স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত গৃহবধূ- মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ পুলিশের
এক মাস ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন স্বামীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত নরসিংদীর গৃহবধূ খাদিজা আক্তার (২২)। তাঁর শরীরে বড় ধরনের অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
খাদিজার যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশের ভূমিকা। খাদিজার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। শেষ পর্যন্ত তারা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। খাদিজা আক্তার চিকিৎসাধীন রয়েছেন বক্ষব্যাধি হাসপাতালে। তাঁর বাবা আবদুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, যৌতুক না দেওয়ায় স্বামী মো. সোহেল খাদিজাকে ছুরিকাঘাত করেছেন। মামলা না হওয়ায় তিনি বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সোহেল ও তাঁর স্বজনেরা বিভিন্নভাবে তাঁদের হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন।পারিবারিক সূত্র জানায়, তিন বছর আগে নরসিংদীর শিবপুর থানার শ্রীফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সোহেলের সঙ্গে মুন্সেফেরচর গ্রামের বাসিন্দা খাদিজার বিয়ে হয়। পরিবারের অভিযোগ, প্রায় আড়াই বছর ধরে এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে খাদিজার ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাচ্ছেন সোহেল। তিনি গত ৬ ডিসেম্বর স্ত্রীকে ছুরি মেরে গুরুতর আহত করেন।
আবদুল হক বলেন, মামলার ব্যাপারে পারিবারিক সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা দেরি হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর পুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন গাজীকে নিয়ে তিনি শিবপুর থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু থানার পুলিশ মামলা না নিয়ে তাঁকে আদালতে মামলা করতে বলে। আদালতে গেলে এক আইনজীবী তাঁকে বলেন, ডিসেম্বর মাস আদালত বন্ধ বলে মামলা হবে না।
যোগাযোগ করা হলে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম ফিরোজ বলেন, ‘আমি তো কিছু জানি না। তাঁদের পাঠাইয়া দেন। আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
গত সপ্তাহে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের ৫-৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ১১ নম্বর বেডে নিথর শুয়ে আছেন খাদিজা। পাশে মা হনুফা বেগম ও শাশুড়ি হাসিনা বেগম। শাশুড়ি এ সময় প্রতিবেদককে বলেন, তাঁর ছেলে সোহেল মাদকসেবী এবং তিনি তাঁর শাস্তি চান। তবে হাসিনা বেগম পরদিন সবার অগোচরে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, খাদিজার শরীরে বড় ধরনের অস্ত্রোপচার করতে হবে। তবে অস্ত্রোপচারের ধকল সহ্য করার মতো শারীরিক সক্ষমতা তাঁর এখন নেই।
No comments