শেয়ারবাজারে ফের বড় দরপতন, ডিএসইতে চার দিনে সূচক হ্রাস ৯২৬ পয়েন্ট
বড় ধরনের দরপতন দিয়ে শুরু হলো এ সপ্তাহের শেয়ারবাজার। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রবিবার সূচক কমেছে ৩৩৭.৫৯ পয়েন্ট। সব মিলে গত চার লেনদেন দিবসে ডিএসইতে সূচক কমেছে ৯২৬.২৭ পয়েন্ট। বাজারের এ পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হতাশা ও আতঙ্ক আরো তীব্র হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বাজার পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া কোনো উদ্যোগই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকারের ওপর মহলের নির্দেশ নির্বাহী বিভাগ মানছে না বলেও তারা অভিযোগ করে। বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ জেনারেল ইনভেস্টরস ফোরামের সদস্যরা শুক্রবার এক আলোচনা সভা থেকে এ অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের ভিত্তির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) পক্ষ থেকে দেওয়া একটি নির্দেশনায়। গতকাল দরপতনকালে সরকারের তরফ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) আবারও শেয়ার কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসইসির পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনা ডিএসইর ওয়েবসাইটে গতকাল পুনরায় প্রদর্শন করা হয়। এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে শেয়ার কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই দিন আইসিবিকেও শেয়ার কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই দিনই ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে শেয়ারবাজার। পরের লেনদেন দিবস গত সপ্তাহের শুরুর দিন রবিবার ২০ ফেব্রুয়ারি বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় দরপতন। গতকাল ওই ধারাবাহিকতায় বড় দরপতন ঘটে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় চারটি ব্যাংক ও আইসিবি সরকারের এ নির্দেশ বাস্তবায়নে গড়িমসি করায় সরকারের এই নির্দেশনা আবারও ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করতে আদেশ দেয় এসইসি। জানা গেছে, শেয়ার কেনার জন্য দেওয়া এ নির্দেশ চারটি ব্যাংকগুলো ও আইসিবি কতটা বাস্তবায়ন করেছে তা যাচাই-বাছাই শুরু করেছে এসইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় আইসিবির পক্ষ থেকে কয়েকদিনের লেনদেনের হিসেব গতকাল এসইসিতে পাঠানো হয়েছে।
আইসিবির একটি সূত্রে জানা যায় গতকাল এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ৫০ কোটি টাকার শেয়ার কেনা হয়। এরপরও দরপতন ঠেকানো যায়নি। লেনদেন হওয়া ২৫৫টি কম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ২৪৯টির, বেড়েছে মাত্র ছয়টির।
২৫৫টি প্রতিষ্ঠানের পাঁচ কোটি ৪৯ লাখ ১১ হাজার ৯৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে গতকাল। মোট লেনদেনের পরিমাণ ৫০১ কোটি ২৭ লাখ ১১ হাজার ৪২২ টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ৫৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কম।
আগের দিনের তুলনায় কমেছে বাজার মূলধনও। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল দুই লাখ ৫১ হাজার ২৮৭ কোটি ৯ লাখ ৩৪ হাজার ৫২৪ টাকা আগের দিনের চেয়ে সাধারণ মূল্য সূচক ৩৩৭.৫৯ কমে ৫৪৬৩.৩৫ পয়েন্টে স্থির হয়।
প্রায় একই চিত্র চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জেও (সিএসই)। সিলেক্টিভ ক্যাটাগরির সূচক ৬০৪.৭৮ পয়েন্ট কমে ৯৯৫৩.৫৬-তে দাঁড়ায়। লেনদেন হওয়া ১৭৭টি কম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৭৪টির।
No comments