ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক
ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার শেখ হাসিনা মৌর্য শেরাটন হোটেলের 'কমল মহল' মিলনায়তনে ভারতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফআইসিসিসি, সিআইই এবং এ্যামচেম প্রতিনিধিদের সঙ্গে শেখ হাসিনা সভায় মিলিত হন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ সভায় তিনি বলেন, 'জনগণের জীবনমান উন্নয়নের স্বার্থে বাণিজ্য সম্প্রসারণ জরম্নরী। এৰেত্রে সম্ভাব্য সব বাধা দূর করতে হবে। ভারতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ সভায় ভারতের ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনার বক্তব্যে খুবই উৎসাহবোধ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ভারতকে আরও উদারতার পরিচয় দিতে হবে, যা দু'দেশের সম্পর্কের ভিত আরও গভীর করবে এবং বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, এখনই সময় দু'দেশের সকল ৰেত্রে বিরাজমান বাধা-বিপত্তি দূর করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। ৪৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে ভারতের বাজারে ভারতীয় পণ্যের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে তুমুল করতালি দিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। এ সময় শেখ হাসিনা ভাষণের ভাষা পরিবর্তন করে বাংলায় বলেন, 'বিজনেস কমিউনিটি আপনারা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে আপনারাই যৌথভাবে উভয় দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে পারেন।' তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, 'আমি আশা করছি আপনারা একসঙ্গে কাজ করবেন। এতে উভয় দেশের মানুষে মানুষে যোগাযোগ আরও সহজ ও দৃঢ় হবে। বর্তমান সময়ের ট্র্যাক থ্রি ডিপেস্নামেসিতে সেটিই সকলের কাঙ্ৰিত।' শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন।ভারতের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা বিবাদ চাই না। আমরা চাই সব সময় মানুষের উন্নয়ন। আপনারা যদি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চান, তবে আমরা আনত্মরিকভাবেই সহায়তা দেব। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ভাল পরিবেশ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দু'দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি করতে পেরেছি।' বাণিজ্য সম্প্রসারণ হলে দু'দেশের যোগাযোগ বাড়বে এবং এতে উভয় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। বাণিজ্য সম্প্রসারণ দৰিণ এশিয়ার সব দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্যই প্রয়োজন বলে মনত্মব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এ লৰ্যে বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানো, ব্যবসায়ী ও সংশিস্নষ্টদের চলাচল সহজ, দু'দেশের বাণিজ্য সম্পর্কিত অপ্রত্যাশিত বাধাগুলো দূর করার ওপর জোর দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ উদ্দেশে দু'দেশের সীমানত্ম অঞ্চলের মানুষের সুবিধার জন্য বাংলাদেশের সীমানত্ম অঞ্চলের হাটগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধানত্ম নিয়েছে। ভারতের অনুরোধে তেগামুখ-দেমাগিরি সীমানত্ম ও সাবরম্নম-রামগড় সীমানত্ম খুলে দেয়ার সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের বিষয়ে এবং ভারতের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগের প্রসত্মাবও দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মাসহ সে দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধির মধ্যে এফআইসিসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট শেখর দত্ত, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ভারতীয় এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজেন ভারতী মিত্তাল ও এ্যামচেমের কো-চেয়ারম্যান হরিন্দর সিক্কা উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশের ৪০ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল সভায় অংশ নেয়।
No comments