিক বাচ্চুর বিরম্নদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা করে। জুলহাসের বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকা-ে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও সে রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
No comments