শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্টকারীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ- মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অসন্তোষ
স্বাধীনতা বিরোধীরাই শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্টকারী। দেশব্যাপী চলমান চিরুনি অভিযানের প্রতিবাদে দূষিত জামায়াত-শিবির সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা।
ভিডিও ফুটেজ দেখে 'শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এদিকে শহীদ মিনারে উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে কিভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে এজন্য বৈঠকে অসনত্মোষ প্রকাশ করা হয়।রবিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধায় অর্পিত ফুল পদতলে পিষ্ট করে এ ঘটনার জন্ম দেয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনকণ্ঠ পত্রিকায় উচ্ছৃঙ্খলতার ছবি ছাপা হয়েছে। এছাড়া টেলিভিশন চ্যানেলেও এই সংবাদ প্রচার হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করম্নন। এ জাতীয় কর্মকা- মহান ভাষা শহীদ তথা বাঙালী চেতনাকে অবমাননার শামিল। আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর প্রতি অসনত্মোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাদের সামনে এ ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা কী ভাবে ঘটে! এ ব্যাপারে তাদেরও সতর্ক করে দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি। উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারীদের বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে মন্ত্রিসভার সদস্যরা একমত পোষণ করেছেন।
প্রত্যৰদর্শীরা জানিয়েছে, হঠাৎ করেই একদল তরম্নণ শহীদ মিনারের বেদীতে উঠে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধায় ভালবাসায় অর্পিত ফুলগুলো ইচ্ছামতো ছুড়ে ফেলতে থাকে। কেউ কেউ শহীদদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধার সেই ফুল পদতলে পিষ্ট করে উলস্নাস প্রকাশ করতে থাকে। শাহবাগ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, দুনিয়া কাঁপানো সেই ৩০ মিনিটের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই ঘটে এ ঘটনা। হাজার হাজার মানুষ অনুষ্ঠান শেষে শহীদ মিনারের সামনের রাসত্মা দিয়ে যে যার যার গনত্মব্যে যেতে থাকেন। এ সময় ১০/১৫ জনের একটি গ্রম্নপ রাসত্মা ছেড়ে শহীদ মিনারের দিকে রওনা হয়। পুলিশ তাদের শহীদ মিনারে উঠতে বাধা দেয়। গ্রম্নপটি পুলিশকে জানায়, ভিড়ের কারণে রাসত্মা দিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। তারা জরম্নরী কাজের কথা বলে শহীদ মিনার চত্বরের বাগান দিয়ে হেঁটে রাসত্মা পার হয়ে যাবে। শহীদ মিনারে উঠবে না। এমন প্রতিশ্রম্নতি দেয় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের। প্রচ- ভিড়ের কারণে পুলিশ এ বিষয়ে তেমন আপত্তি করেনি। মূল শহীদ মিনারে উঠেই চোখের পলকে তারা বেদীতে যায়। তার পরেই ঘটে সেই ন্যক্কারজনক ঘটনা। এ সময় আরও কিছু লোক তাদের সঙ্গে পবিত্রতা নষ্টে যোগ দেয়। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, স্বাধীনতা বিরোধীরাই পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করতে পারে। একটি গ্রম্নপ 'দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটের' অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। ভিড়ের সুযোগ নিয়ে শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট করে গ্রম্নপটি। ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে গোয়েন্দারা অনেকটাই নিশ্চিত। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। বিষয়টি মাথায় রেখেই স্বাধীনতা বিরোধীরা শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট করার মতো কাজ করতে পারে। দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিটের অনুষ্ঠানে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত-শিবিরের একটি গ্রম্নপ এ কাজ করতে পারে। দেশব্যাপী দূষিত জামায়াত-শিবির সদস্য গ্রেফতারে চিরম্নিন অভিযানের প্রতিবাদে তারা এ কাজ করতে পারে। শহীদ মিনার চত্বরে স্থাপিত ভিডিও ফুটেজ দেখে শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্টকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দৰিণ জোনের এডিসি মাহবুব আলম জানান।
No comments