এ্যাঞ্জেলি নাজোলি
সাধারণ মানুষ, ভক্তরা মিলে হলিউডের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই জুটির ভালবাসার স্বীকৃতি দিয়েছে 'ব্র্যাঞ্জেলিনা' বলে ডেকে! পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত এ জুটি অভিনয়ের বাইরে সাধারণ মানুষের নানা ধরনের দুর্যোগ এবং সঙ্কটে পরম মমতায় এগিয়ে এসেছেন।
ফলে ভক্তের ভালবাসার পালস্নার ভার ক্রমে বেড়েই চলেছে। বিসত্মারিত লিখেছেন লতিফুল হক। সম্পর্কের রসায়ণ : '০৫ সালে হলিউডেরই আরেক বিখ্যাত অভিনেত্রী জেনিফার এ্যানিস্টনের সঙ্গে পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবন ভেঙ্গে যাওয়ায় খুব বিষণ্ন ব্র্যাড পিট। ভাগ্যের কী লীলা খেলা! একই বছরে জোলিরও ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় দ্বিতীয় স্বামী অভিনেতা বিলি ববের সঙ্গে। দু'জনেই বেশ বিষণ্ন মনে শুরম্ন করেছিলেন 'মিস্টার এ্যান্ড মিসেস স্মিথ' ছবির শুটিং।কিন্তু কে জানত! এ ছবির মাধ্যমেই শুরম্ন হতে যাচ্ছে নতুন এক সম্পর্কের রসায়ন! ছবিটি যখন সারা বিশ্বের হলগুলোতে ব্যাপক সাফল্য নিয়ে চলছে, গণমাধ্যমের কর্মীরা এই নতুন জুটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ, সঙ্গতকারণেই হয়ত কাছাকাছি চলে এসেছিলেন 'ব্র্যাঞ্জেলিনা'।
নানা অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখে গুজবে গুজবে সয়লাব হয়ে যেতে থাকে ট্যাবলয়েডগুলোর পাতার পর পাতা। জোঁকের মতো পিছু নিতে থাকেন পাপারাজ্জির দল। নানান যন্ত্রণা পোহানোর ফাঁকে তাদের ভালবাসা যখন জমে উঠেছে, সেই '০৬ সালের শেষ দিকে জোলি ব্র্যাড পিটের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। তবে সবাই চমকে ওঠে যখন তিনি জানান, "আমার গর্ভে পিটের সনত্মান!" চমক হজম করতে সময় লাগলেও নিন্দুকের দল বলাবলি করতে শুরম্ন করে হলিউডের আর দশজন তারকার মতো তাদের সম্পর্কও কতদিন টেকে দেখি!
তিন বছর পেরিয়ে গেছে। আগের চেয়ে এই তারকা জুটির বাজার মূল্যও বেড়েছে অনেকগুণ। বলতে দ্বিধা নেই_নিন্দুকের মুখে ছাই দিয়ে বেশ ভালই আছেন তারা। বিয়ে না করলেও ভালবাসার যে সংসার তারা গড়েছেন; সেই ঘর আলো করে এসেছে তিন তিনটি সনত্মান। তবে কয়েকবার ঘোষণা দিলেও এখনও বিয়ে করাটা তাদের হয়ে ওঠেনি। হয়ত করবেন সামনের কোন দিনে। তারকারা আসলে সবই পারেন!
অনন্য এক সুন্দরীর গল্প : বাবা-মা দুজনেই অভিনয়ের রঙিন ভুবনের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। ফলে সিনেমার নেশাটা জন্মসূত্রেই যেন রক্তে বয়ে গেছে ১৯৭৫ সালের জুন মাসের ৪ তারিখে পৃথিবীতে আসা এ্যাঞ্জেলিনা জোলির। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ফ্যাশন মডেল হিসেবে তিনি ক্যারিয়ার শুরম্ন করেন। অভিনয়বিদ্যা রপ্ত করার জন্য পড়েছেন 'ইউএস স্কুল অব সিনেম্যাটিক আর্টস'-এ। '৮২ সালে 'লুকিংস টু গেট আউট' ছবির মাধ্যমে রূপালী পর্দায় তার অভিষেক হলেও সেটা খুব স্মরণীয় ছিল না। এর ফলাফল হলো, জোলির মতো অনিন্দ্যসুন্দরীকেও পরের ছবির জন্য অপো করতে হয়েছিল ১০ বছর! '৯৩ সালে 'সাইবর্গ' এবং '৯৫ 'সালে হ্যাকারস' মুক্তি পেলেও তেমনভাবে তিনি আলোচনার টেবিলে আসতে পারেননি। তবে জোলি যে সত্যিকার অর্থেই ভাল অভিনয় করেন_ সেটা প্রমাণিত হলো 'জিয়া' ছবির মাধ্যমে।
'৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া 'জিয়া' ছবিতে পতিতা চরিত্রে জোলির অসাধারণ অভিনয় সবাইকে অভিভূত করে। আমেরিকার সিনেমা পত্রিকাগুলোতে তাকে নিয়ে প্রশংসা শুরম্ন হয়, বিখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলো প্রচ্ছদে আমন্ত্রণ জানাতে থাকে। সেই তুমুল শুরম্নটা '৯৯ সালে 'গার্ল ইন্টাররাপ্টেড' ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে সেরা পাশর্্ব অভিনেত্রীর অস্কার পাওয়ার ফলে একেবারেই পোক্ত হয়ে ওঠে। হলিউডের একেবারে সামনের সারির নায়িকা হিসেবে গণ্য হতে থাকেন এ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
নিকোলাজ কেজ এর সঙ্গে '০০ সালে বেরম্ননো 'গন ইন সিক্সটি সেকেন্ডস' এবং এ্যান্টেনিও ব্যান্ডেরাসের সঙ্গে 'অরিজিনাল সিন'-এর মতো তুমুল জনপ্রিয় সিনেমা দিয়ে আরও একবার নিজের জাত চেনান জোলি। ফলে শূন্য দশক এ্যাঞ্জেলিনা জোলির জীবনে মাইল ফলকের বছর হয়ে রয়েছে। সেটা স্বীকার করে এক সাাৎকারে জোলি বলেছেনও "আসলে '০০ সালের পরেই আমার নতুন জন্ম। 'গার্ল ইন্টাররাপ্টেড' আর 'অরিজিনাল সিন' আমাকে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।"
আত্মবিশ্বাস তাকে করে তোলে দুর্দানত্ম সাহসী। পরের বছরই তিনি তুমুল এ্যাকশননির্ভর সিরিজ 'লারা ক্রফটঃ টম্ব্ব রাইডার'-এর প্রথম ও এর পরের বছর বেরম্ননো সিরিজের আরও একটি ছবিতে অনবদ্য অভিনয়শৈলী দেখান। 'মিস্টার এ্যান্ড মিসেস স্মিথ'-এ পুরোপুরি কমেডিনির্ভর চরিত্রে অভিনয় করে প্রমাণ করেন আসলেই তিনি আর দশজনের চাইতে আলাদা!
য় এম বিথুন
No comments