অতঃপর দু'জনে
বহুদিনের পরিচয় তাদের। একজন পায়ে নূপুর পরে নাচেন আর অন্যজন অভিনয় করেন নানা চরিত্রে। নাচের নীরব প্রকাশ ভঙ্গিমায় তিনি খুঁজে বেড়ান কিছু গোপন কথা।
তাই গোপনে গোপনে দুজনের মনে আন্দোলিত হতে থাকে ভালবাসা। নিজেদের মাঝে বোনা হয় ভালবাসার জাল। একদিন আপন মনেই বেড়িয়ে যায় সে ভালবাসার কথা। রাত নিঝুম। চারদিকের নিসত্মব্ধতা ভেঙ্গে মেয়েটির কাছে একটি ফোন আসে। মেয়েটি বলে হ্যালো। ছেলেটি বলে, তোমাকে একটি কথা বলব। মেয়েটির উত্তর কি কথা? যে কথাটি বলব সে কথাটির জবাব যদি না হয় তবে কথাটি যে আমি বলেছি এ কথা চিরদিনের জন্য ভুলে যাবে তুমি। আচ্ছা এবার বলুন কথাটি কি? ফোনে ওপার থেকে জানতে চাওয়া হয় তুমি তো নাচ দিয়ে আমার মন জয় করেছ, তা কি তুমি জান? মেয়েটি কোন কথা বলে না। নিশ্চুপ মেয়েটি যেন কোনও কথা খুঁজেও পায় না। এরপর আবার পাল্টা প্রশ্ন_ আচ্ছা আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তবে তার আগে কিছুদিন প্রেম করতে চাই। তোমার কি মত?মেয়েটি তখন বলেন, আমিও আপনাকে বিয়ে করতে চাই। তবে তা আমার পরিবারের সবার সম্মতিতে। এরপরের দিন ভোর হতেই মিষ্টি নিয়ে মেয়ের মার কাছে হাজির হন ছেলেটি। মাকে প্রসত্মাব দিলে তিনি কোন সম্মতি না দিলেও ছেলেটি ও মেয়েটির মধ্যে শুরম্ন হয় প্রেমের শাম্পান বাওয়া। এভাবে গড়িয়ে যায় মাস, আর মাস পেরিয়ে বেশ কটি বছর।
২০০৮ সালে তাদের প্রেমের সাম্পান এসে ভেড়ে বিয়ের মঞ্চে। মালাবদল করে বিয়ে করেন দুজন। আর সেই থেকে একই ছাদের নিচে, একই বিছানায় তারা বসবাস করছেন। ভালবাসা আর খুনসুটির মধ্যে দিয়ে কাটছে তাদের দিনগুলো। তারা হলেন নাচের মেয়ে নাদিয়া এবং তুখোড় অভিনেতা শিমুল। এ দম্পত্তির মধ্যে বোঝাপড়াটাও বেশ চমৎকার।
একজন অন্যজনের কাজকে দারম্নণভাবে শ্রদ্ধা করেন। শিমুল বলেন, আমি নাদিয়ার শিল্পীত মনোভাব এবং তার কাজকে খুবই শ্রদ্ধা করি। ও যখন কাজের জন্য দূরে যায় তখন বেশ মিস করি। আবার দেখা যায় যখন কাজ শেষে আমার কাছে চলে আসে তখন শুরম্ন হয় খুনশুটি।
দুজনের সংসারে টুকিটাকি বিষয় নিয়েও প্রায়ই খুনসুটি চলে নাদিয়া ও শিমুলের মধ্যে। এর জন্য শিমুল মূলত দায়ী করেন নাদিয়াকেই। নাদিয়া সংসারের নিজের লোকদের চেয়ে বেশি তার কলিগদেরই সময় দেন। শিমুল বলেন দেখা গেল বাসায় মেহমান এসেছে তখন নাদিয়া নেই। কেমন হয় বিষয়টা তখন? আর এই নিয়ে কথা বললে ও রাগ করে। তখন এক কথা দু কথা থেকে ঝগড়ার পর্যায়েও যায়। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে নাদিয়া বলেন, আমি সবসময়ই বলি যেহেতু আমার কাজের ৰেত্রে কলিগরা সবসময়ই পাশে থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময়ই আমরা কলিগদের নিয়েই থাকি। তাই তাদের সঙ্গে কোনও পার্টি থাকলে বা কোনও দাওয়াত থাকলে তা না করি কিভাবে? আর এ ব্যাপারটাতো শিমুলকে বুঝতে হবে। দূরে কোথাও ঘুরতে বা বেড়াতে যাওয়ার ৰেত্রে দু'জনেরই পছন্দ সমুদ্র ও পাহাড়। তবে শিমুল বলেন নাদিয়া বেশিরভাগ সময়ই চায় বিদেশে বেড়াতে যেতে। বেড়ানোর ৰেত্রে আমি চাই নিজের দেশটাকে ভালোভাবে দেখতে। নিজের দেশের সবকিছু চিনতে। এ নিয়ে নাদিয়া বলেন দেখা যায় নাটকের কাজে দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই কোনও না কোনও সময় যাওয়া হয়। আর এই যাওয়ার মাধ্যমে সে যায়গা সম্পর্কেও ধারনা পাওয়া যায়। এদিক থেকে বলতে গেলে আমি বলব যেহেতু সুযোগ রয়েছে তাই কেন পৃথিবীর অন্যদেশগুলো দেখতে যাব না?
No comments