খেলার মাঠে বাঙালীর সাফল্য by ইকবাল আজিজ
এবার আমরা সাউথ এশিয়ান গেমসে প্রমাণ করেছি, বাঙালী শুধু মেধা ও মননে সমৃদ্ধ নয়, সুযোগ পেলে তারা খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের দৈহিক উৎকর্ষেরও স্বার রাখতে পারে।
একটি দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বর্তমানে অনেকখানি প্রতিবিম্বিত হয় সে দেশের খেলাধুলার সাফল্যে। একসময় ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্য নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতা চলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে। ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সেই দিনগুলোতে বাস্তবিকই যেন যুদ্ধ চলত অলিম্পিকের মাঠে। তখন দেখা যেত নানা ধরনের ক্রীড়ায় পুঁজিবাদী দেশগুলো কিছুতেই পেরে উঠত না সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে। তখন বোঝা গিয়েছিল, একটি দেশের স্বাস্থ্যগত মানোন্নয়ন ও ক্রীড়া সাফল্যে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো এ বিষয়ে ছিল খুবই উদ্যোগী। দীর্ঘকাল পরে একাদশতম দক্ষিণ এশীয় গেমসে বাংলাদেশ যে প্রশংসনীয় সাফল্যের স্বার রেখেছে, মহাজোট সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছা ও উদ্যোগের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। ২০০৬ সালের আগে এর নাম ছিল সাফ গেমস। ১৯৮৪ সালে নেপালে এই দণি এশীয় ক্রীড়া শুরু হয়েছিল। পরে আফগানিসত্মানও এই প্রতিযোগিতায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে এবং এ প্রতিযোগিতা বর্তমানে দণি এশীয় দেশগুলোর আনন্দমেলায় পরিণত হয়েছে। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে দণি এশীয় দেশগুলোর মানুষের মধ্যে আত্মিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন আগামীতে নিঃসন্দেহে আরও জোরদার হবে।দণি এশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষের বসবাস। দারিদ্র্য, অশিা ও স্বাস্থ্যহীনতা এ দেশগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য। মানুষের জীবনে আনন্দ বলে কিছুই নেই; সর্বত্র হতাশা ও বিপর্যসত্ম জীবনব্যবস্থা। দণি এশিয়ার বেশিরভাগ দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গী তৎপরতা বর্তমানে একটি সাধারণ ব্যাপার। এত কিছু নেতিবাচক দিক ছাপিয়ে এবারের 'দণি এশীয় ক্রীড়া'য় বিশেষ করে বাংলাদেশ ও আফগানিসত্মানের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। ১৮টি সোনা, ২৩টি রম্নপা ও ৫৫টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে পদক তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করেছে বাংলাদেশ। আগে কখনও বাংলাদেশ দণি এশীয় ক্রীড়ায় এমন সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। এর আগে দণি এশীয় গেমসে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ছিল ১৯৯৩ সালে। সেবার তারা পেয়েছিল ১১টি স্বর্ণপদক। কাকতালীয়ভাবে সেবারও বাংলাদেশ ছিল প্রতিযোগিতার আয়োজনকারী স্বাগতিক দেশ। এরপর মাদ্রাজ আসর থেকে সর্বশেষ কলম্বো পর্যনত্ম বাংলাদেশের পদক সংখ্যা ক্রমেই কমেছে, বিশেষ করে স্বর্ণপদক। সেসব হতাশা ও গস্নানি থেকে এবার যেন সহসাই মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। হয়ত নির্বাচনে বিজয়ের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার জনগণের মধ্যে যে নতুন উজ্জীবনের আলো ছড়িয়েছে, সে জাগরণই যেন বাঙালী ক্রীড়াবিদদের উদ্বুদ্ধ করেছে সাফল্য ছিনিয়ে আনতে। আসলে ব্যক্তিজীবনে কিংবা জাতীয় জীবনে যে কোন সাফল্যের জন্য উজ্জীবিত মনোবল একটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। অলিম্পিকের ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে জার্মানি, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাফল্যকে বিশেস্নষণ করলে দেখা যাবে, জাতীয় উজ্জীবন ও উন্নয়ন এসব দেশে অন্য সব েেত্রর মতো ক্রীড়ােেত্র সাফল্যকেও প্রভাবিত করেছে। এবার ক্রিকেট ও ফুটবলে বাংলাদেশ সোনা পেয়েছে। সব মিলে একটি জাতির বিজয়কে আমরা প্রত্য করেছি বহুকাল পরে। দলমত নির্বিশেষে সকল বাঙালী ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের ক্রীড়াবিদদের সাফল্যে আনন্দিত হয়েছে। আমরা অতীতে ল্য করেছি, জাতীয় বিপর্যয় কিংবা বিজয় সবসময় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ যেবার পাকিসত্মানকে হারিয়েছিল, সেবার সমগ্র জাতি দল মত নির্বিশেষে আনন্দে অবগাহন করেছে।
এবারের দণি এশীয় গেমসে আরেকটি বিষয় উলেস্নখযোগ্য। এই প্রথম বাংলাদেশের পদক সংখ্যা পাকিসত্মানের চেয়ে বেশি; কেবল স্বর্ণপদক পাকিসত্মান বাংলাদেশের চেয়ে একটি বেশি পেয়েছে। কিন্তু মোট পদক বাংলাদেশ পেয়েছে ৯৬টি, অপরদিকে পাকিসত্মান পেয়েছে ৮০টি। বিষয়টি অতিশয় তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব যে একটি জাতির বিকাশে কতখানি সহায়তা করতে পারে, এ সাফল্যের ঘটনাটি তারই প্রমাণ। পাকিসত্মানী ঔপনিবেশিক আমলে অন্য সব বিষয়ের মতো বাঙালীদের খেলাধুলার েেত্রও কোণঠাসা করে রাখা হতো। পাকিসত্মানের জাতীয় ক্রিকেট দলে বাঙালীদের নেয়া হতো না। হঠাৎ কখনও 'দয়া দেখিয়ে' দু'একজনকে নেয়া হতো, তারপর তাকে একটি টেস্ট খেলার পর অপমানজনকভাবে বসিয়ে রাখা হতো। যেন বাঙালীর প েক্রিকেট খেলা সম্ভব নয়। এছাড়া খেলাধুলার সব বিভাগেই বাঙালীদের অবহেলা করা হতো। অলিম্পিক বা এশিয়ান গেমসে পাঠানো পাকিসত্মানী খেলোয়াড়দের দলে কখনও বাঙালী কোন খেলোয়াড় স্থান পেত না। এভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলার কারণে পাকিসত্মানী ঔপনিবেশিক আমলে অন্য সব েেত্রর মতো ক্রীড়া েেত্র আমাদের নৈপুণ্য প্রদর্শন সম্ভব হয়নি। পাকিসত্মান সরকারের দুঃশাসন ও দমন নীতি ছিল এর প্রধান কারণ। তবু সব প্রতিকূলতাকে জয় করে কখনও কখনও দু'একজন বাঙালী ক্রীড়াবিদ আনত্মর্জাতিক েেত্র সাফল্যের স্বার রাখতে সম হয়েছিলেন। সমগ্র বাঙালী জাতিই তাদের সাফল্যে গর্বিত হয়েছিল। বিখ্যাত সাঁতারম্ন চ্যানেল বিজয়ী ব্রজেন দাশের কথা এেেত্র সবার আগে মনে পড়ে। তিনি ষাট দশকের প্রথমার্ধে সবচেয়ে কম সময়ে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছিলেন। তাঁর এ রেকর্ড বেশ কয়েকবছর বজায় ছিল। তাঁর এই একটি সাফল্য ষাট দশকে বাঙালী জাতির জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে অনেকখানি প্রেরণা যুগিয়েছিল।
এতকাল পরে দণি এশীয় গেমসে বাঙালী ক্রীড়াবিদদের সাফল্য আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে পাকিসত্মানী ঔপনিবেশিক আমলের সেইসব অবহেলা ও গস্নানির কথা। আর মাত্র একটি স্বর্ণপদক পেলে এবারের এসএ গেমসে বাংলাদেশের স্থান থাকত ভারতের পরেই দ্বিতীয় স্থানে। এবারের প্রতিযোগিতায় বাঙালী মেয়েদের সাফল্য সবারই নজর কেড়েছে। বিশেষ করে শূটিং, কারাতে, তায়কান্দো ও উশু প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মেয়েদের সাফল্য এখানকার নির্যাতিত, অবহেলিত ও অবরম্নদ্ধ অনেক নারীকেই বেরিয়ে আসতে প্রেরণা জোগাবে। কারাতে প্রতিযোগিতায় মরিয়ম খাতুন ও জউপ্রম্ন সোনা জিতেছেন। জউপ্রম্ন বান্দরবানের একটি প্রত্যনত্ম এলাকার পাহাড়ী মেয়ে। কারাতে প্রতিযোগিতায় তার সাফল্য বৃহত্তর বাঙালী জাতির সমন্বয়ে প্রেরণা জোগাবে। বহুকাল ধরে ভারত বর্ষের পূর্বাঞ্চলে বিশাল বঙ্গভূমির সমতল ও পাহাড়ী এলাকায় অসংখ্য ুদ্র উপজাতীয় গ্রম্নপের সংমিশ্রণ ও সমন্বয়ে বাঙালী জাতি গড়ে উঠেছে। সেই হিসেবে জউপ্রম্নু বাঙালী জাতিসত্তার একটি অপরিহার্য অংশ এবং আদি বাঙালী। ১৯৭১ সালে ধর্মমত ও গোত্র নির্বিশেষে বাঙালী জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ এ অঞ্চলের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্রের বিরম্নদ্ধে বঙ্গবন্ধুর প্রধান অস্ত্রই ছিল এই কল্যাণকামী বাঙালী জাতীয়তাবাদ। স্বাধীনতার পর পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী কয়েকটি দেশ ও তাদের এদেশীয় অনুচর কিছু এনজিও এবং তথাকথিত সুশীল সমাজ অতিশয় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের মধ্যে ভাঙ্গন ধরানোর চেষ্টায় নিয়োজিত। বিদেশীদের কাছ থেকে 'তহবিল' নিয়ে এরা 'ুদ্র জাতিসত্তা' তত্ত্ব প্রচার করছে। এরাই বাঙালীর কল্যাণকামী জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করতে চায়। এবারের এসএ গেমসে কারাতে প্রতিযোগিতায় জউপ্রম্নর বিজয় আমাদের উৎসাহিত করেছে বাঙালীর বৃহত্তর ঐক্য জোরদার করতে। এবার শূটিংয়ে সোনা পেয়েছেন শারমিন আক্তার রত্না, সাদিয়া সুলতানা ও তৃপ্তি দত্ত। তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছেন শারমিন ফারজানা রম্নমি ও শাম্মী আকতার। অপরদিকে উশু প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন ইতি ইসলাম। এসব স্বর্ণ জয়ী মেয়ের বেশিরভাগ এসেছে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ পরিবার থেকে। সুতরাং আমাদের গ্রামীণ নারীদের মধ্যে যে অসংখ্য সম্ভাবনাময় নারী আছে এ সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। এদের জন্য দরকার যথাযথ প্রশিণ ও পৃষ্ঠপোষকতা। দেশের সব সম্ভাবনাময় পুুরম্নষ ও নারী ক্রীড়াবিদের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকার ও বেসরকারী সংস্থাসমূহকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের ক্রীড়াবিদদের অনেকেই দরিদ্র। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দুবেলা দুমুঠো অন্ন কারও কারও জোটে না। সুতরাং দেশের প্রতিভাবান সব ক্রীড়াবিদের জন্য স্থায়ী জীবিকার ব্যবস্থা করতে সরকার ও অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাসমূহকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের বেসরকারী ব্যাংক ও বাণিজ্যিক গ্রম্নপসমূহ কি পারে না ক্রীড়াবিদদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে? তাদের জন্য জীবিকা, চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাবারের যোগান দিতে? দেশের প্রতিটি জেলাতেই জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়দের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য বিশেষ তহবিল দরকার। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন যাতে স্থানীয়ভাবে খেলাধুলার উন্নয়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে সেই ল্যে সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। একজন ক্রীড়াবিদ জাতিকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপনের েেত্র যে উজ্জ্বল ভূমিকা রাখেন, তা অনেক সময় রাজনীতিবিদের প েসম্ভব হয় না। দেশের মতাসীন ও বিরোধীদলীয় সব রাজনীতিকেরই এই বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে অনুধাবন করা উচিত। দেশে খেলাধুলা সংগঠনের দায়িত্ব প্রবীণ ক্রীড়াবিদদের হাতে দেয়া দরকার। কারণ একজন ক্রীড়াবিদ যেভাবে অন্য ক্রীড়াবিদদের সুখ-দুঃখ বা স্বার্থ দেখতে সম, তা অন্য কোন পেশার মানুষের প েসম্ভব নয়। এক সময়ের খ্যাতিমান খেলোয়াড় কাজী সালাউদ্দিন বর্তমানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের পর বাংলাদেশের ঝিমিয়ে পড়া ফুটবলে যেন প্রাণসঞ্চার হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ফুটবল দল বেশ কয়েকটি দেশের জাতীয় দলকে পরাজিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, বিদেশী কোচের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ফুটবল দলকে এশিয়ার অন্যতম সেরা ফুটবল দল হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব। কেউ কেউ বলেন বাঙালীর শারীরিক যোগ্যতা ভাল ফুটবলা হওয়ার জন্য অনুকূল নয়। সেেেত্র আমার বক্তব্য হলো_ ক্রিকেটে যদি বাঙালী সফল হতে পারে, তবে ফুটবলে হতে পারবে না কেন ? দেশের জাতীয় উন্নয়নের সাথে সাথে জনগণের স্বাস্থ্যগত উন্নয়নের দিকে নজর রাখতে হবে। শিা ও জ্ঞানের পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্যগতভাবে আনত্মর্জাতিক মানসম্পন্ন হওয়া দরকার। একটি সর্বাঙ্গীণ সুস্থ বাঙালী জাতি গড়তে হলে স্কুল পর্যায়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাকে একটি নিয়মিত বিষয় হিসাবে অনত্মর্ভর্ুক্ত করতে হবে। এমন একটি ব্যবস্থা থাকা দরকার, যাতে প্রতিটি ছাত্র কোন একটি খেলায় পারদশর্ী হতে পারে। দেশের প্রতিটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বাধ্যতামূলক করা দরকার।
খেলাধুলাকে বড় শহরে আবদ্ধ না রেখে তাকে ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। স্থানীয় সরকারই পারে তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলাকে ছড়িয়ে দিতে। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে সমন্বিত কর্মসূচী নিতে হবে। বহুদিন পর বাংলাদেশে একটি দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক সরকার মতায় এসেছে। দেশের মাটিতে একাদশতম এসএ গেমসে বাঙালী খেলোয়াড়রা যে সাফল্যের স্বার রেখেছেন, তাতে সন্তুষ্ট থেকে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকার অবকাশ নেই। এছাড়া যেসব েেত্র বড় সাফল্য আশা করা গিয়েছিল, সেসব েেত্র বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা ভাল ফল অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন। আশা করা গিয়েছিল, নদীমাতৃক বাংলাদেশের সাঁতারম্নরা এবার দেশকে বেশ কয়েকটি স্বর্ণপদক এনে দেবেন। কিন্তু এেেত্র তারা একটিও স্বর্ণপদক জয়ে সম হননি। এটা খুবই অপ্রত্যাশিত ও হতাশাব্যাঞ্জক। এছাড়া এ্যাথলেটিক্সেও বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা সাফল্যের স্বার রাখতে পারেননি। বরং শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। কোন একটি বিশেষ মেয়াদের বদলে ক্রীড়াবিদদের সর্বণিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে দেশের সার্বিক ক্রীড়া ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে, সবসময় সতর্ক থাকতে হবে যেন এবারের সাফল্যকে আরও বেশি সাফল্যের দ্বারপ্রানত্মে নিয়ে যাওয়া যায়। অশিা, অস্বাস্থ্য ও মাদকাসক্তির বিরম্নদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার অন্যতম সেরা মাধ্যম হলো সংস্কৃতি ও ক্রীড়া। দেশের যুবসমাজ যদি সর্বণিকভাবে সংস্কৃতি চর্চা ও ক্রীড়ায় অংশ নেয়, তবে তারা আর কখনোই অপরাধ বা জঙ্গী তৎপরতায় অংশ নেবে না। প্রতিটি এলাকায় খেলার মাঠকে সংরণ করতে হবে। আমরা স্বপ্ন দেখি, একসময় অলিম্পিক গেমসে বাঙালীর বিজয় পতাকা উত্তোলিত হবে। তবে তার জন্য দরকার সার্বণিক প্রশিণ। সরকারের সদিচ্ছা ও পরিকল্পনা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়।
No comments