স্বপ্নবাজ এক আদিত্য নারায়ণ
জনপ্রিয় গায়ক উদিত নারায়ণের পুত্র আদিত্য নারায়ণ। একেই বোধহয় বলে 'বাপ কা বেটা!' গানের বাইরেও একাধিকম ক্ষেত্রে নিজের প্রতিভার স্বার রেখে চলেছেন তুমুল আত্মবিশ্বাসী এই তরম্নণ।
হিট গানের মধ্য দিয়েই সিনেমাজগতে তার অভিষেক। মাসুম ছবির 'ছোটা বাচ্চা সমঝকে', রঙিলা ছবির 'ইয়াই রে', আকেলে হাম আকেলে তুম এর টাইটেল সংগীতসহ আরও অনেক গানের কথাই বলা যায় এখানে। এছাড়াও সবারই নিশ্চয় মনে আছে 'পরদেশ' এবং 'জব পেয়ার কিসিসে হোতা হ্যায়' ছবিতে তার অসাধারণ অভিনয়।টেলিভিশনের সুপারহিট রিয়েলিটি শো 'সা রে গা মা পা'-এর জনপ্রিয় হোস্টও ছিলেন বেশ কিছুদিন।
সরল বাক্যে সহজ সত্য স্বীকার করে নিয়ে আদিত্য নারায়ণ বলেন, আমার রক্তেই আছে গান। কিন্তু তাই বলে শুধুমাত্র সিনেমার পেস্ন্লব্যাক গান করে জীবনটা পার করে দিতে চাই না আমি। করতে চাই আরও অনেক কিছু। ইউনিভার্সাল মিউজিক থেকে শীঘ্রই একটি এ্যালবাম বাজারে আসছে তার। শ্রোতাদের কাছে এ্যালবামটা ভাল লাগবে বলেই তার বিশ্বাস।
এ্যালবামটির জন্ম-ইতিহাস সম্পর্কে তিনি জানান, একেবারেই নিয়মছাড়া প্রক্রিয়ায় জন্ম হয়েছে এ্যালবামটির। আমার একদল মিউজিক্যাল বন্ধু আছে। তাদের একজনের আবার আছে একটা আসত্ম স্টুডিও। সেখানেই ঘন্টার পর ঘন্টা চলে আমাদের জ্যামিং সেশন। আর এভাবেই একসময় তৈরি হয়ে গেছে দুই শ'র ওপরে গান। ওইসব গান থেকেই বাছাই করে সাজানো হয়েছে এ এ্যালবামের গান।
ফিল্মের বাইরে ভারতের সঙ্গীতভুবন নিয়ে হতাশার অনুভূতিই ঝরে পড়ে আদিত্যের কথায়। ভারতের পপ মিউজিক, আদর করে যাকে একসময় ডাকা হত ইনডি পপ বলে, থেমে গেছে তার গতি। সিডির বাজারে গেলে দোকানের শেলফে যেসব এ্যালবাম দেখা যাবে, তার সবই এখন ফিল্মের। স্বাধীনভাবে যারা মিউজিক করছে, তাদের বাজার পড়ে গেছে ভয়ানকভাবে। এমনকি রেডিও কিংবা টেলিভিশনেও কাউকে এ ধারায় আর গান গাইতে দেখা যায় না।
এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে চান আদিত্য। তার ভাষ্য, 'আমি স্বীকার করি, সঙ্গীতের মান নিচে নেমে গেছে আগের তুলনায়- সোনু নিগমের 'দিওয়ানা' কিংবা হিমেশ রেশমিয়ার 'আপ কা সুরম্নর' এর পর বহু বছর আর তেমন করে কেউ উঠে আসেনি এখানে। এ ধরনের এ্যালবামের ওপর থেকে মনই উঠে গেছে মানুষের। কিন্তু আমি একবার চেষ্টা করতে চাই। আবার ফিরিয়ে আনতে চাই মানুষের হারানো বিশ্বাস।'
এ্যালবামের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি একটি গুরম্নত্বপূর্ণ কথা বলেন। গোটা এ্যালবামের সামগ্রিক উৎকর্ষের ওপর জোর দিয়ে আদিত্য বলেন, 'সাধারণত দেখা যায়, একটা এ্যালবামে ঘুরেফিরে একটা গানই চিত্ত জয় করতে সম হয় মানুষের। সবাই ভুলে যায় এ্যালবামের কথা। টিকে থাকে শুধু ওই একটা গানই। এ কারণে, শুধুমাত্র সেরা গানটি ডাউনলোড করে নেয়ার প্রবণতাই দেখা যায় মানুষের ভেতরে। আমি চাই না আমার েেত্রও এ রকম কিছু হোক। আমি চাই আমার সিডি লোকে এ কারণেই কিনবে যেহেতু এর সবই ভাল গান।'
স্বাভাবিকভাবেই নিজেকে তরম্নণ প্রজন্মের প্রতিনিধি মনে করেন আদিত্য। তিনি বলেন, আমি এমন মিউজিক করেছি যেগুলো ভাল লাগবে তাদের সবারই যারা আমারই মতো তরম্নণ। যদিও এ এ্যালবামে কিঞ্চিৎ বাণিজ্যিক টাচ দেয়া হয়েছে, কিন্তু ওইটুকু বাদ দিলে আমি চাই, একটু ভাল আর অন্যরকম কিছু করতে। আমার মনে হয়েছে একটা এ্যালবাম বের করার সময় এর সবচাইতে ভাল যে দিকটা আমরা দেখি, তা হচ্ছে, এ ধরনের একটা এ্যালবাম করা মূলত নিজেকেই প্রকাশ করা। এখানে তোমাকে খবরদারি করার জন্য কোন মিউজিক ডিরেক্টর নেই। কোন চলচ্চিত্র, কাহিনী কিংবা অভিনেতার জন্য ধরাবাঁধা নিয়মের মাঝে বন্দী থেকে গান বানাতে হবে না তোমাকে। এ শুধু নিজের জন্যই গান। এমনকি এর কথা কিংবা বিষয়ের মাঝেও আবেদন থাকতে হবে। যা আমাকে আলোড়িত করবে এই মুহূর্তে এবং আমি যখন পা দেব ত্রিশের কোঠায়, তখনও।
গানের বাইরেও একাধিক েেত্র নিজের প্রতিভার স্বার রেখে চলেছেন তুমুল আত্মবিশ্বাসী এই তরম্নণ। হিট গানের মধ্য দিয়েই সিনেমাজগতে তার অভিষেক। মাসুম ছবির 'ছোটা বাচ্চা সামাঝকে' রঙিলার 'ইয়াই রে' আকেলে হাম আকেলে তুম-এর টাইটেল সংসহ আরও অনেক গানের কথাই বলা যায় এখানে।
এছাড়াও সবার নিশ্চয়ই মনে আছে 'পরদেশ' এবং 'জব পেয়ার কিসিসে হোতা হ্যায়' ছবিতে তার অসাধারণ অভিনয়। টেলিভিশনের সুপারহিট রিয়েলিটি শো 'সা রে গা মা পা'-এর জনপ্রিয় হোস্ট ছিলেন বেশ কিছুদিন। এ কথা মনে করে তিনি বলেন, তিন মৌসুমে দেড়শ'র ওপর এপিসোডে কাজ করেছি আমি। কিন্তু এখন আর ওসব করতে চাই না। তাছাড়া ইদানীং টেলিভিশনে আকছারই হচ্ছে নানান পদের নানান ঢংয়ের অজস্র সব রিয়েলিটি শো।
বিক্রম ভাটের 'শাপিত' ছবির মাধ্যমে চিত্রজগতে নায়ক চরিত্রেও অভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন আদিত্য। পেস্ন্লব্যাক সিঙ্গার হিসেবে জীবনটা পার করে দিতে চাই না আমি, জানিয়েছেন তিনি।
সমসাময়িক ইংরেজী সঙ্গীতে 'গোল্ড' পাওয়া আদিত্য স্বপ্ন দেখেন, এভাবে চলতে চলতে একদিন তার হাতেই খুলবে ভারতের সঙ্গীতভুবনের অনাবিষ্কৃত এক নতুন দুয়ার।
No comments